ছোট ছোট ফ্ল্যাট এখন। বাড়ির সব জিনিসপত্র রাখাই মুশকিল হয়ে যায়। বাড়িতে সব মিলিয়ে গোটা চার-পাঁচটা আলমারিতেও যেন কিছুই হয় না। ভর্তি হয়ে যায় সবটা। জায়গা চাই, জিনিসপত্র রাখার জায়গা।
ফ্ল্যাটে যে কোনও আসবাবপত্র বানিয়েই আমরা তার সঙ্গে স্টোরেজের ব্যবস্থা করি। বড় ছড়ানো-ছেটানো বাড়িতে সবসময় তার প্রয়োজন হয় না। গত শতাব্দীর আশি কিম্বা নব্বইয়ের দশকের আগে এমন ছিল না, কারণ তখন ফ্ল্যাট কালচার উঠে আসেনি বঙ্গজীবনে। বাড়িতেই কুলুঙ্গি বা দেরাজে ঢুকিয়ে দেওয়া যেত অনেক কিছু।
স্টোরেজের প্রয়োজন শুরু হল বাঙালি জীবনে ফ্ল্যাটের আমদানির পরেই। প্রয়োজন ও স্থানসঙ্কুলান অনুসারে জানালার তলায় বা উপরে বক্স তৈরি হল, বাথরুমের উপরে লফ্ট বানানো শুরু হল। বারান্দার সিলিং নীচু করেও লফ্ট বানানো শুরু হল। আসলে অল্প একটু জায়গা অতিরিক্ত পাওয়া মানেই স্টোরেজ বানিয়ে দেওয়ার কায়দা শিখতে শুরু করলাম আমরা। নীচের ফ্লোরে সুযোগ না পেলে উপরের ফ্লোর থেকে জানলায় বক্স বানিয়ে কিংবা দেওয়ালের একটা ফাঁককে একটু বাড়িয়ে দিয়ে বক্স করে নেওয়ার ভাবনা শুরু হয়ে ছিল সেই তখন থেকেই।
এ বার বলি স্টোরেজের বিভিন্ন সুযোগের কথা, যেখানে ইচ্ছে করলে স্টোরেজ বানিয়ে নেওয়া যায়। বক্সখাট বহু দিন ধরেই বাঙালি সংস্কৃতিতে ঢুকে গিয়েছে। আজ থেকে বছর ত্রিশ-চল্লিশ আগেও বক্সখাটের এত রমরমা ছিল না। তার পর শুরু হল সেগুন কাঠের সুন্দর খাট বানিয়ে নেওয়া এবং তার সঙ্গে অবশ্যই বক্সের ব্যবস্থা। ইয়াব্বড় সাইজের এক একটা খাট উচ্চতায় ছিল অনেকখানি। কিন্তু সমস্যা হল অন্যত্র। ছোট ছোট ফ্ল্যাট বাড়ির ঘরে সে সব সেগুন কাঠের বক্সখাটকে কিছুটা বেমানান লাগত। ঘরের প্রায় অর্ধেকটা জুড়ে থাকত সেই সেগুন কাঠের বক্সখাট।
আরও পড়ুন: রং, আসবাব ও মেঝের কেরামতিতে এ ভাবেই খুলবে ঘরের সাজ
দিন বদলাতে শুরু করল। বাঙালি অন্দরসজ্জা আধুনিক হতে আরম্ভ করল। কাঠের জায়গায় প্লাই এল। বক্সখাটগুলো খুব ছিমছাম হতে আরম্ভ করল। মাপে অবশ্য সেই এক-ই থাকল, কিন্তু উচ্চতায় অনেকটা কমে গেল। খাটের নীচে আগে উঁচু পায়া থাকায় অনেকটা উচ্চতা বেড়ে যেত, সেটা কমে গিয়ে প্রায় মাটিতে মিশে গেলো। খাট উচ্চতায় (গদি নিয়ে) মোটামুটি আঠারো বা কুড়ি ইঞ্চির মধ্যে, ভিতরে বক্স। প্রচুর জিনিসপত্র রাখার ব্যবস্থা। হাইড্রোলিক সিস্টেম লাগিয়ে দেওয়া হলে খুব সহজে খোলা কিম্বা বন্ধের ব্যবস্থাও শুরু হয়ে গেল।
অসবাবপত্রে জিনিসপত্র রাখার ধারণা শুধুমাত্র খাটে নয় আরও অনেক আসবাবেই শুরু হল। সোফা বক্স করে তাতে জিনিসপত্র রাখার ব্যবস্থা করা হল। যেখানেই সামান্যতম সুযোগ পাওয়া যায়, সেখানেই করা হল এমন ব্যবস্থা। এমনকি বাথরুমের বেসিনের নীচের জায়গাতেও ছোট একটা বক্স বানিয়ে সেখানে পুরনো জামাকাপড় রাখার ব্যবস্থা করা হল।
আরও পড়ুন: পুজোর আগেই সন্তানের ঘরকে সাজিয়ে তুলুন এ ভাবে
অনেকের বাড়িতেই পুরনো স্টিলের আলমারি থাকে। নতুন আধুনিক অন্দরসজ্জা হলে সে সব আলমারিকে ফেলে দেন অনেকেই কিন্তু ফেলে না দিয়ে পুরনো স্টিলের আলমারি যে ক’টা আছে, তাদের পাশাপাশি রেখে উপর থেকে প্লাইয়ের আবরণ দিয়ে ঘিরে দেওয়া যায়। এতে বাকি ঘরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভিতরে স্টিলের আলিমারি থাকলেও উপরে প্লাইয়ের পাল্লা দিয়ে ঘিরে দেওয়া যেতে পারে। এ ভাবেই স্টোরেজকে সঙ্গে নিয়েই সারুন ঘর সাজানোর কাজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy