ছবি টুইটার থেকে
বদলে গিয়েছে তারা। আগের ‘ভুল’ থেকে শিক্ষা নিয়ে তারা অনেক বেশি সংযত হয়ে উঠেছে। দীর্ঘ দুই দশক ধরে প্রশাসনিক কাজে নিজেদের রপ্ত করে তুলেছে। বিশ্বের দরবারে নিজেদের এমনই মুখ তুলে ধরতে আপাতত বদ্ধপরিকর তালিবান। তারা যে মহিলা ও সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে চিন্তিত, বোঝাতে চাইছে তা-ও। সেই লক্ষ্যেই রবিবার কাবুল দখলের পর তালিবান নেতৃত্ব ঘোষণা করেন, শরিয়তি আইন মানলে স্কুল-কলেজে পড়াশোনা বা কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের বাধা দেওয়া হবে না। তালিবানি শাসনের দ্বিতীয় পর্বে আফগানিস্তানে নিরাপদেই থাকতে পারবেন সংখ্যালঘুরা।
শুধু ঘোষণা করাই নয়, তাদের কাজকর্মের মধ্যে দিয়ে ওই সুপরিকল্পিত কৌশল বারে বারে প্রকাশ্যে আসছে। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল, তালিবানি শাসনকালের প্রথম পর্বে মহিলাদের শিক্ষায় ছাড় দেওয়া হয়েছিল প্রাথমিক স্তর পর্যন্ত। সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল টিভি দেখা বা গান শোনা। এ বার ঠিক তার উল্টো ছবি ধরা পড়ল নেটমাধ্যমে। রবিবার কাবুল দখলের পর একটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের মহিলা সঞ্চালকের সঙ্গে কথোপকথনে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরতে দেখা গিয়েছে এক তালিবান মুখপাত্রকে। যা অবিশ্বাস্য, বলছেন সে দেশের রাজনীতিকরা।
নেটমাধ্যমের বিষয়বস্তুর উপরেও বিশেষ জোর দিতে শুরু করেছে তালিবান। বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা, ‘জঙ্গি’ তকমা মুছে নিজেদের সাধারণ চেহারার ছবি তুলে ধরতে তালিব-যোদ্ধাদের আইসক্রিম খাওয়া বা জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করার ভিডিয়ো সুপরিকল্পিত ভাবেই প্রচার করা হচ্ছে। এখানেই শেষ নয়। তালিবদের মধ্যে দাড়ি কামানো যেখানে নিষিদ্ধ, সেখানে সম্প্রতি নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ছবিতে দেখা গিয়েছে, দাড়ি-কামিয়ে সানগ্লাস পরে নতুন লুকে কাবুলের রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে তালিব যোদ্ধারা।
এত কিছু পরও তালিবান নেতৃত্বের প্রতিশ্রুতিতে আস্থা রাখতে পারছেন না সে দেশের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক থেকে শুরু করে সমাজকর্মীরা। তাদের বক্তব্য, ‘‘ওরা মুখে যাই বলুক না কেন, আবার পুরনো দিনই ফিরে আসতে চলেছে আমাদের দেশে।’’
(এই প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশের সময়ে যে ছবিটি প্রকাশিত হয়েছিল তা সম্প্রতি নয়। প্রকাশিত ছবিটি ছিল ২০০২ সালের। এই অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির জন্য আমরা দুঃখতি।)