দুর্গাপুজো কালীপুজোর পর বাঙালিদের জীবনে আর এক বড় পার্বণ হল ভাইফোঁটা। যেখানে ভাইদের ফোঁটা দেওয়ার পাশাপাশি দারুণভাবে ভুঁড়িভোজও চলতে থাকে। তাই এ দিন বোনেরা যথেষ্ট চিন্তায় থাকেন যে নিত্যনতুন কী কী পদ সাজিয়ে ভাইদের আপ্যায়ন। তাই বোনেদের চিন্তা দূর করতে রইল কিছু পদের হদিস।
ভাইফোঁটার দিন সকাল থেকে সারাদিন ধরে থাকে খাবারের নানা পদ। তাই জল খাবারে লুচি, আলুর দমের একঘেয়েমি পদের পরিবর্তে রাখতে পারেন ‘ব্রেড পকোড়া’।
ব্রেড পকোড়া তৈরিতে প্রয়োজন স্লাইস পাউরুটি, ডিম, পেঁয়াজ, কাঁচা লঙ্কা, সামান্য লঙ্কা-হলুদ-জিরে গুঁড়ো, চাট মসলা, চালের গুঁড়ো, খাবার সোডা এবং তেল। চালের গুঁড়ো, কাঁচা লঙ্কা, পেঁয়াজ বাটা, লঙ্কা-হলুদ-জিরে গুঁড়ো, চাট মশলা, ডিম এবং পরিমাণ মতো জল মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি তৈরি করে তাতে সামান্য খাবার সোডা মিশিয়ে নিন। এ বার পাত্রে তেল গরম করে পাতলা স্লাইস করে কাটা পাউরুটি সেই মিশ্রণে ডুবিয়ে ভাল করে ভেজে নিন। তারপর স্যালাড এবং সস দিয়ে পরিবেশন করুন দারুণ স্বাদের ‘ব্রেড পকোড়া’।
এখন অনেকেই বেশি তেল মশলা ভাজাভুজির চাইতে বেশি স্বাস্থ্যকর খাবারই পছন্দ করেন। তাই নতুনত্ব পদ হিসেবে জলখাবারে রাখতেই পারেন ভিন্ন স্বাদের ‘ওট্সের কবাব’।
পছন্দমতো সমস্ত সবজি ভাল করে ধুয়ে, নুন দিয়ে হালকা সেদ্ধ করে নিন। একটি পাত্রে সবজির টুকরো, ওট্স, পেঁয়াজ কুচি, ধনেপাতা কুচি, কাঁচালঙ্কা কুচি ও সব গুঁড়ো মশলা একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এর পর তাতে পরিমাণমতো ময়দা ও বিস্কুটের গুঁড়ো মিশিয়ে মেখে নিন। এই মিশ্রণ থেকে ছোট ছোট বলের আকারে বা চ্যাপ্টা করে কবাবের মতো গড়ে নিন। তেল গরম হলে কবাবগুলি দিয়ে দুই পিঠ ভালভাবে ভেজে তুলে নিন। এরপর পাত্রে রেখে মনের মতো সাজিয়ে পরিবেশন করুন ‘ওট্সের কবাব’।
লুচি আলুর তরকারি তো জলখাবারে থাকেই। তাই লুচি বাদ দিয়ে এ বারের ভাইফোঁটার জলখাবারে রাখুন ‘c’। তরকারি লাগবে না, শুধু মুখেই খাওয়া হয়ে যাবে।
প্রথমে কিছুটা আটা নুন জোয়ান দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে সামান্য তেল দিয়ে, তারপর অল্প অল্প করে জল দিয়ে মাখতে হবে। আটা মাখা হয়ে গেলে ওটা ঢেকে ১০ মিনিট রেখে দিতে হবে। এ বার পেঁয়াজের পুরটা তৈরি করতে হবে। একটা বাটির মধ্যে পেঁয়াজ কুচি, ধনেপাতা কুচি, লঙ্কা কুচি নিতে হবে। এ বার ওর মধ্যে গোটা জিরে কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো ধনেগুঁড়ো আর পরিমাণমতো নুন মেশাতে হবে। পেঁয়াজের পুরটাতে আমাদের নুনটা একদম শেষে মেশাতে হবে না হলে পেঁয়াজ থেকে জল ছেড়ে দেবে। এ বার আটার মিশ্রণটা আর একবার ভাল করে মেখে নিয়ে তার থেকে লেচি কেটে নিতে হবে। এ বার লেচিগুলি মাঝখানে গর্ত করে তার মধ্যে পেঁয়াজের পুরটা ভরতে হবে। পুর ভরা হয়ে গেলে ভাল করে আটার মুখটা বন্ধ করে নিতে হবে। এ বার শুকনো আটা ছড়িয়ে ওই লেচিগুলি বেলে নিতে হবে। এ বার তাওয়াতে এপিট ওপিট ভাল করে অল্প নিয়ে তেল দিয়ে ভেজে নিলেই তৈরি ‘পেঁয়াজ পরোটা’।
দক্ষিণ ভারতের অত্যন্ত সুস্বাদু এবং জনপ্রিয় খাবার ইডলি। ভাপানো তুলতুলে এই পদটি শুধু তৈরি করা সহজ নয়, হজমও হয় সহজে। তাই ভাইফোঁটার দিন সুজির ইডলির জলখাবারে রাখতেই পারেন।
১ কাপ সুজি শুকনো খোলায় ভেজে ঠান্ডা করে নিতে হবে। তার পর এতে এ বার দেড় কাপ টক দই, স্বাদমতো নুন এবং ১/২ চা-চামচ বেকিং সোডা দিয়ে ভালভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। ব্যাটারটিকে ৫ মিনিটের জন্য রেখে দিয়ে তার পর একটি ইডলি স্টিমার ব্যবহার করে তৈরি করে নিতে হবে নরম এবং তুলতুলে সুজির ইডলি।
ভাইফোঁটা মানেই মিষ্টি। তাই জলখাবার হোক বা দুপুরের মেনু মিষ্টি তো রাখতেই হবে। তাই ভাইদের জন্যে নিজে হাতেই বানিয়ে নিন মালাই চমচম।
প্রথমে ছানার সঙ্গে ময়দা মিশিয়ে ভাল করে ৫ মিনিট মতো মেখে নিতে হবে। এরপর চিনি ও জল একসঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে ফুটতে দিতে হবে। ফুটে উঠলে ঐ ছানার মন্ড থেকে লেচি কেটে পছন্দ মতো আকারের চমচম গড়ে ঐ ফুটন্ত জলে দিয়ে চাপা দিতে হবে। ২০মিনিট বাদ খুলে দেখতে হবে হয়েছে কি না। না হলে আর একটু ফুটিয়ে নিতে হবে। অপর একটা পাত্রে দুধের সঙ্গে মিল্কমেড মিশিয়ে ঘন মালাই করে নিতে হবে। তারপর এলাচ গুঁড়ো মিশিয়ে নিতে হবে। ঐ দিকে চমচম হয়ে গেলে হালকা হাতে রস চিপে তুলে নিতে হবে এবং উপরে ঐ মালাই দিয়ে দিতে হবে। ব্যাস! তা হলেই তৈরি দারুণ স্বাদের ‘মালাই চমচম’। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।