প্রতীকী চিত্র
শরতের আকাশে দেখা নেই পেঁজা তুলোর। কাশবন ধরে ছুটছে না আর অপু-দুর্গা। রাস্তায় সে ভাবে নেই ক্রেতাদের ভিড়। কিন্তু শহর কলকাতার হলটা কী? বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো আসতে আর মাত্র কয়েকটা দিন। অন্য বছরগুলোয় বাঙালি এ সময় ডুব সাঁতার দেয় বিকিকিনির ঠিকানায়। আকাশ-বাতাস মুখরিত থাকে শারদীয়ার আগমনীতে। পুজো প্যান্ডেলের বাঁশে যানবাহন আটকে জানান দেয় ‘এলো এলো দুগগা এলো’।
কিন্তু এ বছর ছবিটা বেশ কিছুটা আলাদা। শহর কলকাতায় কিছু দিন আগে ঘটে যাওয়া এক দুঃখজনক ঘটনার প্রতিবাদে সারা রাজ্য উত্তাল। তাতে বন্যায় ভাসছে বেশ কয়েকটি জেলা। সব মিলিয়ে উমা বরণে আগের মতো মেতে ওঠার মন নেই অনেকেরই। আর তার সরাসরি আঁচ পড়েছে পুজোর ব্যবসায়। সঙ্গে দোসর নিম্নচাপ। নাছোড় বৃষ্টি আর ঝোড়ো হাওয়ায় বেচাকেনা প্রায় মাথায় উঠেছে দোকানিদের।
বছরভর ব্যবসায়ীরা তাকিয়ে থাকেন পুজোর আগের এই কয়েকটা দিনের ব্যবসার দিকে। বড় দোকানের পাশে ছোট হকার বা চায়ের দোকানদারদেরও বিক্রি বাড়ে এ সময়টায়। কিন্তু আবহাওয়া সঙ্গ না দেওয়ায় এ বছর মন ভাল নেই তাঁদের কারও। চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কপালে। উপার্জনের এই মরসুমে তবে কি ভাটা পড়বে এ বছর?
গড়িয়াহাট হোক বা হাতিবাগান, ছবিটা মোটামুটি এক। সপ্তাহান্তের বৃষ্টিতে পুজোর বাজার মাটি হওয়ার জোগাড়। বৃষ্টি থেকে বাঁচতে পথ ছেড়ে অনেকেই ঢুকে পড়ছেন শীতাতপনিয়ন্ত্রিত শপিং মলে। তাতে সুসজ্জিত মলগুলির কেনাকাটা কিছুটা বাড়ছে বটে। তবে রাস্তার ধারের দোকানগুলোর কপাল মন্দ। যখন-তখন বৃষ্টির কারণে সাহস করে দোকানের বাইরে শাড়ি-জামাকাপড় সাজাতেও পারেননি অনেকেই। খদ্দেরের চোখ টানা তাই কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। হকার্স মার্কেটের হালও তথৈবচ। বড় দোকানের ব্যবসার সঙ্গে জুড়ে থাকে ছোট দোকানের উপার্জন। ক্রেতা কম থাকায় কোন ব্যবসাই লাভের মুখ দেখছেনা। গড়িয়াহাটের এক শাড়ি বিক্রেতার কথায় জানা গেল, গত সপ্তাহান্তে খদ্দের এসেছে হাতেগোনা। লাগোয়া পশ্চিমি পোশাক বিক্রেতারও একই হাল। একইসঙ্গে হোটেল-রেস্তোরাঁতেও ভিড়ের আনাগোনা কমে গিয়েছে অনেকটাই। করোনার পরে একটু একটু করে আবার মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছিল ছোট-বড় ব্যবসা। শারদীয়ার আবহে বাজার ও কেনাকাটার এই যে বিপুল চেন সিস্টেমের হাত ধরে লাভের মুখ দেখার সুযোগ, এ বছর কি ফের তা নিস্তেজ হয়ে পড়ল? দুর্যোগ কমলে কিছুটা বিক্রিবাট্টার আশা অবশ্য এখনও ছাড়েননি কলকাতার দোকানিরা।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy