রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হানায় ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে বাড়িটির। বাসিন্দাদের সঙ্গে তাই বার করে আনা হচ্ছে পোষ্যকেও। বুধবার মিকোলিভে। ছবি: রয়টার্স।
রাষ্ট্রনেতা নয়, ‘সন্ত্রাসবাদী’। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রসঙ্গে এমনই মন্তব্য করলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। বললেন, ‘‘উনি ক্রমশ সন্ত্রাসবাদীতে পরিণত হচ্ছেন।’’ ইউক্রেনের একাধিক অসামরিক অঞ্চল, জনবহুল এলাকা, বাজার, থিয়েটার, ধর্মস্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। যদিও প্রতিবারই অস্বীকার করেছে তারা। সর্বশেষ হামলা একটি শপিং সেন্টারে। হাজার খানেক মানুষ সে সময়ে উপস্থিত ছিলেন সেখানে। অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। দু’দিন আগের ওই ঘটনা টেনেই পুতিন সম্পর্কে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেন জ়েলেনস্কি।
একটি ভিডিয়ো বার্তায় রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে জ়েলেনস্কি দাবি করেন, ক্রেমলিনের ‘বিচার হোক’। বাল্টিক প্রজাতন্ত্র, পোল্যান্ড, মলডোভা, কাজাখস্তানের নাম করে তিনি বলেন, ইউরোপ ও এশিয়ার দেশগুলির উপরে যাতে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালাতে না পারে রাশিয়া, তার বিচার হওয়া উচিত। জ়েলেনস্কির কথায়, ‘‘রাশিয়া যে হত্যালীলা চালিয়ে যাচ্ছে, সেটা বন্ধ করার জন্য অবিলম্বে কিছু করা উচিত।’’
আর পাঁচটা হামলার মতো ইউক্রেনের শপিং মলে হামলার কথাও অস্বীকার করেছে ক্রেমলিন। সে কথা টেনে জ়েলেনস্কি রাষ্ট্রপুঞ্জকে আবেদন জানিয়েছে, ক্রেমেনচুকে এসে তারা দেখে যাতে পারে কী অবস্থা। প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘সপ্তাহের সাত দিনই সন্ত্রাস হামলা। জঙ্গিদের মতোই কাজ করছে ওরা। প্রতিদিন।’’
রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদের ৬ নম্বর পরিচ্ছদের কথা উল্লেখ করে জ়েলেনস্কি বলেন, ‘‘ওরা যে ভাবে আইন লঙ্ঘন করেছে, তাতে নিরাপত্তা পরিষদ অনুমোদন করলে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভা থেকেও বহিষ্কার করা যেতে পারে রাশিয়াকে।’’ যদিও তেমন কিছু হওয়া অবিশ্বাস্য। কারণ রাশিয়া রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য। ভেটোর ক্ষমতাও রয়েছে তাদের হাতে। তা ছাড়া, রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেসের কিভ সফরের সময়ে সেখানে হামলা চালিয়েছিল রাশিয়া। তাতেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে। অতএব বর্তমান পরিস্থিতিতে আর যা-ই হোক, রাষ্ট্রপুঞ্জ থেকে রাশিয়াকে একেবারে বহিষ্কার করা হবে বলে মনে করছেন না কেউই।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আজ বলেন, ‘‘বিষাক্ত পৌরষত্বের যর্থার্থ উদাহরণ হল রাশিয়া।’’ জনসন এ-ও বলেন, পুতিন যদি মহিলা হতেন, তা হলে এ ভাবে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাতেন না। এ রকম নৃশংস ভাবে হামলা করতেন না। এটা পাগলামো, পৌরষত্ব দেখানো। উনি ইউক্রেনে যা করছেন, সেটা বিষাক্ত পৌরুষত্ব।’’