মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মহাথির মহম্মদ। ছবি: সংগৃহীত।
আয়তনের দিক থেকে তারা একেবারেই ক্ষুদ্র দেশ। ফলে পাম তেলের আমদানি বয়কট করলেও ভারতের বিরুদ্ধে কোনও প্রতিহিংসামূলক পদক্ষেপে সমর্থ নয় মালয়েশিয়া। এমনটাই জানিয়েছেন সে দেশের নবতিপর প্রধানমন্ত্রী মহাথির মহম্মদ।
সোমবার মহাথির মহম্মদ বলেন, ‘‘প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য আমরা অত্যন্ত ক্ষুদ্র।’’ এবং সে কারণেই নরেন্দ্র মোদীর সরকারের বিরুদ্ধে কোনও রকম প্রতিহিংসামূলক বাণিজ্যিক পদক্ষেপ করবে না মালয়েশিয়া। তবে এ বিষয়টি মোকাবিলা করতে তাদের যে অন্য উপায় খুঁজতে হবে, সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার কাছ থেকে প্রতি বছর ৯০ লক্ষ টন পাম তেল আমদানি করে ভারত। গত বছর মালশিয়ার সবচেয়ে বেশি পাম তেল আমদানি করেছিল তারা। ২০১৯-এ মোট ৪৪ লক্ষ টন পাম তেল কিনেছিল ভারত। তবে গত কয়েক মাসে সেই বাণিজ্যিক সম্পর্ক ব্যাহত হয় রাজনৈতিক কারণে। কাশ্মীর ইস্যু এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে বিশ্বমঞ্চে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সম্প্রতি সরব হয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মহাথির মহম্মদ। সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় ৯৪ বছরের মহাথির দাবি করেছিলেন, কাশ্মীর ভূখণ্ড জোর করে দখল করে রেখেছে ভারত। এর পর ডিসেম্বরে তাঁর দাবি ছিল, সিএএ-র জন্যই ভারতের নাগরিকদের মৃত্যু হচ্ছে। এমনকি, সিএএ-কে ‘চূড়ান্ত অন্যায়’ বলে আখ্যা দিয়ে তা নিয়ে তিনি এ-ও দাবি করেছিলেন, ‘‘মুসলিমদের নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করার জন্যই ভারত সরকার এই পদক্ষেপ করেছে।’’ এ দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মালয়েশিয়া মন্তব্য করছে বলে সে সময় সাফ জানিয়েছিল ভারত।
আরও পড়ুন: রাতের লোকালে যাত্রীর বুকে লেখা ফোন নম্বর, খোঁজ করতেই বেরিয়ে এল করুণ কাহিনি
আরও পড়ুন: ৬৩ জন ধনকুবেরের সম্পদ দেশের বাজেটের বেশি! বলছে রিপোর্ট
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর ক্রমাগত এ ধরনের মন্তব্যে দু’দেশের সম্পর্কে প্রভাব পড়তে শুরু করে। অন্য দিকে, মালয়েশিয়ার বিতর্কিত ধর্মগুরু জাকের নায়েকের স্থায়ী নাগরিকত্ব প্রত্যাহারেও রাজি ছিল না মালয়েশিয়া। ফলে সব মিলিয়ে তার রেশ পড়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেও। এর পর গত মাসে সরকারি নীতির সংশোধন করে বিদেশ থেকে পাম তেলের আমদানি ‘অবাধ’ থেকে ‘নিয়ন্ত্রিত’ তালিকায় নিয়ে আসে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রক। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, মালয়েশিয়াকে ‘শিক্ষা দিতেই’ এমন পদক্ষেপ করেছে ভারত।