Afghanistan Crisis

Afghanistan crisis: মা-বাবার সঙ্গে অ্যারিজ়োনায় নিরাপদে সেই আফগান শিশু

এক আমেরিকান ‘মেরিন’-এর হাত ধরে প্রাণ বেঁচেছিল মেয়ের। আট সপ্তাহ বয়সি কন্যার মাঝের নামটি তাই ‘মেরিন’ রেখেছেন হামিদ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২১ ০৭:৪৬
Share:

মা-বাবার কোলে মেরিন। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া।

এক মাস আগের কথা। ছবিটা এখনও স্পষ্ট অনেকের মনেই। কাবুল বিমানবন্দরের পাঁচিলের বাইরে থিকথিকে ভিড়। তালিবানের কবল থেকে পালাতে চান সকলেই। বিমানবন্দরের বাইরে ভিড়ের মধ্যে একটি লোক হাত দু’টো উপরের দিকে তুলে ধরেছেন। তাঁর হাতে কেঁদেই চলেছে একরত্তি শিশু। পাঁচিলের উপরে দাঁড়িয়ে এক আমেরিকান সেনা হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সে দিকে। কাঁটাতার বাঁচিয়ে সাবধানে কোলে তুলে নিচ্ছেন ওই আফগান শিশুটিকে।

Advertisement

নিমেষে ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল এই ছবি। আমেরিকান সেনার সহায়তায় সে দিন আফগানিস্তান ছেড়ে পালাতে পেরেছিল শিশুটির পরিবার। ফের প্রকাশ্যে এল বাবা-মায়ের সঙ্গে শিশুটির ছবি। এখন তারা আমেরিকার অ্যারিজ়োনায়। এরই সঙ্গে জানা গেল সে দিনের কাহিনি।

শিশুটির বাবা হামিদ পেশায় দোভাষী। গোটা অগস্ট মাস ধরেই এই আফগান যুবক কাবুল বিমানবন্দরে ছিলেন। আমেরিকান সেনাবাহিনীর হয়ে দোভাষীর কাজ করতেন তিনি। উদ্ধারকাজে সাহায্য করছিলেন আমেরিকাকে। সে সময়ে বাড়িতেই ছিল তাঁর পরিবার। এরই মাঝে এক দিন কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তাঁর স্ত্রী। মেয়ে হওয়ার সময়েও স্ত্রীর পাশে থাকতে পারেননি হামিদ। আমেরিকান বাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে উদ্ধারকাজ চালিয়ে গিয়েছেন।

Advertisement

কিন্তু পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হতে থাকে। হামিদ জানতে পারেন, আমেরিকাকে যাঁরা সাহায্য করছেন, তাঁদের একে-একে খুন করছে তালিবান। বিপদ টের পেয়ে হামিদ তাঁর স্ত্রীকে বলেন, সদ্যোজাত কন্যাকে নিয়ে বিমানবন্দরে চলে আসতে। তাই করেন স্ত্রী। কিন্তু বিমানবন্দরে ঢোকার উপায় ছিল না। হাজারে হাজারে মানুষের ভিড়ে চাপা পড়ে মৃত্যুর উপক্রম।

হামিদ আমেরিকান সেনাবাহিনীকে জানান বিষয়টা। সন্তানকে বাঁচাতে সাহায্য চান তাঁদের কাছে। এক সেনা বলেন, শিশুটিকে যদি একটু উপরের দিকে তুলে ধরা হয়, তিনি পাঁচিলের এ পাশ থেকে টেনে নেবেন তাকে। কিন্তু তাতে কাঁটাতারে জখম হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। হামিদ বলেন, ‘‘নিশ্চিত মৃত্যুর কাছে জখম হওয়া আর কী!’’ রাজি হয়ে যান তিনি। ও ভাবেই উদ্ধার করা হয় শিশুটিকে।

উদ্ধার করা হচ্ছে শিশুটিকে। ফাইল চিত্র।

গত পাঁচ বছর ধরে ইউএস মেরিন-এর সঙ্গে কাজ করছিলেন হামিদ। একটি আমেরিকান টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘গোয়েন্দা মারফত খবর পাচ্ছিলাম, এক-এক করে ধরে মারছে তালিবান। লোকজন নিরুদ্দেশ হয়ে যাচ্ছেন। আমেরিকান সেনার সঙ্গে আমার যোগ রয়েছে। আমি জানতাম, এর পর আমার পরিবার ওদের নিশানায় আসবে। কোনও সন্দেহ ছিল না এতে, কোনও ‘যদি’ ছিল না এতে। প্রশ্ন শুধু ছিল, কবে আসবে ওরা। তার আগে কিছু করতে হবে আমায়।’’

এক আমেরিকান ‘মেরিন’-এর হাত ধরে প্রাণ বেঁচেছিল মেয়ের। আট সপ্তাহ বয়সি কন্যার মাঝের নামটি তাই ‘মেরিন’ রেখেছেন হামিদ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement