প্রাণীবিদ অ্যাডাম ব্রিটন। —ফাইল চিত্র।
প্রায় ৪০টি কুকুরকে ধর্ষণ এবং খুনের দায়ে ২৪৯ বছরের জন্য কারাদণ্ড হল ব্রিটিশ প্রাণীবিদ অ্যাডাম ব্রিটনের। ওই প্রাণীবিদের বিরুদ্ধে মোট ৬০টি অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। যার মধ্যে ছিল কুকুরদের শারীরিক নিগ্রহ এবং খুনের অভিযোগ। বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার আদালতে ৪২টি কুকুরকে যৌন হেনস্থার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন ব্রিটন। নিগৃহীতদের মধ্যে ৩৯টি কুকুর মারা গিয়েছে।
ব্রিটিশ প্রাণীবিদ ব্রিটন মূলত কুমির বিশেষজ্ঞ হিসাবে পরিচিত। থাকতেন অস্ট্রেলয়ার ডারউইনে। কুকুরদের হেনস্থা করে সেই ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে পোস্ট করতেন ওই প্রাণীবিদ। তাঁর একের পর এক ভিডিয়ো নজরে আসার পর পদক্ষেপ করে প্রশাসন। গত বছরই ৬০টি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন তিনি।
গত বৃহস্পতিবার এনটি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি মাইকেল গ্রান্ট শুনানির সময় আদালতের কর্মিবৃন্দ এবং নানা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে আসা সদস্যদের কোর্টরুমের বাইরে যেতে অনুরোধ করেন। একাধিক বিদেশি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তার পর বিচারপতি প্রাণীবিদের কৃতকর্মকে গভীর মানসিক রোগের প্রতিফলন বলে উল্লেখ করেন। তার মধ্যে অভিযুক্ত প্রাণীবিদের আইনজীবী আদালতে একটি রিপোর্ট দিয়ে জানান, তাঁর মক্কেলের মানসিক চিকিৎসা চলছে।
ব্রিটনের কাণ্ড ছড়িয়ে পড়ার পর গত কয়েক দিন ধরে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ফুঁসে উঠেছিল। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যেরা পোস্টার নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন। প্রাণীবিদের মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন তাঁরা। যদিও সে দেশে মৃত্যুদণ্ড অবলুপ্ত হয়ে গিয়েছে।
অন্য দিকে, প্রাণীবিদের আইনজীবীরা মক্কেলের মানসিক অসুখের কথা রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছিল আদালতকে। তাঁরা জানান, প্রায় দু’বছর ধরে ‘প্যারাফিলিয়া’য় ভুগছিলেন ব্রিটন। গোটা কাণ্ড তিনি ওই সময়ে ঘটিয়েছেন। যদিও শেষ পর্যন্ত প্রাণীবিদের সাজা ঘোষণা করে আদালত। প্রাণীদের উপর নির্যাতনের অভিযোগে আটটি মামলায় ব্রিটনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। শিশুদের নির্যাতনে ‘ব্যবহৃত’ জিনিসপত্র রাখা এবং বিলিয়ে দেওয়ার অভিযোগে চারটি মামলা দায়ের হয়েছিল। তাতে তিনি পান ১০ বছরের কারাদণ্ড। এ ছাড়া প্রাণীদের উপর নিষ্ঠুরতার ৩৭টি মামলার প্রতিটিতে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে এই প্রাণীবিদকে।