সারা দিন অফিসে কাজ করার পর দিনের শেষে সকলের তাড়া থাকে বাড়ি গিয়ে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর। ডিনারে পরিবারের সঙ্গে গল্প হলেও বা কত ক্ষণ! কিন্তু যদি এরকম কোনও কাজ হয়, যেখানে আপনার কাজের চাপ থাকবে না এবং খুব সহজে পরিবারকেও সময় দেওয়া যাবে, তা হলে কেমন হত? এ রকমই কাজের মহল পেয়ে যাবেন ডেনমার্কে।
ড্যানিশরা তাঁদের সময়কে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে থাকেন এবং এই কারণে তাঁদের কাজের পরিবেশ সে রকম ভাবেই তৈরি। ঠিক কী রকম এই কাজের পরিবেশ দেখে নেওয়া যাক।
বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কাজের পরিবেশ হিসেবে পরিচিত ডেনমার্কের কাজের পরিবেশ। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ড্যানিশরা তাঁদের সময়কে খুবই গুরুত্ব দেন। সেই অনুযায়ী তাঁরা কাজের সময় ভাগ করে থাকেন।
ড্যানিশরা শনিবার, রবিবার এবং অন্য কোনও জাতীয় ছুটির দিনগুলি কোনও রকম ব্যবসায়ীক আলোচনা বা কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন না।
ড্যানিশরা বছরে পাঁচ সপ্তাহের ছুটি উপভোগ করতে পারেন। যার মধ্যে তাঁদের সন্তানদের গ্রীষ্মকালীন ছুটি চলাকালীন তিন সপ্তাহের ছুটির আবেদন করতে পারেন।
ড্যানিশদের কাজের পরিবেশে থাকা সমানতা এবং সহনশীলতা তাদের সংস্কৃতিকে প্রতিফলিত করে। কাজের এই পরিবেশ তাঁদের দায়িত্ব পালনেও সাহায্য করে বলে দেখা গিয়েছে।
যদি কাউকে কাজ থেকে বরখাস্ত করা হয়, তখন সরকার তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। পরবর্তী দু’বছর ধরে তাদের সরকারের তরফ থেকে শেষ প্রাপ্ত বেতনের ৯০ শতাংশ দেওয়া হয়। ওই দু’বছর নতুন কাজ খোঁজা এবং উপযুক্ত কাজের জন্য সঠিক ভাবে নিজেদের তৈরি করার মতো সুযোগ পান তাঁরা।
ইউরোপে সব চেয়ে কম কাজের সময় ডেনমার্কেই, দিনে সাড়ে সাত ঘন্টা। বেশির ভাগ কর্মী বিকেল ৪টের মধ্যে কাজ শেষ করে বাড়ি চলে যান। কিন্তু তাঁদের প্রতি ঘণ্টায় প্রোডাক্টিভিটি তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো। ভারত তো বটেই, ইউরোপের অন্য দেশগুলির তুলনাতেও যা অনেকটাই বেশি।
ছেলে-মেয়েকে কোনও রকম ঋণ ছাড়া চিন্তামুক্তভাবে ভাবে যাতে লেখাপড়া করানো যায়, তার জন্য ডেনমার্কে কিন্ডারগার্টেন, স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া বিনামূল্যে হয়ে থাকে।
বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশগুলির মধ্যে অন্যতম ডেনমার্ক। ব্যবসার জন্য উপযুক্ত একটি দেশ। এরকম একটি শহর থেকে কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ আরও ভাল করে তোলার শিক্ষা নেওয়া যেতেই পারে।