Kaushik Federation Conflict

কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ছবির শুটিং কি বন্ধ? মুখ খুলছেন না কেউ-ই! কেন নীরব টলি পাড়া?

দিন তিনেক আগে সমাজমাধ্যমে কৌশিক জানিয়েছিলেন, ফেডারেশনের সঙ্গে তাঁর সমস্যা মিটে গিয়েছে। টলি পাড়ায় গুঞ্জন, বিষয়টি নাকি যথেষ্ট ধোঁয়াশায়!

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:৩৩
Share:

কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়-ফেডারেশন তরজা মেটেনি? গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

গুঞ্জন, শুটিং বন্ধ কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের পুজোর ছবি ‘জংলা’র। ফেডারেশনের সঙ্গে সমস্যার কারণেই নাকি দাঁড়ি পড়ল চলতি বছরের প্রথম কাজে। অথচ, দিন কয়েক আগে তিনি-ই মধ্যরাতে সমাজমাধ্যমে একটি ঝলক বার্তা ভাগ করে নেন। বলেন, “ফেডারেশনের সঙ্গে সমস্যা মিটে গিয়েছে। খুব শিগগিরিই শুটিং শুরু হবে।” কোথায় শুরু হল ছবির কাজ? টলিউডে কানাঘুষো, শুটিং শুরু নিয়ে নাকি ধোঁয়াশা রয়েছে।

Advertisement

কেন এ রকম গুঞ্জন ছড়াল? জবাব খোঁজার আগে এক বার অতীত ফিরে দেখা যাক।

এক সপ্তাহ আগে হঠাৎ সমাজমাধ্যম তোলপাড়, পরিচালক-অভিনেতাকে ‘ব্যান’ করেছে ফেডারেশন। আনন্দবাজার অনলাইন সেই সময় খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, তারও দিন তিনেক আগে থেকে নাকি সমস্যার সূত্রপাত। কৌশিক ডিরেক্টর্স গিল্ড, সংবামাধ্যম কাউকেই কিছু জানাননি। পরিচালকদের সংগঠনের সভাপতি সুব্রত সেন, সংগঠনের পরিচালন কমিটির অন্যতম সদস্য পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে মুখ খুলেছিলেন। সুব্রত বলেছিলেন, “বিষয়টি নিয়ে কৌশিক বা ছবির প্রযোজক কিছুই জানাননি। ফলে, শুধু অনুমানের ভিত্তিতে কী বলি?’’ তার পরেও সে দিন শোনা গিয়েছিল, পরিচালকেরা নাকি রাতে নিজেদের মধ্যে বৈঠক ডেকেছেন। প্রায় একই কথা পরমব্রতরও। তিনি বলেছিলেন, ‘‘কৌশিকদার সঙ্গে কথা হয়েছে। পরিচালকের অনুরোধ, ‘তোরা এখনই কিছু করিস না। ফেডারেশনের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আশা করি, মিটে যাবে। না মিটলে তখন দেখা যাবে।’ কৌশিকদার অনুরোধকে সম্মান জানিয়ে এখনই তাই এই নিয়ে কিছু বলব না।’’

Advertisement

এর ঠিক এক দিন পরে আনন্দবাজার অনলাইন কথা বলেছিল কৌশিকের পুজোর ছবির প্রযোজক প্রদীপ নন্দীর সঙ্গে। তিনিও জানিয়েছিলেন, বিষয়টি কৌশিক সামলাচ্ছেন। ফলে, তিনি মাথা ঘামাচ্ছেন না। এও জানিয়েছিলেন, তাঁর আগের শুটিংগুলিতে ফেডারেশন যথেষ্ট সহযোগিতা করেছিল তাঁকে। এই কথোপকথনের আগে ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস সমস্যার কথা স্বীকার করে আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেছিলেন, ‘‘টেকনিশিয়ান লিস্ট নিয়ে একটু সমস্যা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমাদের আলোচনা চলছে। এর বেশি এখন কিছু বলতে চাই না।”

শুধু ঘটনার শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত কৌশিক এক বারও ফোন ধরেননি। হোয়াটঅ্যাপেও উত্তর দেননি।

এর মাঝে, ২৮ জানুয়ারি মধ্যরাতে সমাজমাধ্যমে একটি বার্তা ঝলক ভাগ করে নেন। সেখানে তিনি বলেন, “কথা বলতে গিয়ে জানলাম আমার আগে বলা কিছু কথা টেকনিশিয়ান ভাইদের খুব দুঃখ দিয়েছে। তাঁদের গলায় অভিমান, ‘দাদা, আমাদের নিয়ে এ ভাবে আপনি বললেন!’ সামনাসামনি বসে তাঁদের বুঝিয়েছি, কী কারণে, কী বিষয়ে, কোন প্রেক্ষিতে বক্তব্য রেখেছিলাম। তাঁরা বুঝতে পেরেছেন। আমাদের মধ্যে যা ভুল বোঝাবুঝি ছিল তা মিটে গিয়েছে। সেই জায়গা থেকেই আমরা আবার আগের মতো কাজ করতে চলেছি।”

প্রসঙ্গত, গত বছর পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়ের পুজোর ছবি নিয়ে প্রথম পরিচালক গিল্ড বনাম ফেডারেশনের দ্বন্দ্ব বাঁধে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে সাময়িক তাতে দাঁড়ি পড়লেও অসন্তোষের চাপা আঁচ উভয় পক্ষের মধ্যেই ছিল। আরজি কর-কাণ্ডের আবহে বাংলা বিনোদন দুনিয়ায় শ্লীলতাহানির প্রসঙ্গ উঠতেই ফেডারেশন সভাপতি বলেছিলেন, “৬০ শতাংশ পরিচালকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে রয়েছে।” এই বক্তব্যকে ঘিরে ফেডারেশন-পরিচালক গিল্ডের নতুন করে তরজা বাঁধে। গিল্ডের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য পরিচালক স্বরূপের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেন। সেই তালিকায় কৌশিক রয়েছেন। রাহুলকে নিয়ে বচসার সময়েও কৌশিক টেকনিশিয়ানদের নিয়ে বক্তব্য রেখেছিলেন। যা সাম্প্রতিক কৌশিক-ফেডারেশন বৈঠকে উঠে এসেছে। পরিচালক নিজেই দিন দু’য়েক আগের বার্তায় জানিয়েছেন, তাঁর কিছু কথায় দুঃখ পেয়েছেন টেকনিশিয়ানরা।

এই প্রেক্ষিতে আরও কানাঘুষো, ফেডারেশন কৌশিককে নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি নাকি প্রযোজক প্রদীপ নন্দীকেও সতর্ক করেছে, অন্য পরিচালককে নিয়ে ছবি করলে সংগঠন তাঁর পাশে থাকবে। সংগঠনেরই কি তবে কৌশিককে নিয়ে আপত্তি! খবর কি আদৌ সত্যি? নাকি প্রযোজক নিজেই কৌশিকের ছবি থেকে সরে এলেন? যদি নিজেই সরে আসেন তা হলে প্রথমে ছবি করতে রাজি হয়েছিলেন কেন? কী ঘটল? তিনি কি ভয় পেলেন?

শুধু প্রযোজক নয়, পরিচালক গিল্ড থেকে ফেডারেশন হয়ে টেকনিশিয়ান— সবাই কৌশিকের ছবি বন্ধ প্রসঙ্গে নীরব! কেন?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement