সোফার উপরে রাখুন ভাল কোয়ালিটির ফোম। ছবি: পিক্সঅ্যাবে।
আনুমানিক দু’হাজার খ্রিস্ট পূর্বাব্দে খাটের ব্যবহার শুরু হয়েছিল। খাট তৈরির বিভিন্ন উপাদানের অনেক রকম পরিবর্তন ঘটিয়ে অবশেষে খাট তৈরি হতে শুরু করল কাঠ দিয়ে। যদিও সেটা কয়েকশো বছর পরে।
খাট তৈরির ইতিহাস বহু দিনের হলেও সোফার ইতিহাস খুব একটা বেশি দিনের নয়। কেউ কেউ বলেন, চিনের হান সাম্রাজ্যের সময় থেকেই সোফা বা ওই জাতীয় আরামে বসার জায়গার কথা ভাবা হয়েছে। প্রথম প্রথম ঘোড়ার পিঠে বসার জন্য গদি জাতীয় নরম কিছু একটা বানানোর কথা ভাবা হয়েছিল। সেখান থেকেই শুরু। তার পর থেকে আরামের বসার জায়গা বানানোর জন্য নানা চেষ্টা শুরু হয়। এমনকী, খাট বা পালঙ্কের বিছানা বা গদির বেশ আরামদায়ক হয়ে ওঠাও কিন্তু মোটামুটি এই সময় থেকেই।
সোফার ইতিহাস রাজকীয়, যেমন পালঙ্কের ইতিহাসও। একটা সময় সোফা শুধুমাত্র রাজা কিংবা জমিদারদের বাড়িতেই দেখা যেত। আসলে বাঙালিদের কাছে সোফার গ্রহণযোগ্যতা খুব একটা বাড়েনি। কারণ, মধ্যবিত্ত বাঙালি একটা সময় পর্যন্ত সোফার এই বিলাসিতাকে নিতে পারেননি। আস্তে আস্তে দিন পাল্টেছে অনেকটাই। বাঙালির ঘরে এখন চৌকির জায়গায় দামী খাট, বসার চেয়ার, টুলের জায়গায় আরামের সোফাসেট।
আরও পড়ুন: দেওয়ালের শোভা বাড়াতে ওয়ালপেপার ব্যবহারের নিয়ম জানেন?
নকশাদার সোফার সাজুক আপনার অন্দর। ছবি: পিক্সঅ্যাবে।
বসার ঘরে সোফা রাখার জন্য স্থান এবং মাপের হিসাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে দেওয়ালের সামনে সোফা রাখা হবে সেই দেওয়ালে যেন জানালা না থাকে। আর যদিও বা থাকে, সেটা সোফা রাখার জায়গাটা বাদ দিয়ে।
সোফার মাপ নিয়েও জেনে নেওয়া দরকার। দোকান থেকে সরাসরি না কিনে বাড়িতে কাঠ এবং গদির মিস্ত্রি দিয়ে বানিয়ে নেওয়া যায় সোফাসেট। বাড়িতে সোফা সাধারণত নিয়ে আসা হয় থ্রি সিটার প্লাস সিঙ্গল সিটারের দুটো, কিংবা এল টাইপ সোফা। সিঙ্গল সোফার মাপটা জেনে নেওয়া দরকার। সিঙ্গল সিটারের সোফাগুলোর মাপ হবে গভীরতায় প্রায় তিন ফুটের মতো এবং চওড়াতেও তাই। আর তিন জনের বসার সোফাগুলোর গভীরতা তিন ফুটের মত হলেও, চওড়ায় হবে প্রায় চার কিংবা সাড়ে চার ফুট।
কাঠের ফ্রেমে কিংবা প্লাইউডের বাক্সের গড়নে সোফা রাখতে পারেন। তার উপরে থাকবে ভাল কোয়ালিটির ফোম। এখন প্রচুর ম্যাগাজিনে কিংবা ইন্টারনেটেও সোফার অনেক নকশা পাওয়া যায়। সেগুলো দেখে পছন্দ করে মিস্ত্রিদের বুঝিয়ে দিলেই হল। কেউ কেউ আবার পুরনো দিনের স্টাইল পছন্দ করেন। সোফায় বাটালির খোদাই তাদের খুব পছন্দ। এ ক্ষেত্রে সেগুনের পরিবর্তে মেহেগনি কাঠ ব্যবহার করাই ভাল। মেহেগনি কাঠে খোদাইয়ের কাজটা বেশ ভাল হয়। তবে একটা কথা মাথায় রাখা দরকার, বাটালির খোদাই যদি সোফাসেটে করতে যান, খরচ কিন্তু অনেকটাই বেড়ে যাবে।
আরও পড়ুন: রান্নাঘরের সাজ বদলে বাড়িকে দিন নতুনত্বের স্বাদ
আসবাবপত্র ডার্ক শেড হলে সোফার কাপড়ের রং হালকা রাখুন। ছবি: পিক্সঅ্যাবে।
সোফা তো তৈরি হল, এ বার আসি সোফার উপরে কী লাগাবেন তার কথায়। ফ্যাব্রিক কিংবা রেক্সিন লাগাতে পারেন। নানা কোয়ালিটি, দাম আর নকশার কাপড় পাওয়া যায়। ঘরের ফার্নিচারের ফিনিশ কেমন হচ্ছে, সেটা দেখে কাপড় কিনবেন। খুব সাধারণ হিসাব হচ্ছে আসবাবপত্র ডার্ক শেড হলে সোফার কাপড়ের রং হালকা হবে, অথবা উল্টোটা।
সোফায় ভাল কোয়ালিটির লেদার লাগালে খুব ভাল লাগে দেখতে। অনেক দিন হল কলকাতাতে বাইরে থেকে লেদার আসছে, বিশেষ করে ইতালি থেকে। ইতালির লেদারের প্রতি বর্গফুটের দাম বেশি। সে ক্ষেত্রে এখানকার লেদার অনেকটা সস্তা পরে। একটা সিঙ্গল সিটার লেদার সোফায় ভাল ভাবে ফিনিশ করতে গেলে প্রায় পঞ্চাশ বর্গফুটের সামান্য বেশি লেদারের প্রয়োজন হয়।
সুতরাং সোফা কেনার আগে এ সব বুঝে তবেই ঘরে আনুন বিলাসিতার এই অধ্যায়কে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy