ফাইল চিত্র।
আফগানিস্তান থেকে আমেরিকান সেনা সম্পূর্ণ ভাবে সরে আসার দিন যত ঘনিয়ে আসছে, তত আশঙ্কার মেঘ ঘনিয়ে উঠছে— আফগানিস্তানে গত কয়েক বছর ধরে দেশের মেয়েদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার যে ভাবে কাজ করেছে, তালিবান ক্ষমতায় ফিরলে তা বজায় থাকবে তো? আমেরিকার এক সাম্প্রতিক গোয়েন্দা-রিপোর্টে এই আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
আমেরিকার জাতীয় গোয়েন্দা কাউন্সিলের দু’পাতার এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘‘২০০১ সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে তালিবানের মানসিকতা ও মেয়েদের অধিকার সংক্রান্ত অবস্থান আদপেই পাল্টায়নি। ফলে এই আশঙ্কাটা রয়েই যাচ্ছে যে গত দু’দশক ধরে নারী সুরক্ষা ও অধিকার নিয়ে যা প্রগতিমূলক কাজ হয়েছে, তা বিফলে যেতে পারে। খর্ব হতে পারে মেয়েদের অধিকার।’’ ১৯৯৬ থেকে ২০০১, তালিবান জমানার এই কয়েক বছরে মেয়েদের পড়াশোনা, প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ‘‘বিদেশি ত্রাণের আশায় এবং আন্তর্জাতিক মহলে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য প্রথম দিকে হয়তো মেয়েদের বিষয়ে কিছুটা অবস্থান পাল্টাতে পারে তালিবান নেতৃত্ব। কিন্তু কিছু দিন ক্ষমতায় থাকলেই তারা নিজেদের পুরোনো অবস্থান ফিরে যেতে সময় লাগাবে না।’’
গত বছর ২৯ ফেব্রুয়ারি কাতারের দোহায় তালিবান নেতৃত্বের সঙ্গে শান্তি-চুক্তি সাক্ষর করেন প্রাক্তন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ‘এগ্রিমেন্ট ফর ব্রিংগিং পিস টু আফগানিস্তান’ নামের সেই চুক্তিতে বলা হয়ছিল, ২০২০-র জুলাইয়ের মধ্যে আফগানিস্তানে আমেরিকান সেনার সংখ্যা ১৩ হাজার থেকে কমিয়ে ৮ হাজার ৬০০ করা হবে। ২০২১-এর এপ্রিলের মধ্যে সব আমেরিকান সেনা আফগানিস্তান থেকে চলে আসবে, ট্রাম্প প্রশাসনের তরফ থেকে এই আশ্বাসও দেওয়া হয়েছিল চুক্তিতে।
জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে এ বছর ১৩ এপ্রিল জানান, আফগানিস্তানে যে আড়াই হাজার আমেরিকান সেনা এখনও আছে, তাদের এ বছরই ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু এ বছরের গোড়া থেকে আফগানিস্তানে হিংসাত্মক ঘটনা বেড়েই চলছে। ১ মে হেলমন্দ প্রদেশের সামরিক ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ আফগান প্রশাসনের হাতে তুলে দিয়েছে আমেরিকান সেনাবাহিনী। তারপর থেকে বিভিন্ন আফগান ঘাঁটিতে তালিবান হামলা আরও বেড়েছে। লন্ডনে জি-৭ শীর্ষ বৈঠকের ফাঁকে আফগান পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল আলোচনা করেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিনিধি জোসেফ বোরেল ফোঁতেল।