ইজরায়েল অধিকৃত গাজ়া ভূখণ্ড এবং জেরুসালেমের একাংশে সোমবার হঠাৎই হামলা চালিয়েছিল হামাস জঙ্গিরা। উড়ে এসেছিল ঝাঁকে ঝাঁকে রকেট।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০১৪ সালের পর এত বড় যুদ্ধ এই প্রথম দেখছে ইজরায়েল। এই হামলার পাল্টা জবাব দিয়েছে ইজরায়েলও। দুই পক্ষের সঙ্ঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে একাধিক মানুষের।
তবে এত কিছুর মধ্যে একটি বিষয় নিয়েই চর্চা শুরু হয়েছে বিশ্ব জুড়ে। সেটি হল ইজরায়েলের বিশেষ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। যার সাহায্যে অধিকাংশ রকেটের অভিমুখ ঘুরিয়ে দিয়ে কিংবা নিখুঁত নিশানায় আকাশেই সেগুলিকে ধ্বংস করে দিয়েছে তারা।
কী এই বিশেষ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা? এর পোশাকি নাম আয়রন ডোম সিস্টেম। এই মুহূর্তে ইজরায়েলের সবচেয়ে আলোচিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এটি।
রাফাল অ্যাডভান্সড ডিফেন্স সিস্টেমস এবং ইজরায়েল এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজের যৌথ উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছিল এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটি।
২০১১ সালের ২৭ মার্চ ইজরায়েলের বীরসেবার কাছে প্রথম এই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বসানো হয়। তারও এক মাস পরে এই যন্ত্র কাজে লাগে ইজরায়েলের।
ওই বছর ৭ এপ্রিল প্রথম কাজে লাগে এটি। প্যালেস্তাইনি জঙ্গিদের ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্রকে শনাক্ত করে আকাশেই ধ্বংস করে দেয়।
কাজ শুরু করার মাত্র ৩ বছরের মধ্যে জঙ্গিদের ছোড়া অন্তত ১২০০ রকেচ এবং ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করে দেয় এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ওই সমস্ত রকেট ইজরায়েলের জনবহুল অঞ্চল লক্ষ্য করেই ছোড়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কার্যকর না থাকলে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারত সে সময়।
জঙ্গি আক্রমণের হাত থেকে নাগরিকদের নিরন্তর সুরক্ষা দিয়ে যাচ্ছে এই প্রতিরক্ষ ব্যবস্থা। সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এর ৯০ শতাংশ লক্ষ্য নির্ভুল। যার অর্থ এখনও পর্যন্ত ইজরায়েলের বুকে আঘাত হানার জন্য যতগুলি রকেট ছোড়া হয়েছে তার ৯০ শতাংশকে আকাশেই ধ্বংস করে দিয়েছে আয়রন ডোম।
আয়রন ডোম তার আশেপাশে নূন্যতম ৪ কিলোমিটার থেকে সর্বোচ্চ ৭০ কিলোমিটার দূরত্ব থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করতে পারে।
ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী এর ক্ষমতা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করে চলেছে। ৭০ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ সীমা ২৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে চলেছে।
দিনে, রাতে এবং সমস্ত আবহাওয়াতেই একই ভাবে কাজ করে চলে আয়রন ডোম। ইজরায়েলের পরে আমেরিকাও এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। আমেরিকার ‘আয়রন ডোম’-এর নাম স্কাই হান্টার।