ছবি- ফেসবুক
পুজোর কয়েক দিন আগেই গোটা জয়পুর একা ঘুরে বেড়ালেন অম্বরীশ। সঙ্গে চেখে দেখলেন জয়পুরের একাধিক বিখ্যাত সব খাবার। আর পুজোর উপহার? কপিল দেব ও মহেন্দ্র সিং ধোনি! একটি অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণে গিয়ে অভিনেতার দেখা হয় গেল প্রিয় দুই ক্রিকেটারের সঙ্গে।
বেশ অনেক দিন আগের কথা। ছোট্ট অম্বরীশ বাবার সঙ্গে খেলা দেখতে গিয়েছিলেন। মাঠে স্বয়ং কপিল দর্শন যদি হয়! গ্যালারির এক প্রান্তে বসে ছোট্ট অম্বরীশ সে দিন প্রার্থনা করেছিলেন, যাতে এক বার প্রিয় খেলোয়াড়ের হাতটা উঠুক গ্যালারির দিকে। সে ইচ্ছে পূরণ হয়নি সে দিন। তবে অনেকগুলো বছর পেরিয়ে এ বার সৌভাগ্য হয়েছে সেই মানুষটার পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকে ছোটবেলার এই গল্প বলার! যা শুনে আপ্লুত হয়েছেন তাঁর নায়ক, কপিল দেব স্বয়ং।
আর ধোনি কী বললেন অম্বরীশকে? অভিনেতার থেকে এক বাক্স মিষ্টি উপহার পেয়ে খুব খুশি হয়েছেন ক্যাপ্টেন কুল! নিজে একটু খাবেন, আর বেশিটাই নিয়ে যাবেন বাড়ির জন্য। একটু উদাসও হয়েছেন বটে। অম্বরীশের হাওয়ামহল যাওয়ার গল্প শুনে বলেছেন, ভারতবর্ষের অনেক দর্শনীয় স্থানই নাকি দেখাই হয়নি তাঁর। রেলে চাকরির সময়ে পয়সা ছিল না বেড়াতে যাওয়ার। আর এখন তারকা ক্রিকেটার হওয়ার সুবাদে সে পথ বন্ধ! অন্যের অসুবিধা করে বেড়াতে যাওয়া যে তাঁর ধাতে নেই।
অম্বরীশের আলাপ জমেছে কপিল দেবের সঙ্গেও। প্রিয় ক্রিকেটারের জীবনের মন্ত্র ছুঁয়ে গিয়েছে তাঁকে। কপিল বলেছেন, স্বেচ্ছায় তিনি নির্বাচন করেছেন জীবনের পথ। তাই পেশার চাপ, যা এই প্রজন্মের কাছে 'প্রেসার', তাঁর কাছে হল বরাবর 'প্লেজার'-ই হয়ে থেকেছে। কথাগুলো খুব আবেগের সঙ্গে জানালেন অভিনেতা নিজেই।
অম্বরীশকে নাকি কথায় কথায় কপিল বলেছেন, পঞ্চাশ পার করলেই খাওয়াদাওয়ার পরিমাণ অর্ধেক করে দেওয়া উচিত। তাই সময় থাকতে পেট পুরে খাওয়ায় মন দিতে চান অভিনেতা! পুজোর শুরুতে জয়পুরে তাই অম্বরীশের পাত জুড়ে ছিল বিখ্যাত ডাল বাটি চুর্মা আর লাল মাস। সঙ্গে লক্ষ্মী মিষ্টান্ন ভান্ডারের মিষ্টি। সেখানকার লস্যি, কালাকাঁদ, মিছরি, মাওয়া- সবই প্রাণ ভরে খেয়েছেন। বাড়ির জন্যেও এনেছেন ব্যাগ ভরে। ছোট পর্দার প্রিয় ‘পটকা’ নাকি সব ছেড়ে দিতে পারেন, কিন্তু খাওয়া নয়!
এমনকী, আগে খাওয়া, পরে প্রেম!খেতে গিয়ে প্রেমিকার সঙ্গে ব্রেক আপও হয়েছে অভিনেতার! সে-ও জানালেন নিজেই। বললেন, "এক পুজোয় প্রেম হল। দেখা তো করতেই হবে তার সঙ্গে। মনে হল প্রিয়কে নিয়ে প্রিয় জায়গাতেই যাই। তখন কলেজজীবনে সবে ‘নিরঞ্জন আগার’-এ যাতায়াত শুরু হয়েছে। ফাউল কাটলেট, ফিশ ফ্রাই, বোমা সব বিখ্যাত নামের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। প্রেমিকাকে নিয়ে গেলাম ‘নিরঞ্জন আগার’এ। এমনিতে উত্তর কলকাতায় প্রচুর দোকান। মিত্র ক্যাফে, দিলখুশ। সে সব জায়গার খাবার কোনও ফাইভ স্টারের থেকে কম নয় মোটেই। কিন্তু ‘নিরঞ্জন আগার’-এ কাঠকয়লায় রান্না হয়, দারুণ স্বাদ। মনে হয়েছিল ওর থেকে ভাল জায়গা হতেই পারে না ডেট করার জন্য। আমি ফাউল কাটলেট অর্ডার করেছি। মুখ চলছে। এ দিকে সে বিরক্ত! রেগে চলেই গেল শেষে! বলল, ‘যে লোক বসে বসে পাঁচটা ফাউল কাটলেট খায়, তার সঙ্গে প্রেম করব না।’ আমি বললাম, খাওয়াটাই তো সব, তুমি রেগে যাচ্ছ কেন? আসলে তখন ‘ডায়েট’ শব্দটা জনপ্রিয় হয়েছে সবে মাত্র। ও’ বোধ হয় ডায়েটেই ছিল। রাগে চপটাও পুরোটা না খেয়ে চলে গিয়েছিল। অন স্পট। কিন্তু আমি দমে যাইনি। ওর না খাওয়া আধখানা চপটা খেয়েছিলাম বসে। সঙ্গে আরও দুটো ফিশ ফ্রাই!"
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy