কথায় বলে, মাছে-ভাতে বাঙালি। দু'বেলাই পাতে মাছ না থাকলে মুখ ভার হয়ে যায় অনেকেরই।
মাছ হরেক রকমের। মিষ্টি জলের, সমুদ্রের, নদীর কিংবা পুকুরের। মাছ খাওয়ার একাধিক উপকারিতা আছে। আবার অপকারিতাও আছে কিছু। খোঁজখবর দিচ্ছে আনন্দবাজার অনলাইন।
মাছ খাওয়ার উপকারিতা
১. সামুদ্রিক মাছে রয়েছে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, যা হৃদরোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে এবং রেটিনার কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে সার্বিক ভাবে দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে। এ ছাড়া, ডিমেনশিয়া বা অ্যালঝাইমারের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও হ্রাস পায়। রোজ রোজ সামুদ্রিক মাছ খেলে শরীরে ডিএইচএ ফ্যাটি অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। যা স্মৃতিশক্তির উন্নতিতে সাহায্য করে।
২. সামুদ্রিক মাছে ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-ডি থাকে। যা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তাই হৃদরোগে আক্রান্ত ও মধুমেহ (ডায়াবেটিস) রোগীদের জন্য সামুদ্রিক মাছ উপকারী।
৩. বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক মাছের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ইলিশ, চিংড়ি, লইট্টা প্রভৃতি। এগুলোতে আছে প্রচুর মিনারেল, ভিটামিন, জিঙ্ক ও আয়োডিন। জিঙ্ক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আয়োডিন গলগণ্ড রোগ প্রতিরোধ করে।
৪. সামুদ্রিক মাছ খেলে নার্ভের রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমে। এতে হাত-পায়ের অসাড়তা, হঠাৎ ক্লান্তি এবং পেশির কর্মক্ষমতা কমে যাওয়ার মতো সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়।
৫. সামুদ্রিক মাছের আমিষ সহজে পরিপাকযোগ্য। এ ছাড়া দেহের ক্ষয় রোধে সাহায্য করে। এটি ভিটামিন বি-এর উৎকৃষ্ট উৎস।
৬. মাছে প্রচুর সিলেনিয়াম রয়েছে, যা দেহে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট হিসেবে কাজ করে। স্যামন, ম্যাকরেল মাছ থেকে ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-ডি পাওয়া যায়।
৭. লো ফ্যাট ডায়েট অনুসরণ করার পাশাপাশি প্রতিদিন যদি সামুদ্রিক মাছ খাওয়া যায়, তাহলে প্রস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।
৮. স্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপকারী হল, তৈলাক্ত মাছ। যেমন ভেটকি, ম্যাকারেল, ইলিশ, পাকা রুই, কাতলা, চিতল, ইত্যাদি মাছে থাকে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড, আয়োডিন, ভিটামিন ডি, প্রোটিন, ফসফরাস সহ নানা খনিজ। যা আমাদের মস্তিষ্ককে উজ্জীবিত করার পাশাপাশি সামগ্রিক ভাবে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
৯. টুনা মাছে পুষ্টির ভাগ খুব বেশি। ভিটামিন বি-৩ , বি- ১২, বি-৬ , বি-১, বি-২ এবং ভিটামিন ডি-এর মতো মাল্টি ভিটামিন থাকে টুনা মাছে।
১০. পাঙ্গাস মাছও উপকারী। এটি হৃদরোগ প্রতিরোধ করে। ভ্রুণ সুস্থ রাখে।
১১.বাংলায় অনেক এলাকায় শুঁটকি মাছ খাওয়ার প্রবণতা আছে। রূপচাঁদা, লইট্টা, ছুরি, ছোট চিংড়ি, গজার, পুঁটি, কাঁচকি, ইত্যাদি মাছ শুকিয়ে শুঁটকি তৈরি হয়। এতে তাজা মাছের তুলনায় প্রোটিন, খনিজ লবণ, ক্যালসিয়াম ও আয়রণের পরিমাণ অনেক বেশি। বিশেষত ছোট চিংড়ির শুঁটকি যেমন আয়রনে ভরপুর। রক্তাল্পতায় ভোগা রোগী ও অন্তঃসত্ত্বারা এটি খেলে উপকার পাবেন। যাঁরা দুধ খেতে পারেন না, তাঁরা প্রোটিনের বিকল্প উৎস হিসেবে মাঝে মাঝে শুঁটকি খেতে পারেন।
যে বিষয়গুলো মাথায় রাখা জরুরি
১. অনেক দেশে কাঁচা মাছ খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। তবে আমাদের দেশের আবহাওয়ায় কাঁচা মাছ খেলে ক্ষতির আশঙ্কাই বেশি। পেট ব্যথা হতে পারে, কিছু ক্ষেত্রে কাঁচা মাছে জীবাণু থাকতে পারে, যা মানুষের স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
২. প্রতিদিন মাছ খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ঠিক কতটা উপকারী? মাছে প্রোটিন থাকে। মাছ যদি নিয়মিত পরিমাণ বুঝে খাওয়া যায় তবে কোনও ক্ষতি হবে না। তবে ইলিশ, পাঙ্গাস বেশি খেলে পেট খারাপ হতে পারে।
৩. রোজ দু'বেলা মাছ খাওয়া খারাপ নয়। তবে ডিপ ফ্রাই করে মাছ রান্না করা চলবে না।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy