বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের।—ছবি রয়টার্স।
দু’দশকে আমেরিকার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে নাটকীয় বদল এসেছে, দাবি বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের। ওয়াশিংটনে একটি আলোচনা সভায় তাঁর দাবি, দু’দেশের সম্পর্ক যতটা কাছাকাছি এসেছে, তাকে কী ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, সেটাই চ্যালেঞ্জ।
ভারত-মার্কিন সম্পর্কের পরিবর্তনের কথা বলতে গিয়ে হিউস্টনে সাম্প্রতিক ‘হাউডি মোদী’ অনুষ্ঠানটির কথা তুলে ধরেন জয়শঙ্কর। তাঁর ব্যাখ্যা, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থিতিতে ওই অনুষ্ঠানে ৫০ হাজার ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন উপস্থিত ছিলেন। দশ বছর আগে যা ভাবাও যেত না। এমনকি, ৫ বছর আগে নিউ ইয়র্কের ম্যাডিসন স্কোয়ারে মোদীর অনুষ্ঠান করাটাও অনেক ঝুঁকির ছিল বলে মনে করেন বিদেশমন্ত্রী। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমেরিকায় বসবাসকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের জন্যই দু’দেশের সম্পর্কে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।’’ মার্কিন মুলুকে ভারতীয়ের সংখ্যাও বিরাট ভাবে বেড়েছে, সেই তথ্যও দিয়েছেন জয়শঙ্কর।
ভারতের বিদেশমন্ত্রীর মতে, দুই দেশের সরকারি নীতিতেও এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। পারস্পরিক সংঘাতের ইতিহাসকে পাশ কাটিয়ে ভারত ও আমেরিকার সম্পর্ক এখন সহজ ভাবে এগোচ্ছে। তাঁর মন্তব্য, ‘‘এক সময়ে পেন্টাগনে ভারতীয়দের প্রবেশ করাটা ছিল অস্বাভাবিক ব্যাপার। আজ প্রতি ঘণ্টায় অন্তত এক জন ভারতীয়কে দেখতে না পেলে ওঁরা যেন অভাব বোধ করেন।’’ জয়শঙ্করের মতে, ১৫ বছর আগে ভারতের প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের ভান্ডারে আমেরিকার উপস্থিতি ছিল না। আজ ভারতীয় সেনার কাছে মার্কিন হেলিকপ্টার, বিমান থেকে শুরু করে জাহাজ— সবই রয়েছে।
প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আমেরিকার সঙ্গে সমঝোতার কথা বললেও জয়শঙ্কর অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, ওয়াশিংটনের আপত্তি উড়িয়ে রাশিয়া থেকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা এস-৪০০ কেনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে ভারত। সে কথা ওয়াশিংটনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে কোন সরঞ্জাম কোথা থেকে কিনব, তা ঠিক করার স্বাধীনতা রয়েছে আমাদের। আমেরিকার থেকেও কিছু কিনলে তা নিয়ে কেউ কথা বলবেন, সেটাও চাই না।’’ বিদেশমন্ত্রীর আশা, বাণিজ্য নিয়ে ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্কের টানাপড়েন কেটে যাবে। দু’পক্ষই সেই লক্ষ্যে কাজ করছে বলে তিনি জানিয়েছেন।