তালিবান মুখপাত্র এবং চিনের বিদেশমন্ত্রী।
চিনেই আপাতত ভরসা রাখছে তালিবান। শুক্রবার একটি বিবৃতিতে তালিবান মুখপাত্র বলেছেন, চিন যদি আফগানিস্তানের উন্নতি সাধনে এগিয়ে আসতে চায়, তবে তাদের স্বাগত জানাবে তালিবান। অদ্ভুত ভাবে এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে চিনের তরফেও তালিবান সংক্রান্ত একটি মন্তব্য সামনে এসেছে। ব্রিটেনের বিদেশসচিবের সঙ্গে একটি টেলিফোন কথোপকথনে চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, তালিবানের উপর এখনই চাপ সৃষ্টি করা ঠিক হবে না। ওরা নতুন সরকার গঠন করতে চাইছে। বিশ্বের অন্য দেশগুলির এই স্বাধীনতাকে সম্মান জানানো উচিত। চিন-তালিবান এই প্রকাশ্য সখ্যে বেশ সতর্ক ভাবেই নজর রাখছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা।
একমাস আগেই তালিবানদের রাজনৈতিক নেতা মোল্লা বরাদরকে সাদরে আপ্যায়ন করেছিল চিন। তিনজিয়াং-এ বরাদরের সঙ্গে বৈঠকও হয়েছিল চিনের বিদেশমন্ত্রীর। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ওই বৈঠকে চিন বলেছিল আফগানিস্তানের শান্তি ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে তালিবানকেই। শুক্রবার সেই চিনকেই আফগানিস্তানের উন্নতি সাধনে এগিয়ে আসার আমন্ত্রণ জানাল তালিবান।
বৃহস্পতিবার রাতে সিজিটিএন নামে চিনের একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তালিবান মুখপাত্র সুহেল শাহীন বলেন, চিন বড় দেশ। ওদের অর্থনীতি এবং ক্ষমতা দুই-ই বিপুল। আমরা মনে করি আফগানিস্তানের পুনর্নির্মাণ, পুনর্গঠন এবং পুনর্বাসনের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে বৃহত্তর ভূমিকা গ্রহণ করতে পারে চিন সরকার।’’ এমনকি আফগানিস্তানের শান্তি প্রতিষ্ঠার কৃতিত্বও চিনকেই দিয়ে সুহেল বলেন, চিন যদি আফগানিস্তানের উন্নয়নে এগিয়ে আসতে চায় তবে তাদের স্বাগত জানাবে তালিবান।
অন্যদিকে, চিন তালিবানকে সরাসরি সমর্থন না করলেও মনে করে, তালিবানের স্বাধীনতাকে সম্মান জানানো উচিত। ব্রিটেনের বিদেশ সচিব ডমিনিক রাবের সঙ্গে কথোপকথনে এ কথা বলেছেন চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং। বৃহস্পতিবারই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছিলেন, তালিবান আফগানিস্তানের উন্নতি করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন না। বাইডেন এ কথাও বলেন যে, শুধু সামরিক শক্তিতে দেশ শাসন হয় না। ওয়াং সেই বক্তব্যের জের টেনেই বলেছেন, আন্তর্জাতিক শক্তিগুলির এখনই তালিবানের উপর চাপ দেওয়া উচিত নয়। তাদের উচিত আফগানিস্তানের স্বাধীনতা এবং আফগানবাসীর ইচ্ছেকে সম্মান জানানো।