কেদারনাথ মন্দির
অকাল মৃত্যুর ভয় বা কোষ্ঠীতে এমন মৃত্যুযোগ আছে দেখলে কেদারনাথ মন্দিরে পুজো দিতে ছুটে যান ভক্তের দল। কিন্তু মন্দিরটির সঙ্গে এমন একটি কাহিনি জুড়ে গেল কী করে! জানেন কি? শোনানো যাক তার কাহিনি।
কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের পর পাণ্ডবরা শিবের আশীর্বাদ প্রাপ্তির জন্য যাত্রা শুরু করেন। যাত্রা পথে বহুবা র বাধা আসার পর ষাঁড়ের বেশে শিব ভীমকে দর্শন দেন। এরপর ভীম ষাঁড় বেশধারী শিবকে ধরার জন্য তাঁর গদার সাহায্যে সেই ষাঁড়কে আঘাত করেন। আঘাতের সেই ষাঁড়ের দেহ বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়ে মাটির চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ধার্মিকদের বিশ্বাস, এই ষাঁড়ের পশ্চাৎ অংশ রূপেই কেদারনাথ মন্দিরে ভগবান শিব স্থাপিত আছেন।
মনে করা হয়, ভগবানের এই রূপদর্শনের ফলেই পান্ডবদের পাপ মুক্তি ঘটে। ভগবান শিব সেই সময় পাণ্ডবদের বলেছিলেন, তিনি ত্রিকোণ আকৃতি রূপেই ভক্তদের কাছে বিরাজমান থাকবেন। সেই কারণেই আজও কেদারনাথ মন্দিরে গর্ভগৃহে ত্রিকোণ আকৃতি রূপেই মহাদেব বিরাজিত আছেন।
শিব বেশধারী ষাঁড় ভীমের গদার আঘাতে মোট পাঁচটি খণ্ডে বিভক্ত হন। কেদারনাথ ছাড়াও বাকি শিবলিঙ্গ গুলি হল, তুঙ্গনাথ, রুন্দ্রনাথ, মদমহেশ্বর, কল্পেশ্বর। একত্রে যা কিনা পঞ্চকেদার নামেও পরিচিত। পাণ্ডবরা ভগবান শিবকে তুষ্ট করার জন্য প্রথম কেদারনাথ মন্দির নির্মাণ করেন।
শোনা যায়, ৮ম শতকে হিন্দু দার্শনিক আদি শঙ্করাচার্য তাঁর শিষ্যদের নিয়ে এই মন্দির দর্শনে এসেছিলেন। তবে আশ্চর্যের বিষয় হল, ২০১৩ সালে বিধ্বংসী বন্যায় কেদারনাথ শহরের প্রচুর ক্ষতি হলেও মন্দিরের কোনও রকম ক্ষতি হয়নি।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩৫৮৪ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত কেদারনাথ মন্দির। কেদারনাথ উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপ্রয়াগ জেলায় অবস্থিত। উত্তরের ছোটা চার ধাম যাত্রার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত কেদারনাথ, বদ্রীনাথ, গঙ্গোত্রী এবং যমুনেত্রী।
এই মন্দিরে পুজো দিলে অকাল মৃত্যুর হাত থেকে কেদারেশ্বর শিব যেমন রক্ষা করেন, তেমনই হাজারও পাপ থেকে ভক্তদের রক্ষা করেন কেদারনাথ।
মন্দির যেতে হলে- ট্রেনে করে হাওড়া থেকে হরিদ্বার যেতে লাগে। হরিদ্বার থেকে গাড়িতে রুদ্রপ্রয়াগ ৬ ঘন্টা। রুদ্রপ্রয়াগ থেকে গৌরীকুন্ড গাড়িতে ৪ ঘণ্টা। এর পর জঙ্গলচটি হয়ে লিঞ্চৌলি-কেদারনাথ বেস ক্যাম্প ভায়া পায়ে হেঁটে কিংবা ঘোড়া অথবা ডুলিতে যেতে হয় কেদারনাথ। দূরত্ব ২২ কিমি। কাছের বিমানবন্দর জলি গ্রান্ট, দেরাদুন।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব ' ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy