ইউক্রেনের সেনাদের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কি। —ফাইল চিত্র।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ৫০০ দিন অতিক্রম করল। যুদ্ধের ৫০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে কৃষ্ণসাগরের তীরবর্তী স্নেক আইল্যান্ডে গিয়েছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। সেখান থেকেই একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘প্রতিরোধের বার্তা’ দেন তিনি। ভিডিয়ো-বার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমি এখান থেকে আমাদের প্রত্যেক সেনা সদস্যকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তাঁরা ৫০০ দিন ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।”
রণকৌশলগত দিক থেকে তো বটেই অন্য আর একটি কারণেও এই স্নেক আইল্যান্ড ইউক্রেনের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা জায়গা। গত ফেব্রুয়ারি মাসে যুদ্ধের গোড়াতেই কৃষ্ণসাগরের ছোট্ট পাথুরে দ্বীপ জিমিনি (স্নেক আইল্যান্ড)-র দখল নিয়েছিল ভ্লাদিমির পুতিনের বাহিনী। রুশ রণতরী আত্মসমর্পণের ‘বার্তা’ দিলেও তা অগ্রাহ্য করে দ্বীপরক্ষার অসম লড়াইয়ে প্রাণ দিয়েছিলেন ইউক্রেনের ১৩ জন সীমান্তরক্ষী।
মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে স্নেক আইল্যান্ড-সহ কৃষ্ণসাগরের কয়েকটি রুশ নৌঘাঁটি দখলের জন্য অভিযান শুরু করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির অনুগত বাহিনী। বস্তুত, তার মাস খানেক আগেই ইউক্রেন সেনার তৎপরতা বেড়েছিল কৃষ্ণসাগরে। ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় রুশ রণতরী মস্কোভার সলিলসমাধির পর কিছুটা রক্ষণাত্মক অবস্থানে চলে গিয়েছিল রুশ সেনা। তার পর স্নেক আইল্যান্ড থেকে সেনা প্রত্যাহারের পথে হাঁটে ক্রেমলিন।
মস্কোর তরফে অবশ্য এই সিদ্ধান্তকে ‘সদিচ্ছার নিদর্শন’ হিসাবে অভিহিত করা হয়। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা দফতর জানায়, ইউক্রেনের বন্দরগুলি থেকে খাদ্য আমদানি-রফতানি পথ তৈরি করতে রাষ্ট্রপুঞ্জ যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তাতে বাধা দেওয়ার কোনও অভিপ্রায় মস্কোর নেই, সে কারণেই সেনা প্রত্যাহারের এই সিদ্ধান্ত। তবে ইউক্রেন এই জায়গাকে তাদের প্রতীকী জয়ের স্মারক বলেই মনে করে এসেছে বরাবর। নিজের ভিডিয়ো-বার্তাতেও স্নেক আইল্যান্ডকে ‘জয়ের স্থান’ বলে অভিহিত করে জ়েলেনস্কি জানান, রাশিয়ার দখলীকৃত সব স্থান পুনরুদ্ধার করবে ইউক্রেন।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরেই রাশিয়ার মস্কোভা যুদ্ধজাহাজ এই দ্বীপে এসে ভিড়েছিল। রুশ সেনার তরফে ইউক্রেনের সেনাকে আত্মসমর্পণ করার কথা বলা হলেও পাল্টা জবাব এসেছিল ‘নরকে যাও’। এই কথোপকথনের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে। যদিও আনন্দবাজার অনলাইন এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি। গত বছর জুন মাসে এই দ্বীপ পুনরায় দখল করে ইউক্রেন। অন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে জানানো হয়েছে, ৫০০ দিন ধরে চলা যুদ্ধে ইতিমধ্যেই ৯০০০ মানুষ মারা গিয়েছেন, যাঁদের মধ্যে ৫০০ জনই শিশু।