প্রতীকী ছবি।
জলদস্যু বলতেই আপনার চোখের সামনে কী ছবি ভেসে ওঠে? ত্রিকোণ টুপি পরা, বড় বড় চুল, একটু অপরিচ্ছন্ন, এক চোখে কালো ফেট্টি বাঁধা। গল্পের বই বা কোনও সিনেমা জলদস্যুদের পোশাকআশাক এবং লুক অনেকটা এ রকমই দেখিয়ে থাকে। ষোড়শ বা সপ্তদশ শতকের জলদস্যুদের হয়ত এ রকমই চেহারা ছিল। তার পর থেকেই জলদস্যুদের নিয়ে কোনও গল্প বা সিনেমা হলেই সেই ত্রিকোণ টুপি, হাতে বন্দুক, বড় চুল এবং চোখে ফেট্টি বাঁধা একটা অবয়বকে তুলে ধরা হয় বার বারই।
অনেকে নিশ্চয়ই বিখ্যাত হলিউড সিনেমা ‘পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান’ ছবিটি দেখেছেন। সেখানে ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারো (জনি ডেপ)-কেও ঠিক সে ভাবেই দেখানো হয়েছিল। সুতরাং জলদস্যু বললেই এই ধরনের একটা ছবি আমাদের সামনে ভেসে ওঠে।
আদৌ কি জলদস্যুরা চোখে কালো ফেট্টি বাঁধত। না কি এটা শুধুই কল্পনা? ষোড়শ বা সপ্তদশ শতকে জলদস্যুদের ক্যাপ্টেন হয়তো ‘ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারো’র মতোই চোখে ফেট্টি বাঁধত। যদি বাঁধতই তা হলে কেন বাঁধত তারও একটা যুক্তি আছে এবং এর সঙ্গে একটা বিজ্ঞানও জড়িয়ে আছে।
আমরা যখন খুব উজ্জ্বল আলো থেকে হঠাৎ অন্ধকারে প্রবেশ করি তখন চোখ ধাঁধিয়ে যায়। অন্ধকারে থাকা কোনও জিনিস ঠাওর করা যায় না। চোখকে অন্ধকারের সঙ্গে সইয়ে নিতে কিছু ক্ষণ সময় লাগে। কিন্তু অন্ধকার থেকে আলোতে এলে তার ঠিক উল্টোটা হয়। দ্রুত আলোকে মানিয়ে নিতে পারে চোখ।
জাহাজের ডেকের দায়িত্ব যাদের হাতে থাকত, তারাই মূলত এক চোখে ফেট্টি বাঁধত। কারণ, আপৎকালীন পরিস্থিতি সামলানোর জন্য ডেকের ভিতরে যেতে হত। কিন্তু ডেকের ভিতরে অন্ধকার থাকায় কোনও জিনিস দেখতে যাতে অসুবিধা না হয়, চোখ যাতে সহজেই অন্ধকারকে মানিয়ে নিতে পারে, তাই একটা চোখে ফেট্টি বেঁধে রাখত তারা। এবং ওই চোখই অন্ধকারের সঙ্গে চট করে খাপ খাইয়ে নিয়ে জলদস্যুকে ডেকের ভিতরের জিনিস দেখতে সাহায্য করত।