প্রতীকী ছবি।
প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল, প্রতিষেধকের সুরক্ষা বলয়কে সহজেই টেক্কা দিতে সক্ষম করোনাভাইরাসের নয়া ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন। তবে উল্টো ছবি তুলে ধরেছে আমেরিকার ‘সেন্টার্স ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ (সিডিসি)-এর এক সমীক্ষা। বৃহত্তর স্তরে করা ওই সমীক্ষায় উঠে এসেছে, বুস্টার তো বটেই, টিকার সম্পূর্ণ ডোজ় নেওয়া থাকলেও ওমিক্রনের সঙ্গে যুঝতে বাড়তি সুবিধা পাবেন কোভিড আক্রান্তের।
এই সমীক্ষার অন্তর্গত আমেরিকার ১০টি প্রদেশের জরুরি বিভাগ, আপৎকালীন ক্লিনিক এবং হাসপাতাল মিলিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন গবেষকেরা। ২০২১ সালের ২৬ অগস্ট থেকে শুরু হওয়া এই পর্যালোচনা চলেছে এ বছরের ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, ডেল্টার বাড়বাড়ন্তের সময় হাসপাতালে ভর্তির বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার ১৪ থেকে ১৭৯ দিনের ভিতরে টিকার কার্যকারিতা ৯০% থাকে। ১৮০ দিন পেরোলে তা ৮১ শতাংশে নামলেও তৃতীয় ডোজ়ের ১৪ দিন পরে তা ফের ৯৪ শতাংশে পৌঁছতে দেখা গিয়েছে।
পাশাপাশি ওমিক্রন প্রতিষেধকের কাছে কাবু নয় বলে হিড়িক উঠলেও সমীক্ষার তথ্য বলছে অন্য কথা। ওমিক্রনের দাপট বাড়ার পরে দেখা গিয়েছে, এই স্ট্রেনে আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তির বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে টিকার দ্বিতীয় ডোজ় ৮১ শতাংশ কার্যকর থেকে ১৪ থেকে ১৭৯ দিন পর্যন্ত। ১৮০ দিন পেরোলে তা ৫৭ শতাংশে নেমে এলেও তৃতীয় ডোজ় অর্থাৎ বুস্টার নেওয়ার পরে তা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছতে পারে।
আমেরিকার ২৫টি প্রদেশ জুড়ে চালানো সিডিসি-র অন্য এক সমীক্ষায় আবার উঠে এসেছে যে, ডেল্টা সংক্রমণের মোকাবিলায় আগের ভেরিয়েন্টগুলির তুলনায় টিকার কার্যকারিতা ৯৩ % থেকে নেমে ৮০% হলেও মৃত্যুর মুখে পৌঁছে যাওয়া থেকে ৯৪% সুরক্ষা প্রদান করেছে প্রতিষেধক।
অন্য দিকে, ওমিক্রনের স্পাইক প্রোটিন নিয়ে প্রথম আণবিক স্তরের গবেষণা চালিয়ে নজির গড়ল ‘ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলোম্বিয়া’র একটি গবেষক দল। এই দলে রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত গবেষকেরাও। ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের সংক্রমণ রুখতে দ্রুত চিকিৎসা পদ্ধতি খুঁজে বার করার ক্ষেত্রে এই গবেষণা কার্যকর হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ওই গবেষক দলেরই সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক চিকিৎসক শ্রীরাম জানান, মূল সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের তুলনায় ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের বাঁধাইয়ের ক্ষমতা (বাইন্ডিং ফ্যাক্টর) অনেক বেশি। এ ক্ষেত্রে অন্য সব ভেরিয়েন্টের তুলনায় ডেল্টার সঙ্গেই সবচেয়ে বেশি সামঞ্জস্য রয়েছে তার।
‘সায়েন্স’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাটির বিস্তারিত প্রতিবেদন। ওমিক্রনের সংক্রমণ ক্ষমতা এত বেশি কেন, তা নিয়েও বিভিন্ন তথ্য রয়েছে সংশ্লিষ্ট এই প্রতিবেদনটিতে। তবে ওমিক্রন সংক্রমণ রুখতে টিকাকরণের উপরেই সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছেন গবেষকেরা।