ফাইল চিত্র।
পরিবেশ রক্ষা সংক্রান্ত বিষয়গুলি থেকে অধিকাংশ সময়েই মুখ ফিরিয়ে ছিলেন প্রাক্তন। তবে আমেরিকার নয়া প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রতিশ্রুতি মতোই বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ফের দেশকে শামিল করলেন। গত সপ্তাহেই তিনি ‘২০১৫ প্যারিস জলবায়ু চুক্তি’র প্রসঙ্গ তুলে জানান, পরিবেশ রক্ষার লড়াইয়ে ফিরছে আমেরিকা।
উষ্ণায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে মোকাবিলা নিয়ে বৈঠক, ‘ক্লাইমেট অ্যাডাপ্টেশন সামিট’-এ সোমবার অংশগ্রহণ করার কথা আমেরিকার বিশেষ পরিবেশ দূত জন কেরির। ওই শীর্ষ বৈঠকে যোগ দেবেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ, জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের মতো রাষ্ট্রনেতারাও। কমপক্ষে ২০৩০ সাল পর্যন্ত জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় উপযোগী উপায় সন্ধান নিয়ে আলোচনা হবে বৈঠকটিতে। এ বছর ভার্চুয়াল মাধ্যমে এই বৈঠকের আয়োজন করছে নেদারল্যান্ডস।
তবে শীর্ষ বৈঠকটি শুরুর আগেই নেতৃবর্গের উপর চাপ বাড়িয়েছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। এর মধ্যে রয়েছেন পাঁচ নোবেল পুরস্কার প্রাপকও। তাঁদেরই এক জনের কথায়, ‘‘যে হারে উষ্ণায়ন বাড়ছে তাতে ইতিমধ্যেই খরা, তাপপ্রবাহ, তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের মতো একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ বারবার দেখা দিচ্ছে। এখনই পদক্ষেপ করা না-হলে জলসঙ্কট, চাষের ক্ষতির পাশাপাশি দারিদ্র এবং অভিবাসী সঙ্কট হু হু করে বাড়বে তো বটেই, বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণনাশের আশঙ্কাও বৃদ্ধি পাবে।’’ একই মত গ্লোবাল শীর্ষ বৈঠকটির আয়োজক সংগঠন, দ্য গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপ্টেশন (জিসিএ)-এরও। এই প্রসঙ্গে জিসিএ-র প্রধান বান কি-মুন-এর কটাক্ষ, ‘‘পরিবেশ বদলের ক্ষেত্রে কোনও ভ্যাকসিন নেই। পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপের বিষয়টি এখন আর বিলাসিতা নয়, চরম প্রয়োজনীয়তা।’’
জিসিএ প্রধানের চিন্তা যে অমূলক নয় তার প্রমাণ দিচ্ছে এক সাম্প্রতিক গবেষণা। সোমবার ‘দ্য ক্রাইপোস্ফিয়ার’ নামে এক পত্রিকায় প্রকাশিত সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, গত তিন দশকের তুলনায় বর্তমানে পৃথিবীর বরফ স্তর গলে যাওয়ার গতি বছরে ৫৭% বেড়েছে! যা হু হু করে বাড়িয়েছে উষ্ণায়নের মাত্রাও।
এই পরিস্থিতেতে দাঁড়িয়ে ওই শীর্ষ বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয়, সেই দিকে নজর গোটা বিশ্বের। এ দিকে ব্রিটেন ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, মিশর, বাংলাদেশ, মালাউই, সেন্ট লুশিয়া এবং নেদারল্যান্ডসের মতো দেশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এক অভিনব উদ্যোগে শামিল হওয়ার পরিকল্পনা চালাচ্ছে তারা। যার অন্তর্গত, ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আগাম সতর্কতা জারি সংক্রান্ত প্রযুক্তি চালুর পাশাপাশি বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলা এবং খরা-প্রতিরোধী শস্য ফলন নিয়ে কাজ করবে তারা।