আমরা মাথা নত করি না: রাষ্ট্রপুঞ্জে আফগানিস্তানের হুঁশিয়ারি পাকিস্তানকে

পাকিস্তানকে এ বার কঠোর শব্দে হুঁশিয়ারি দিল আফগানিস্তান। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে আফগানিস্তানের প্রতিনিধির সতর্কবার্তা— ইতিহাস সাক্ষী রয়েছে, কোনও আগ্রাসনের সামনে আফগানরা কখনও নতিস্বীকার করে না।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৬ ২০:৩০
Share:

পাকিস্তানকে এ বার কঠোর শব্দে হুঁশিয়ারি দিল আফগানিস্তান। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে আফগানিস্তানের প্রতিনিধির সতর্কবার্তা— ইতিহাস সাক্ষী রয়েছে, কোনও আগ্রাসনের সামনে আফগানরা কখনও নতিস্বীকার করে না।

Advertisement

আফিগানিস্তানে নাশকতা চালানোর জন্য পাকিস্তান নিজেদের ভূখণ্ড অবাধে ব্যবহার করতে দিচ্ছে জঙ্গিদের— এই অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। পাকিস্তানের ক্ষমতা দখলে উৎসাহী তেহরিক-ই-তালিবান-এর বিরুদ্ধে অভিযান চালালেও, আফগান তালিবানকে কখনও বিরক্ত করতে চায় না পাক সেনা। পাকিস্তানের মাটিতে ঘাঁটি গেড়ে তারা যাতে আফগানিস্তানের গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করার সব রকম চেষ্টা করতে পারে, তার জন্য পাক সেনা এবং আইএসআই তালিবানকে সাহায্য করে বলেও কাবুলের অভিযোগ। মঙ্গলবার নিরাপত্তা পরিষদের এক আলোচনা সভায় আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে বলতে গিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে আফগানিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি মাহমুদ সইকল তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে। কোনও আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের এমন তীব্র উষ্মার নজির নেই।

নিজের দেশে সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দরকার বলে পাকিস্তান দাবি করছে অনেক দিন ধরেই। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে আর্থিক ও সামরিক সহায়তা নিয়েও পাকিস্তান জঙ্গি দমনে যে টালবাহানা দেখিয়েছে, তার প্রেক্ষিতে আমেরিকা নতুন করে পাকিস্তানকে সাহায্য দিতে নারাজ। এফ-১৬ পাকিস্তান কিনতে পারেনি আমেরিকার কাছ থেকে। সেই প্রসঙ্গ টেনে রাষ্ট্রপুঞ্জে নিযুক্ত আফগান দূত তীব্র কটাক্ষ করেন ইসলামাবাদকে। তিনি বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য এফ-১৬ বা পরমাণু চুক্তির প্রয়োজন হয় না। পাকিস্তানের দরকার ‘সততা এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছা’।

Advertisement

পাকিস্তান আফগানিস্তানের গণতান্ত্রিক সরকারকে অস্থির করার চেষ্টা করছে বলেও প্রকারান্তরে অভিযোগ করেছেন মাহমুদ। তিনি নিরাপত্তা পরিষদের আলোচনা সভায় জানান, তোরখাম এলাকায় পাকিস্তান একটি নতুন সীমান্ত চৌকি তৈরি করেছে, যা আদৌ পাকিস্তানের এলাকায় নয়। আফগান এলাকায় ঢুকে পাকিস্তান ওই সীমান্ত চৌকি বানিয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। পূর্ব আফগানিস্তানের নাঙ্গারহার, খোশ্ত, পাকতিকা, কুনার, নুরিস্তান প্রদেশে পাকিস্তান ক্রমাগত গোলাবর্ষণ করছে বলেও মাহমুদ জানান। তবে তার পর আর কোনও আবেদন-নিবেদনের রাস্তায় হাঁটেননি আফগান প্রতিনিধি। কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কোনও ভুল ধারণার মধ্যে থাকবেন না। আফগানিস্তানের গর্বিত সরকার ও গর্বিত জনগণ, আগ্রাসন, ভীতিপ্রদর্শন, হিংসার সামনে কখনও মাথা নত করেনি, করছে না, করবেও না। আমাদের ইতিহাস তার সাক্ষী।’’

আরও পড়ুন: বেঁচে থাকব তো, ঘুম ভাঙতেই চিন্তা ওঁদের

নিরাপত্তা পরিষদের মতো সর্বোচ্চ মঞ্চে আফগানিস্তানের মতো প্রতিবেশী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এত চড়া সুরে কখনও বিষোদ্গার করেনি, বলছে ওয়াকিবহাল মহল। সীমান্তে পাক আগ্রাসন এবং জঙ্গিদের সাহায্য করা বন্ধ না হলে আফগানিস্তান যে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে পিছপা হবে না, তা স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জে নিযুক্ত আফগান দূত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement