এডিনবরায় ন্যাশনাল গ্যালারি অব স্কটল্যান্ডের সামনে প্রতিবাদ-সমাবেশ ভারতীয় চিকিৎসকেরা। —নিজস্ব চিত্র।
কী আশ্চর্য মিল! কলকাতা থেকে কোচবিহার, বাংলার যে কোনও শহর থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে আমেরিকার আটলান্টা শহরও প্রতিবাদে মিলেমিশে একাকার। আরজি কর হাসপাতালে ছাত্রী-খুন আটলান্টার প্রবাসী বাঙালিদেরও ভাবিয়েছে। ১৪ অগস্ট মধ্যরাতে যখন প্রতিবাদে শামিল গোটা বাংলা, তখন সূদূর আটলান্টাও মুখর হবে পথে-প্রতিবাদে। সেখানেও পোস্টারে উজ্জ্বল ‘মেয়েরা রাত দখল করো-দ্য নাইট ইস আওয়ারস্’, ‘জাস্টিস ফর আরজি কর’।’ শোনা যাচ্ছে, লন্ডনেও বাঙালিরা পথে নামছে একই দাবিতে।
আটলান্টার প্রতিবাদ মিছিল শুরু হতে হতে ভারতে পরদিন বেলা গড়াবে। এ দিন সন্ধ্যার পর সেই প্রতিবাদ মিছিল। সময়ের হিসাবে এখানে যখন মিছিল শেষ হবে তার কয়েক ঘণ্টা পর প্রতিবাদের সরব হবে আটলান্টার বাঙালিরা। কাজের সূত্রে ওঁদের কেউ দীর্ঘদিন সেখানে রয়েছেন, কেউ কয়েক বছর আগে গিয়েছেন। ওই কর্মসূচির উদ্যোক্তাদের অন্যতম বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য, সুমন হালদারদের মতো কয়েকজন। বিশ্বনাথ জানালেন, ওখানে বাঙালিদের একটি ক্লাব রয়েছে। স্থানীয় মন্দির রয়েছে। ফি বছর দুর্গাপুজো হয়। তবে এ দিন কোনও ক্লাবের ব্যানারে নয়, তাঁরা সকলে মিলে কর্মসূচি নিয়েছেন। ওদেশের স্থানীয়রাও প্রতিবাদে শামিল হবেন। বিশ্বনাথ ফোনে বললেন, ‘‘আরজি কর হাসপাতালে যা ঘটেছে, মেনে নিতে পারছি না। দেশে, পশ্চিমবঙ্গে ভাল কিছু হলে যেমন গর্ব হয়, তেমনই এ ধরনের ঘটনায় লজ্জা লাগে। কর্মক্ষেত্রে একটা মেয়ের এই পরিণতি, ভাবলেই শিউরে উঠছি।’’ তিনিই জানালেন, তাঁর বাঙালি এক বন্ধু রয়েছেন লন্ডনে। সেখানেও প্রতিবাদ সমাবেশ হবে।
আটলান্টা থেকে রিচা সরকার নন্দী বলেন, ‘‘এ ধরনের ঘটনা শুনেই মনটা মোচড় দিয়ে ওঠে। এর যথাযথ বিচার দরকার।’’ একই সুরে শুভশ্রী নন্দী বলেন, ‘‘যা ঘটেছে তা নিন্দা করার ভাষা নেই। দোষীদের শাস্তি চাই। আমরা এখানেও পথে নামছি। আমারা চাই না পশ্চিমবঙ্গে
আমাদের রাজ্যে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হোক।’’
সকাল থেকেই ফোন চালাচালি শুরু হয়েছে এ দিনের কর্মসূচি আয়োজনে। সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টার পরে জমায়েত। মহিলারা, পুরুষ সকলেই থাকবেন। জাতীয় সঙ্গীত হবে, কিছু মানুষ বক্তব্য রাখবেন। তারপর এগোবে মিছিল। উঠবে স্লোগান।
লন্ডনের ট্রিনিটি চার্চে স্থানীয় সময় সন্ধে সাতটায় প্রতিবাদ-জমায়েত হয়েছে। জমায়েত হয়েছে লন্ডন থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে লিডসেও। স্কটল্যান্ডের রাজধানী এডিনবরায় ন্যাশনাল গ্যালারি অব স্কটল্যান্ডের সামনে জড়ো হয়েছিলেন জনা সত্তর ভারতীয়। তাঁদের মধ্যে অনেক চিকিৎসকও ছিলেন।
আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে একটি ভিডিয়ো বার্তা সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন প্যারিসের বাঙালিরাও।