প্রতীকী ছবি।
করোনা নিয়ে আমেরিকা ও চিনের মধ্যে টানাপড়েন তীব্র হচ্ছে। এই আবহে এ বার নতুন পর্বের সূচনা হল। আমেরিকার টেক্সাসের হিউস্টন শহরের চিনা দূতাবাসটি শুক্রবারের মধ্যে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য চিনকে নির্দেশ দিয়েছে আমেরিকা। ট্রাম্প সরকারের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করেছে বেজিং। ওয়াশিংটনকে পাল্টা হুঁশিয়ারিও দিয়েছে তারা।
এ দিন মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর বিবৃতিতে জানায়, চিনকে হিউস্টনের দূতাবাস বন্ধ করতে বলা হয়েছে। কেন ওই দূতাবাস বন্ধ করতে বলা হল? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের মুখপাত্র মর্গ্যান ওর্তাগ্যাস ব্যাখ্যা দিয়েছেন, আমেরিকার বৌদ্ধিক সম্পত্তি (ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি) এবং গোপন তথ্য সুরক্ষিত রাখতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তিনি এই বার্তাও দিয়েছেন, চিন আমেরিকার সার্বভৌমত্ব ভঙ্গ করেছে। তা কখনই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ভিয়েনা চুক্তিতেই স্থির হয়েছিল, আমন্ত্রক দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মাথা গলানো যাবে না। ওয়াশিংটন ডিসির দূতাবাস ছাড়াও, আমেরিকায় আরও পাঁচটি দূতাবাস রয়েছে চিনের। তার মধ্যে হিউস্টনের দূতাবাসটিই কেন বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হল সেই কারণ এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়।
আমেরিকার এই পদক্ষেপের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে চিন। তাদের মতে, এই পদক্ষেপ অভূতপূর্ব ভাবে উত্তেজনা বাড়িয়ে দেবে। বিষয়টি আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী বলেও জানিয়েছে চিন। বিষয়টি আরও এক বার ভেবে দেখার জন্য আমেরিকাকে অনুরোধ করেছেন চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন। একই সঙ্গে চিন যে এর কড়া জবাব দেবে তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: রাতারাতি সিদ্ধান্ত বদল, বিজেপি ছেড়ে দিলেন মেহতাব
মঙ্গলবার হিউস্টনের ওই দূতাবাসের পিছন দিকে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দূতাবাসের পিছনের অংশে থাকা ডাস্টবিনে আগুন জ্বালানো হয়েছিল। সেই সময়ের দৃশ্য ক্যামেরাবন্দিও করেন অনেকে। তাতে দেখা গিয়েছে, অনেকে ডাস্টবিনের ওই আগুনে কাগজ এনে ফেলছেন। পরে তাঁরা জল দিয়ে ওই আগুন নিভিয়ে দেন। তাঁদের পরিচয় অবশ্য এখনও জানা যায়নি। ঘটনাস্থলে যায় পুলিশও। কিন্তু দূতাবাসে তাঁদের ঢুকতে অনুমতি দেওয়া হয়নি বলেই টুইটারে জানিয়েছে হিউস্টন পুলিশ। এ দিন আমেরিকার পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিনের মুখে অবশ্য হিউস্টনের দূতাবাসের ওই ঘটনার কথা এক বারের জন্যও শোনা যায়নি।
আরও পড়ুন: লাদাখে তীক্ষ্ণ নজরদারি, বিশ্বের সবচেয়ে হালকা ও দ্রুতগতির ড্রোন পেল ভারতীয় সেনা
দূতাবাসে যখন আগুন জ্বলছিল, সেই সময়ের ছবি।
প্রথমে দুই চিনা হ্যাকারের বিরুদ্ধে মার্কিন সংস্থার ওয়েবসাইটে হানা দেওয়ার অভিযোগ। দ্বিতীয় ধাপে হিউস্টনের চিনা দূতাবাস বন্ধ করার নির্দেশ। কূটনৈতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, এই ঘটনা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ এবং এই দুটি ঘটনাই এক সূত্রে গাঁথা। অনেকেই মনে করছেন, করোনা পরিস্থিতি এবং মার্কিন মুলুকে নির্বাচন, এই দুটি ইস্যুকে সামনে রেখে সচেতন ভাবেই চিন-তাস খেলতে চাইছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের পদক্ষেপের পর সাধারণত, ইটের জবাব পাটকেলে দেওয়ার পালা শুরু হয়। এ সময় চিন কী পদক্ষেপ করে সে দিকেই তাকিয়ে আন্তর্জাতিক মহল। পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠার আশঙ্কাও করছেন অনেক।