কমছে সংক্রমণ ফাইল চিত্র
ডেল্টা ভেরিয়েন্ট নিয়ে আতঙ্ক বজায় থাকলেও জুলাই মাসের পর থেকে এই প্রথম চিনে স্থানীয় সংক্রমণ শূন্যে নেমে এসেছে বলে জানাল জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন।
গত ২০ জুলাই পূর্ব চিনের নানজিং বিমানবন্দরের সাফাইকর্মীদের দেহে ডেল্টা ভেরিয়েন্টের উপস্থিতি ধরা পড়ার পরে নিমেষে ছড়িয়ে পড়েছিল সংক্রমণ। দেশের ৩১টি প্রদেশের প্রায় অর্ধেকে ছেয়ে যায় সংক্রমণ। আক্রান্ত হন বারোশোর বেশি মানুষ। কোভিড নিয়ে চিনের ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতিকে বড়সড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে ডেল্টা। যার ফলে কয়েক লক্ষ নাগরিককে ফের লকডাউনের মুখে পড়তে হয়। গণপরীক্ষা ও আক্রান্ত-চিহ্নিত করার মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়া হয় কয়েক গুণ। অন্তর্দেশীয় সফরেও বাড়ানো হয় বিধিনিষেধ। এই নিয়মগুলি কার্যকর হওয়ায় দৈনিক সংক্রমণ গত এক সপ্তাহে এক অঙ্কে নেমে আসে।
স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, আজ দেশে যে ২১ জন আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকেই সংক্রমিত হয়েছেন বাইরে থেকে। এ ছাড়া করোনার লক্ষণ নেই, এমন ১৬ জনের কেউই স্থানীয় ভাবে সংক্রমিত হননি বলে জানিয়েছে জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন। সে ক্ষেত্রে ১৬ জুলাইয়ের পর থেকে এই প্রথম চিনে স্থানীয় সংক্রমণ শূন্যে নেমে এল। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এই ধারা বজায় রাখতে পারলে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে চিনই ডেল্টা সংক্রমণ নির্মূল করতে পারবে।
‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে হেঁটে কড়া বিধিনিষেধের মাধ্যমে চিন, সিঙ্গাপুর, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলি বহু দিন করোনা-সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছিল। কিন্তু ডেল্টা এসে বদলে দেয় গোটা ছবিটি।
অস্ট্রেলিয়ায় সিডনি, মেলবোর্ন, ক্যানবেরার মতো শহরে সপ্তাহের পর সপ্তাহ লকডাউন চললেও সংক্রমণ বাড়তেই থাকে। শনিবার দেশে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল অতিমারি শুরুর পর থেকে সর্বোচ্চ। দীর্ঘ লকডাউনে ধৈর্য হারিয়ে পথে নেমে প্রতিবাদ জানান কয়েক হাজার মানুষ। যার জেরে রবিবার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন লকডাউন তুলে দেওয়ার ইঙ্গিত দেন। তিনি জানান, অস্ট্রেলিয়া সরকার সংক্রমণ শূন্যে নামিয়ে আনার পরিবর্তে এ বার নজর দেবে কত জন গুরুতর অসুস্থ হচ্ছেন এবং কত জনের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন, সেই দিকে। সিঙ্গাপুরও তালাবন্দি থাকার বদলে কোভিডকে সঙ্গে নিয়েই ‘নিউ নর্মাল’ নীতিতে হাঁটার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।
এ দিকে, আগামী মাসে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার বার্ষিক অধিবেশনে বিশ্বনেতাদের ভিডিয়োর মাধ্যমে যোগ দেওয়ার আর্জি জানাল আমেরিকা। যাতে এক সপ্তাহের এই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ‘সুপার স্প্রেডার ইভেন্টে’ না পরিণত হয়, তার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জে নিযুক্ত আমেরিকার রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড ১৯৩টি সদস্য দেশকে চিঠি পাঠিয়েছেন। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর ওই অধিবেশনে বক্তব্য রাখার কথা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর।