Advertisement
Durga Puja Food

মাগুর, শোল এ বার মা দুর্গার মালসা ভোগে!

নিগম জানাচ্ছে, পঞ্চমীর দিন থেকে শহরের ২৩টি বড় পুজো মণ্ডপ চত্বরে নিগমের স্টল থাকছে।

রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমের সৌজন্যেই দেবীর ভোগ এমন ।

রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমের সৌজন্যেই দেবীর ভোগ এমন ।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৮ ১৫:১৫
Share: Save:

এ বার পুজোয় মা দুর্গার পাতে থাকবে মাগুর-শোল! নিরামিষি খিচুড়ি-পোলাও-লুচির স্বাদ বদল। সৌজন্যে রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগম।

মোহন পোলাও, বেগুন ভাজা, শোল পোড়া, মাগুর মাছের টক ও পায়েস। মেনুতে থাকছে এ সবই। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘দেবীর ভোগ’। নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৌম্যজিৎ দাসের মতে, এমনটা যে হয় না তা একেবারেই নয়। বরং বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দির কিংবা চিল্কিগড়ের কনকদুর্গার মন্দিরে দুর্গাকে মাছের ভোগ দেওয়া হয়। এই দেবীর প্রসাদ মৎস্য উন্নয়ন নিগমের স্টল থেকে বিক্রি করা হবে। পুজোর ভোগের মতোই মালসা ও শালপাতায় মুড়ে।

কিন্তু এমন ভাবনা কেন এল মৎস্য নিগমের মাথায়? নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আদতে ঝাড়গ্রামের ছেলে। তাঁর মতে, গ্রামে মানুষ যা খান, তাকেই আরাধ্য দেবতাকেও তা-ই দেন। গ্রামের খাল-বিলে এমন মাছ প্রচুর পাওয়া যায়। তাই মাগুর-শোল এই সব মাছ সহজেই দেবীর ‘প্রসাদ’ হতে পেরেছে।

কিন্তু এখন তো মাগুরের অনেক দাম! সৌম্যজিৎবাবু জানালেন, ‘‘এখন মাগুর মাছের দাম প্রচুর। কিন্তু এক সময় মাগুর খাল-বিলে পাওয়া যেত। গরিব গ্রামের মানুষ দুর্গাকে বাড়ির মেয়ে বলে মনে করতেন। তাই সেই মাগুর মাছ দিয়েই তাঁরা দুর্গার ভোগ দিতেন। তাই থেকেই কনকদুর্গার মন্দিরে মাগুরের টকের চল।’’ আর ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা হওয়ায় আদিবাসী অধ্যুষিত চিল্কিগড়ের কনকদুর্গার মন্দিরে শোল পোড়ার ব্যবহারের কথা জানেন সৌম্যজিৎবাবু।

আরও পড়ুন: রেস্তরাঁয় খাব কিন্তু বাড়বে না মেদ, এমন কৌশল শুধু কাফে প্রাণার হেঁশেলে​

তবে শোল ও মাগুর ছাড়াও অন্যান্য সুস্বাদু মাছের পদ নিয়ে বিভিন্ন পুজোর মণ্ডপে এ বছরও হাজির থাকবে রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগম। এর আগেই পুজোর কথা মাথায় রেখে উত্তরবঙ্গের সুস্বাদু মাছ বোরোলির চারা এনে নলবনে নিগমের জলাশয়ে ছাড়া হয়। সেই বোরোলি মাছও এ বার যোগ হয়েছে নিগমের মেনুতে।

এ বারে ওই প্যাকেজটি তৈরি করেও নিগমও থিম পুজোর সঙ্গে নিজেদের জুড়ে নিয়েছে। নিগম চাইছে, এ বার মা দুর্গার আমিষ ভোগ চেখে দেখুন দর্শকেরা। আধিকারিকেরা জানান, দুর্গা পুজোর ভোগ নিরামিষ হবে এটাই রীতি। কিন্তু নিগমের কারবার মাছ নিয়ে। অষ্টমীতে সিংহভাগ মানুষই নিরামিষ খান। ওই দিনটিতেই ভোগ-প্রসাদ বিতরণের রীতি। ফলে অষ্টমীতে অনেকেই মাছ খান না। স্টলগুলিতেও চিতল, ভেটকি, কইয়ের মত সুস্বাদু মাছ পড়েই থাকে।

কিন্তু অষ্টমীতে তো বেশির ভাগ বাড়িতেই নিরামিষ? ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৌম্যজিতের কথায়, ‘‘ওই দু’টি মন্দিরের ইতিহাস বলছে মা দুর্গা আমিষ খান। হতে তো পারে, এমন তথ্য সামনে আসার পরে অষ্টমীর দিনেও কেউ মাগুরের টক কিংবা শোল পোড়ার খোঁজে নিগমের স্টলে উঁকি দেবেন।’’

আরও পড়ুন: এ সব নিরামিষ রান্না এত সুস্বাদু ও সহজ!​

উৎসবের দিনগুলিতে তাই ‘দেবীর ভোগ’-এর বিক্রি ভাল হবে বলে আশা করছে নিগম।

সোমবার মহালয়ার দিন থেকেই নিগমের রেস্তরাঁয় (নলবন, নবান্ন, ইকো পার্কে) ৩৯৯ টাকায় ছ’টি মাছের বুফে চালু হয়েছে। পঞ্চমীর দিন থেকে ঘরে বসেই অনলাইনে নিগমের হরেক রকমের পদের খাবারের পদ হাতে পাবেন শহরবাসীরা। নিগমের অ্যাপে (স্মার্ট ফিশ) ডাউনলোড করলে তিন রকম মাছের থালি সহজেই মিলবে। বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা থাকছে প্রবাসী, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে। নিগম সূত্রের খবর, যে কোনও পদ কিনলে তিনটি ক্ষেত্রেই দশ শতাংশ ছা়ড়ের ব্যবস্থা থাকছে।

নিগম জানাচ্ছে, পঞ্চমীর দিন থেকে শহরের ২৩টি বড় পুজো মণ্ডপ চত্বরে নিগমের স্টল থাকছে।

ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৌম্যজিৎবাবু বলেন, ‘‘সামুদ্রিক মাছ পমপ্যানো, গ্রুপারের চাষ হচ্ছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায়। পমফ্রেটের বিকল্প পমপ্যানোর স্বাদ নিতে পারবেন মণ্ডপে আসা দর্শনার্থীরা।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE