জি-৭-এর সদস্য দেশগুলির সঙ্গে বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। ছবি রয়টার্স।
বৈঠকে বসেছে জি-৭-এর সদস্য দেশগুলি। ভিডিয়ো-লিঙ্ক মারফত তাতে যোগ দিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কিও। আর্জি জানালেন, যে ভাবে হোক, শীত পড়ার আগে এই যুদ্ধ শেষ করতে হবে। সাহায্য চাইলেন বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলির কাছে। শীত কালে বরফে ঢেকে যায় গোটা ইউক্রেন। ঘর গরম রাখা থেকে জল গরম, সবেতে বিদ্যুৎ ভরসা। কিন্তু তাতো নেই-ই, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটাতে এখন সবই ‘বাড়ন্ত’। বহু মানুষের মাথার উপরে ছাদটুকুও নেই। এ অবস্থায় যুদ্ধ চললে, স্রেফ ঠান্ডায় বহু মানুষ মারা যাবেন। ইউক্রেনের আবেদনে সমর্থন জানিয়েছেন জি-৭-এর অন্তভূর্ক্ত দেশগুলি।
তবে শুধু ইউক্রেন-পরিস্থিতি নিয়ে নয়, কিভকে সমর্থন জানানোর জেরে নিজেরা যে অবস্থায় রয়েছে, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বিশ্বের ধনীতম দেশগুলোর। খাদ্য ও জ্বালানি, এই দুই ক্ষেত্রেই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে রয়েছে গোটা বিশ্ব। এ জন্য ভবিষ্যতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উপরে আরও চাপ বাড়ানোর চিন্তাভাবনা চলছে। সে নিয়ে সিদ্ধান্ত অবশ্য কিছু ঘোষণা হয়নি এখনও। তবে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ় টুইট করেন, ভবিষ্যতে আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আছে।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও জানিয়েছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে গোটা বিশ্বের থাকা-খাওয়ার খরচ বেড়ে গিয়েছে। যা হয়তো সবার আগে টের পেতে শুরু করেছে আফ্রিকার দরিদ্র দেশগুলো। ইউরোপের শস্যগোলা ইউক্রেন থেকে আফ্রিকায় খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ বন্ধ হয়ে রয়েছে। বরিসের আশঙ্কা, এই যুদ্ধ-পরবর্তী ‘কম্পন’ টের পাবেন সকলেই। এর আগেও ডাউনিং স্ট্রিট থেকে বরিস বিবৃতি দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘শস্যদানার উপর থেকে রাশিয়ার দাদাগিরি বন্ধ হোক।’’ ইউক্রেনের কৃষি মন্ত্রক জানিয়েছে, জুন মাসের হিসেব দেখলে গত বছরের থেকে এ বছর ৪৪ শতাংশ কম শস্য রফতানি হয়েছে। যা প্রায় ১১ লক্ষ ১০ হাজার টন।
এ অবস্থায় সব দেশই চায় যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ হোক। রাশিয়া বিনা শর্তে ইউক্রেন থেকে সেনা প্রত্যাহার করুক। কিন্তু সকলেই জানেন, পুতিন এক কথায় এ সব শোনার পাত্র নন। ফলে রাশিয়ার উপরে চাপ বাড়াতে আরও নিষেধাজ্ঞা চাপানোর কথা ভাবা হচ্ছে। যেমন এ বারে সোনা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারির কথা স্থির করা হচ্ছে।
আজও রুশ হামলা ঝাঁঝরা করেছে দেশটাকে। ক্রেমেনচুক শহরে একটি শপিং মলে এসে পড়েছে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র। সে সময়ে অন্তত হাজার খানেক ইউক্রেনীয় ওই জায়গায় ছিলেন। হতাহতের খবর জানা যায়নি এখনও। তবে প্রাণহানি যে ঘটেছে, তা নিশ্চিত করেছেন মেয়র ভিটালি মেলেটস্কি। সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ‘‘কত জন জখম, কত মৃত্যু, কল্পনা করতে পারছি না। ওদের (রাশিয়ার) কোনও মানবতা বলে কিছু বেঁচে নেই।’’