‘ভূত’ বিষয়টায় আমি বরাবরই বিশ্বাস করি। কারণ অন্য কোথাও নয়, আমার নিজের বাড়িতেই সাক্ষী হয়েছি ভৌতিক অভিজ্ঞতার। খোলসা করেই লিখি বরং! তখন আমি খুব ছোট। সম্ভবত অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া। আমাদের বাড়ি তৈরি হওয়ার সময়ে এক জন রাজমিস্ত্রির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। খুবই অল্প বয়স ছিল তাঁর। ছাদ ঢালাইয়ের সময়ে আমাদের ঘরের জানলা লাগোয়া যে বাঁশের উপর উঠে কাজ করছিলেন তিনি, তা থেকে কোনও ভাবে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। ওই বাঁশের উপরেই তাঁর মৃত্যু হয়! এখানে বলে রাখি, ওই ঘরটা আমাদের জন্যই তৈরি হচ্ছিল।
মা-বাবা ঠিক করেন, যে ওই ঘরে আগে পুজোর ব্যবস্থা করা হবে। তার পরে হবে গৃহপ্রবেশ। ভয়ানক এক ঘটনা ঘটে পুজোর বাজার করতে যাওয়ার দিনেই। মা-বাবা গিয়েছিলেন বাজার করতে। সেই সময়ে আমি আর আমার বোন একাই ছিলাম বাড়িতে। তখন রাত। আমি ঘরের দরজা ভেজিয়ে নিজের মনে পড়াশোনা করছি। পাশের ঘরে টিভি চলছে। হঠাৎ দেখি দরজাটা সামান্য একটু খুলে গেল। প্রথমে হাওয়া ভেবে মনকে সান্ত্বনা দিয়েছিলাম। তার পরেই দেখি, দরজার ফাঁক দিয়ে একটি চোখ যেন একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। আমার সঙ্গে বোনের দুষ্টুমি লেগেই থাকে। ভেবেছিলাম বোনই হয়তো আমাকে ভয় দেখাচ্ছে। শেষে সাহস করে ঘর থেকে বেরিয়ে এসে বোনকে বকতে গিয়েই দেখি কেউই নেই সেখানে। টিভিটা চলছে শুধু।
আমাদের যৌথ পরিবার। আমি চিৎকার করে বোনকে জিজ্ঞেস করি, কোন ঘরে আছে ও। ওপাশ থেকে সাড়া আসে, ‘আমি তো আম্মার ঘরে অনেকক্ষণ ধরেই রয়েছি।’ জানি না সে দিন কার চোখ তাড়া করে বেড়াচ্ছিল আমায়! তবে অদ্ভুত বিষয় হল, ঘরে পুজো দেওয়ার পরে আর কোনও দিন এমন কিছু ঘটেনি। মা পরে জানিয়েছিলেন, রাজমিস্ত্রি ছেলেটি যখন মারা যান, তাঁর চোখ দুটো খোলা ছিল। মা বলেন, চোখ দিয়েই নাকি প্রাণ বেরিয়েছিল তাঁর। সে কারণে হয়তো ওঁর চোখটাই দেখতে পেয়েছিলাম আমি। আজ এত বছর হয়ে গেল ওই বাড়িতেই থাকি আমরা। ওই দিনের পর থেকে আজ পর্যন্ত আর কিচ্ছুটি ঘটেনি কখনও।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy