মার্তিন মোইস
প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনে জনা পঞ্চাশ সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী থাকা সত্ত্বেও মাঝ রাতে নিজের শোওয়ার ঘরে খুন হয়েছিলেন হাইতির প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোইস। গত ৭ জুলাইয়ের সেই হামলায় গুরুতর আহত হন জোভেনেলের স্ত্রী মার্তিন মোইস-ও। চিকিৎসার জন্য দ্রুত তাঁকে আমেরিকায় নিয়ে আসা হয়। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন মার্তিন। একটি প্রথম সারির আমেরিকান দৈনিকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি জানিয়েছেন, যে দুষ্কৃতীরা তাঁদের মারতে এসেছিল, তারা ভেবেছিল তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন। তাই তিনি প্রাণে বেঁচে যান।
আমেরিকার হাসপাতালে মার্তিনকে সর্বক্ষণের জন্য ঘিরে থাকছেন নিরাপত্তারক্ষীরা। সঙ্গে রয়েছেন তাঁর কিছু আত্মীয়-পরিজনও। ওই দৈনিককে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে সে দিন রাতের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন মার্তিন। তাঁর স্বামীর জন্য এত নিরাপত্তা থাকার পরেও কী করে এত জন সশস্ত্র দুষ্কৃতী তাঁদের শোওয়ার ঘর পর্যন্ত পৌঁছতে পেরেছিল, সে কথা ভেবে বিস্মিত নিহত প্রেসিডেন্ট-পত্নী।
হাইতির পুলিশ ইতিমধ্যেই প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা সংস্থার প্রধানকে গ্রেফতার করেছে। তারা জানিয়েছে, গোটা ঘটনায় বিদেশি রাষ্ট্রের ষড়যন্ত্র রয়েছে। খুনিদেরও বিদেশ থেকেই আনা হয়েছিল। ইতিমধ্যেই কলম্বিয়ার কয়েক জন নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মার্তিন নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে বলেছেন, ‘‘বন্দুকবাজেরা ঘরে ঢুকেই গুলি চালাতে শুরু করে। আমার স্বামী মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিলেন। আমিও রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ি। আমার হাত আর কনুইয়ে গুলি লেগেছিল। মুখ দিয়ে এত রক্ত বেরোচ্ছিল যে শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। ওরা ভেবেছিল যে আমি বোধহয় মরে গিয়েছি। আমাকে ফেলে ওরা ঘরে তল্লাশি চালাতে থাকে।’’ দুষ্কৃতীরা কী নিয়ে গিয়েছে, তা জানেন না মার্তিন। তবে তাঁর স্বামীর ফাইল রাখার জায়গায় ওরা অনেক খোঁজাখুঁজি করছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।
মার্তিন জানিয়েছেন, হাইতির মানুষ মূলত ক্রিয়ল আর ফরাসি ভাষায় কথা বলেন। ওই দুষ্কৃতীরা হামলা চালানোর সময় অন্য কোনও ভাষায় কথা বলছিল, যা তিনি বুঝতে পারেননি। তবে তাঁর স্পষ্ট বার্তা, ‘‘খুনিদের আমি এটা বোঝাতে চাই যে আমি ভয় পাইনি। একটু সুস্থ হলেই প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়ব। যারা এই হামলার ঘটনায় জড়িত, অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করতে হবে। না হলে হাইতিতে কোনও প্রেসিডেন্টকেই ওরা বাঁচতে দেবে না।’’