Advertisement
Durga Puja Food

হরি ঘোষ স্ট্রিটের দত্তবাড়ির ভোগের এ সব পদে জমিয়ে তুলুন আপনার হেঁশেল

এদের ভোগে চা-কফি থেকে শুরু করে থাকে চকোলেট, আইসক্রিমও।

অমৃতভোগ। ছবি: শুভেন্দু চাকী।

অমৃতভোগ। ছবি: শুভেন্দু চাকী।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৮ ১৩:১০
Share: Save:

পুরনো কলকাতার সাবেক পুজোবাড়িগুলির মধ্যে হরি ঘোষ স্ট্রিটের দত্তবাড়ি অন্যতম। প্রায় ১৫০ বছর আগে দুর্গাপুজো শুরু হয় এ বাড়িতে। পরে নানা কারণে সেই পুজো বন্ধ হয়। পরবর্তী ষষ্ঠ প্রজন্মের হাতে আবার শুরু হয় মাতৃবন্দনা। তাই সাবেক ও আধুনিকতার মেলবন্ধনে ভোগে চা-কফি থেকে শুরু করে থাকে চকোলেট, আইসক্রিমও।

পুজোর ক’দিন আমিষ-নিরামিষ পদ মিলিয়ে ৫২ রকম ভোগ দেওয়া হয়। সেই ৫২ রকমের ভোগের উপস্থাপনাও হরেক কিসিমের। বিপুল এই আয়োজনের মধ্যে কোথাও রয়েছে নিরামিষের ছোঁয়াচ, আবার কোথাও পুরোটাই আমিষ।

আপনার বাড়িতেও সহজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন এমন কিছু পদ। পুজোর দিনে একটু স্বাদবদল আনতে পারে যে সব রান্না, আজ রইল তাদের সন্ধান।

আরও পড়ুন: পালং শাক আর কিমার কেরামতিতে বিরিয়ানি এখানে কথা বলে​

আরও পড়ুন: পুজোর দিনে স্বাদবদলের চিকেন-মটন​

রাইবেগুন

উপকরণ: বেগুন ২টি, সরষে বাটা ১ চা চামচ, পোস্ত বাটা ১ চা চামচ, নারকেলের দুধ আধ কাপ, কারিপাতা ৪-৫টি, নুন, হলুদ ও চিনি পরিমাণমতো, সাদা সরষে বাটা ১ চা চামচ, সরষের তেল ১ কাপ।

প্রণালী: লম্বা বেগুন মাঝখান দিয়ে কেটে দু’টুকরো করে নিতে হবে। নুন, হলুদ মাখিয়ে বেগুন ভেজে নিন। অন্য একটি পাত্রে সরষে বাটা, পোস্ত বাটা ও নারকেলের দুধ মিশিয়ে রাখুন। বেগুন ভাজার তেলে কারিপাতা ফোড়ন দিয়ে মশলার মিশ্রণটা ঢেলে দিতে হবে। এর মধ্যে নুন, হলুদ ও লঙ্কা গুঁড়ো দিয়ে নাড়াচাড়া করুন। তেল ছাড়তে শুরু করলে বেগুন ভাজাও দিয়ে দিন। নামানোর আগে উপরে সাদা সরষে বাটা ছড়িয়ে দিন। তৈরি রাইবেগুন।

অমৃতভোগ

উপকরণ: বাসমতী চাল বা গোবিন্দভোগ চাল ২ কাপ, ঘি ১ কাপ, তেজপাতা ৪-৫টি, গোটা গরম মশলা (এলাচ, লবঙ্গ, দারচিনি) ১ টেবিলচামচ, দুধ ১ কাপ, কেশর ২ চিমটি, কিশমিশ ১ চা চামচ, কাজু বাদাম ১ টেবিল চামচ, আমন্ড বাদাম ১ টেবিল চামচ, পেস্তা ১ টেবিল চামচ।

