প্রতীকী ছবি।
ফাইজ়ার জানিয়েছিল, তাদের ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট ৯০% কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। তার পরেই এই ভ্যাকসিন নিয়ে আশায় বুক বাঁধছিল আমেরিকা-সহ গোটা বিশ্ব। তবে ফাইজ়ারের সাফল্য নিয়ে চর্চার মধ্যেই একটি রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, যে সমস্ত স্বেচ্ছাসেবকের উপরে ফাইজ়ারের ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট প্রয়োগ করা হয়েছিল, প্রথম ডোজ়ের পরেই তাঁদের শরীরে প্রবল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। মাথাব্যথা, জ্বর, পেশিতে যন্ত্রণা-সহ একাধিক উপসর্গ দেখা গিয়েছে তাঁদের।
ছ’টি দেশের ৪৩,৫০০ ব্যক্তি ফাইজ়ারের পরীক্ষামূলক প্রয়োগে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁদের অধিকাংশের শরীরেই ভ্যাকসিন দেওয়ার পরে নানাবিধ সমস্যা দেখা গিয়েছে। তবে অনেকেরই সেই সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ৪৪ বছর বয়সি গ্লেন ডেশিল্ড জানিয়েছেন, ফাইজ়ারের ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে প্রবল শারীরিক অস্বস্তি হচ্ছিল তাঁর। তবে দ্রুত সেই
সমস্যা কেটে গিয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এমনই এক স্বেচ্ছাসেবক ক্যারি জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বরে প্রথম বার এবং তার পরে অক্টোবরেও ফের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয় তাঁর শরীরে। ক্যারি জানান, প্রথম বার ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে সারা শরীরে সমস্যা তো হচ্ছিলই। কিন্তু পরের দফায় যন্ত্রণা আরও প্রবল হয়। তবে বায়োএনটেক-এর সিইও উগর শাহিন বেশ আত্মবিশ্বাসী এই ভ্যাকসিন নিয়ে। তিনি জানিয়েছেন, এই ভ্যাকসিন করোনা নির্মূল করে অতিমারি পরিস্থিতির অবসান ঘটাবে।
ইতিমধ্যেই ইজ়রায়েলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ৮০ লক্ষ ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য তারা ফাইজ়ারের সঙ্গে চুক্তি করতে চলেছেন। আশা করা হচ্ছে, আগামী বছর জানুয়ারিতেই ফাইজ়ারের ভ্যাকসিন চলে আসবে। তবে দেশবাসীকে ভ্যাকসিন দিতে আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ও ইজ়রায়েলের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ছাড়পত্র প্রয়োজন।
বিজ্ঞানীদের একাংশ জানিয়েছেন, অবসেসিভ কমপালসিভ ডিজ়অর্ডারের (ওসিডি) ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ওষুধ যদি করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে প্রথম সাত দিনে দেওয়া যায়, সেই ক্ষেত্রে শ্বাসযন্ত্রে অবনতির ঝুঁকি অনেকটাই কমানো যাবে। একটি জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গিয়েছে, ৮০ জন রোগীকে ‘অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ফ্লুভোক্সামিন’ দেওয়া হয়েছিল, যা তাঁদের শ্বাসযন্ত্রজনিত সমস্যা অনেকটাই কমিয়েছে। যার ফলে হাসপাতালে ভর্তিরও প্রয়োজন হয়নি। অন্য দিকে করোনার দাওয়াই হিসেবে শরীরে রোগপ্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন কৃত্রিম ভাবে শ্বাসযন্ত্রে প্রবেশ করিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা-আক্রান্ত রোগীকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ব্রিটেনের ন’টি হাসপাতালে এই বিষয়ে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়। সেই রিপোর্টই উঠে এসেছে দ্য ল্যানসেট রেসপিরেটরি মেডিসিন জার্নালে। তবে এই বিশেষ চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে আরও পরীক্ষানিরীক্ষা প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
নর্থ ক্যারোলাইনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং উইসকনসিন ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা জানিয়েছেন, নভেল করোনাভাইরাসের ডি৬১৪জি স্ট্রেনটি বর্তমানে বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। যার ফলে ভ্যাকসিন কতটা কার্যকরী হবে, তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
এর মধ্যেই তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা মাইক্রোসফ্ট জানিয়েেছ, ভ্যাকসিন সংক্রান্ত তথ্য চুরি করতে সক্রিয় আন্তর্জাতিক হ্যাকারদের দল। উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার হ্যাকারেরা ইতিমধ্যেই বেশ কিছু ওষুধ ও টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ ও গোপন নথি চুরির চেষ্টা করেছে বলে জানা গিয়েছে।