ধর্মদ্রোহের অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হল পাকিস্তান। প্রতীকী ছবি।
অতীতে এমন নজির কম নয়। ফের সেই ধর্মদ্রোহের অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হল পাকিস্তান। শনিবার পুলিশি হেফাজতে থাকা এক যুবককে নানকানা সাহিব অঞ্চলের এক জেলে ঢুকে পিটিয়ে খুন করল উন্মত্ত জনতা। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ধর্মগ্রন্থের অবমাননা করেছেন।
সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, মুসলিমদের ধর্মগ্রন্থের ‘অপমান’ করার অভিযোগে শনিবার মহম্মদ ওয়ারিস নামে ওই যুবকের উপরে চড়াও হয় ক্ষুব্ধ জনতা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। ওয়ারিসকে উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে রেখেছিল তারা। যদিও তাতে শেষরক্ষা হয়নি বলেই জানান পুলিশের মুখপাত্র মহম্মদ ওয়াকাস। তিনি বলেন, ‘‘কাউকে তোয়াক্কা না করে উন্মত্ত জনতা থানায় ঢুকে পড়ে। ওয়ারিসকে বার করে উঠোনে টেনে নিয়ে আসে তারা। এর পর শুরু হয় গণপ্রহার। যার জেরে মৃত্যু হয় তাঁর। এমনকি দেহটি পুড়িয়ে দেওয়ারও চেষ্টা করে অভিযুক্তেরা।’’
কিন্তু পুলিশ তাদের আটকাতে পারেনি কেন? এর উত্তরে ওয়াকাস বলেন, ‘‘সে সময়ে থানায় মাত্র কয়েক জন পুলিশই উপস্থিত ছিলেন। তাদের পক্ষে অত মানুষকে একসঙ্গে সামাল দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠেনি।’’ তবে তিনি জানান যে, পরে আরও বাহিনী আসায় দেহটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া আটকে দেওয়া গিয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে ঘটনার একটি ভিডিয়ো। যা সত্য বলেই যাচাই করে জানিয়েছে পুলিশ। সেখানে দেখা গিয়েছে, এক যুবককে পা ধরে হিড়হিড় করে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে কয়েকজন। তাঁর পোশাক ছিঁড়ে নেওয়া হয়েছে। সঙ্গে লাঠি এবং ধাতুর রড দিয়ে তাঁর উপর প্রহার চলছে অবিরাম।
এই ঘটনা মনে করিয়ে দিয়েছে ২০২১ সালে এক কাপড় কারখানার ম্যানেজারের খুনের ঘটনা। ধর্মদ্রোহের অভিযোগ তুলে একই ভাবে পিটিয়ে খুন করা হয়েছিল শ্রীলঙ্কার ওই নাগরিককে। সেই ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয় মোট ছ’জনকে। যদিও এ রকম বহু ঘটনার ক্ষেত্রেই প্রশাসনের গাফিলতিতে শাস্তি এড়িয়ে গিয়েছেন অভিযুক্তেরা। এমনটাই জানাচ্ছেন মানবাধিকার কর্মীদের একাংশ। শনিবারের এই ঘটনায় শেষ পর্যন্ত অভিযুক্তেরা ধরা পড়বে কি না, তা অবশ্য সময়েই বলবে। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই বিষয়টি নজরে এসেছে পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফের। দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।