প্রণালী: প্রথমে চাল ধুয়ে জল ঝরিয়ে পাখার হাওয়ায় চাল শুকিয়ে নিন। এ বার আধ কাপ ঘি, কিশমিশ, কাজু, আমন্ড, পেস্তা সব একসঙ্গে একটা পাত্রে ঢেলে, তার মধ্যে চাল দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। হাঁড়িতে বাকি ঘি দিয়ে তেজপাতা সাজিয়ে দিন। তার উপরে দিন গোটা গরম মশলা। তার পর ঘি মাখা চালের মিশ্রণ হাঁড়ির মধ্যে ঢেলে ভাল করে নাড়াচাড়া করুন। পরিমাণমতো জল, নুন ও চিনি দিয়ে উপর থেকে ঢাকনা দিয়ে দিন। এক কাপ গরম দুধে আগে থেকে কেশর ভিজিয়ে রাখুন। চাল সিদ্ধ হয়ে গেলে উপর থেকে কেশর দেওয়া

দুধ ছড়িয়ে আবার ঢাকা দিন। কাজু, কিশমিশ ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।

দুধে-আলতা কাতলা

উপকরণ: কাতলা মাছের পেটি ৪টি, ঘন দুধ ২ কাপ, টম্যাটো ২টি, শুকনো লঙ্কা ২টি, তেজপাতা ১টি, পোস্ত বাটা ১ চা চামচ, হলুদ ১ চা চামচ, কাশ্মীরি লঙ্কা গুঁড়ো ১ চা চামচ, ঘি আধ কাপ, সরষের তেল ১ কাপ, নুন, চিনি পরিমাণমতো।

প্রণালী: কড়াইতে সরষের তেল গরম করে নুন-হলুদ মাখানো মাছ ভেজে নিন। ভাজা মাছ টিসু পেপারে রেখে দিন। দুধ আগে জাল দিয়ে ঠান্ডা করে নিতে হবে। খোসা ছাড়িয়ে টম্যাটোর ক্বাথ বার করে রাখুন। এবার দুধের মধ্যে টম্যাটোর ক্বাথ মিশিয়ে নিন। কড়াইতে সাদা তেল ও ঘি মেশান। তার মধ্যে শুকনো লঙ্কা ও তেজপাতা ফোড়ন দিয়ে পোস্ত বাটা দিন। একটু না়ড়াচাড়া করে দুধ ও টম্যাটোর মিশ্রণ দিয়ে ফুটতে দিন। খেয়াল রাখবেন, পোস্ত যেন ভাজা না হয়ে যায়। তা হলে কিন্তু স্বাদটা ঠিকঠাক আসবে না। মশলা কষা হয়ে গেলে ও তার থেকে তেল ছাড়তে শুরু করলে পরিমাণমতো নুন, চিনি ও কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে দিন। গ্রেভি তৈরি হয়ে গেলে মাছ দিয়ে একটু নেড়ে নামিয়ে নিন।

ভোগের মাংস

উপকরণ: পাঁঠার মাংস ১ কেজি, দই ৩০০ গ্রাম, ধনে গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ, জিরে গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, গরম মশলা বাটা ১ টেবিল চামচ, তেজপাতা ৪-৫টি, আলু ৫টি, ছোট এলাচ ৪টি, বড় এলাচ ১টি, দারচিনি ১ ইঞ্চি, লবঙ্গ ৬-৭টি, নুন ও চিনি পরিমাণমতো।

প্রণালী: প্রথমে দই, ধনে গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো, আদা বাটা, গরম মশলা বাটা, নুন, হলুদ দিয়ে পাঁঠার মাংসে মাখিয়ে নিন। মাংস ম্যারিনেট করার জন্য ৬ ঘণ্টা রাখতে হবে। কড়াইতে সরষের তেল দিয়ে আলুগুলো লাল করে ভেজে তুলে নিন। সেই তেলেই গোটা গরম মশলা ও তেজপাতা ফোড়ন দিতে হবে। তার পর ম্যারিনেট করা মাংস কড়াইতে নাড়াচাড়া করে ঢাকা দিন। কম আঁচে মিনিট কুড়ি রান্না হলে ঢাকনা সরিয়ে খুন্তি দিয়ে নাড়িয়ে দিন। ভাজা আলুগুলো মাংসের মধ্যে দিতে হবে। খেয়াল রাখবেন আলুগুলো যেন উপরের দিকে থাকে। মাংসের গ্রেভির নীচের দিকে চলে গেলে আলু গলে যেতে পারে। পরিমাণমতো জল দিন। আবার ঢাকা দিয়ে ২০ মিনিট রান্না হতে দিন। ঢাকনা সরিয়ে দেখুন মাংস ও আলু সিদ্ধ হয়েছে কি না! সুসিদ্ধ হলে নামিয়ে নিন।

বাদশাহী ছানা

উপকরণ: দুধ ১ লিটার, শা-জিরা ১ চা চামচ, শুকনো লঙ্কা ২টি, তেজপাতা ২টি, পোস্ত বাটা ১ টেবিল চামচ, কাজু বাটা ১ টেবিল চামচ, কিশমিশ বাটা ১ টেবিল চামচ, ক্রিম আধ কাপ, মাখন ১ কিউব, সাদা তেল ১ কাপ, নুন ও চিনি পরিমাণমতো।

প্রণালী: বাড়িতে তৈরি ছানা বা কেনা ছানাতে রান্না করতে পারেন এই পদ। পাতলা কাপড়ে ছানা বেঁধে জল ঝরতে দিন। ঘণ্টাখানেক বাদে কাপড় থেকে ছানা বার করে নিতে হবে। ছানার মধ্যে নুন, চিনি দিয়ে ভাল করে মেখে নিন। তার পর ছানার ছোট ছোট বড়া বানিয়ে সাদা তেলে ভেজে নিতে হবে। ওই তেলেই শা-জিরা, শুকনো লঙ্কা, তেজপাতা ফোড়ন দিন। তার মধ্যে পোস্ত বাটা, কাজু বাটা ও কিশমিশ বাটা দিয়ে কষতে হবে। পরিমাণমতো নুন ও চিনি দিন। তেল বেরোতে শুরু করলে ক্রিম দিতে হবে। এ বার একে একে ছানার বড়াগুলো দিয়ে উপর থেকে মাখন ছড়িয়ে দিয়ে ঢাকা দিয়ে দিন। কিছুক্ষণ পর ঢাকনা খুলে কিশমিশ ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।

মিষ্টিমুখী

উপকরণ: ময়দা ৪ কাপ, জোয়ান ১ চা চামচ, গোলমরিচ গুঁড়ো আধ চা চামচ, চিনি ৫ টেবিল চামচ, নুন ও জল পরিমাণমতো।

প্রণালী: প্রথমে জলে চিনি দিয়ে চিনির রস বানিয়ে নিন। খেয়াল রাখবেন, চিনির রস যেন বেশি ঘন না হয়। রস ঠান্ডা হতে দিন। ময়দায় ঘি ময়ান দিন। তার পর ময়দার মধ্যে নুন, জোয়ান, গোলমরিচ গুঁড়ো ভাল করে মিশিয়ে নিন। এ বার অল্প অল্প করে চিনির রস দিয়ে ময়দাটা মাখতে থাকুন। ময়দা মাখা হয়ে গেলে মসলিনের কাপড় ভিজিয়ে ময়দা ঢেকে রাখুন। আধ ঘণ্টা পরে ময়দা থেকে লেচি পাকিয়ে বেলে নিন। খুন্তি বা ছুড়ি দিয়ে তার মাঝে ফুল, পাতা, মায়ের কান, গলার হারের নকশা তুলে নিন। কড়াইতে ঘি গরম করে লাল করে ভাজুন। গরম গরম পরিবেশন করুন মিষ্টিমুখী।

অনুলিখন: নবনীতা দত্ত

রুপোর বাসন: নিউ লক্ষ্মী জুয়েলার্স

(লেক মার্কেট)

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE