প্রতীকী ছবি।
ভারত-সহ বিভিন্ন দেশ থেকে আরও বেশি সংখ্যায় উচ্চশিক্ষিত ও দক্ষ কর্মী এবং পেশাদারদের আমেরিকায় যাওয়া ও থাকার সুযোগসুবিধা দেওয়ার কথা ভাবছেন আমেরিকার ভাবী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আমেরিকায় গিয়ে কাজের জন্য এইচওয়ান-বি এবং জরুরি অন্যান্য ভিসার সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। ফিবছরে কাজের ভিসার জন্য বিভিন্ন দেশ-পিছু যে উর্ধ্বসীমা রয়েছে তা-ও তুলে দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
সদ্যসমাপ্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বাইডেনের প্রচারে যে নীতিপত্র (‘পলিসি ডকুমেন্ট’) ঘোষণা করা হয়, তাতেই এ কথা জানানো হয়েছে।
এর ফলে বহু ভারতীয় যাঁরা কাজের জন্য আমেরিকায় গিয়ে থাকতে চান বা রয়েছেন পরিবার-সহ তাঁরা উপকৃত হবেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জমানায় এঁরা রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছিলেন। কারণ, এই সব ভিসা নিয়েই আমেরিকায় দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করে চলেছেন ভারত-সহ বিভিন্ন দেশের বহু অধ্যাপক, তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী ও উচ্চশিক্ষিত পেশাদাররা।
আরও পড়ুন- বিভাজন সরিয়ে আমেরিকাকে এক সুতোয় বাঁধার অঙ্গীকার বাইডেনের
আরও পড়ুন- ভারতীয় মায়ের কৃষ্ণাঙ্গ মেয়ে হোয়াইট ‘হাউসে’, ইতিহাসে ঢুকলেন কমলা হ্যারিস
অথচ চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত এইচওয়ান-বি এবং অন্যান্য কাজের ভিসা দেওয়া পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, গত জুনে। তার পর গত মাসে এইচওয়ান-বি ভিসার ক্ষেত্রেও তিনি কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছিলেন।
ট্রাম্পের যুক্তি ছিল, এইচওয়ান-বি এবং এই ধরনের কাজের ভিসাগুলির মাধ্যমে ভারত, চিন-সহ বিভিন্ন দেশ থেকে উচ্চশিক্ষিত, দক্ষ কর্মীরা সে দেশে ঢোকায় আমেরিকার নাগরিকদের কাজ পেতে অসুবিধা হচ্ছে। তাই বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ফিবছরে দেশ-পিছু দেওয়া কাজের ভিসার সংখ্যা কাটছাঁট করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। যাঁরা ওই ভিসা নিয়ে আমেরিকায় কাজ করছেন, মেয়াদ বাড়ানোর ক্ষেত্রে তাঁদের উপর কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছিলেন। এমনকী, এইচ-ওয়ান বি এবং অন্যান্য কাজের ভিসা নিয়ে যাঁরা আমেরিকায় আছেন তাঁদের স্বামী বা স্ত্রীর সেই ভিসা না থাকলে তাঁদের পক্ষে আমেরিকায় বসবাস করাটা খুবই মুশকিল হয়ে উঠেছিল। ওই সব ভিসা নিয়ে আমেরিকায় কাজ করতে গিয়ে বহু ভারতীয়কে পরিবার-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে হয়েছিল বা হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল।
ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের বক্তব্য, ভাবী প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস চাইছেন বিদায়ী প্রশাসনের এই সব জনবিরোধী পদক্ষেপগুলি থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সরে আসতে।
বাইডেনের প্রচারদলের সূত্রে খবর, বিদায়ী জমানার ভিসা ও অভিবাসন নীতি থেকে কী ভাবে সরে আসা হবে তা নিয়ে এখন ভাবনাচিন্তা চলছে। একেবারেই সেই সব নীতি বদলে ফেলা হবে নাকি তা করা হবে ধাপে ধাপে সেই সব নিয়ে আলাপ, আলোচনা চলছে।
বাইডেনের প্রচারদলের নীতিপত্রে বলা হয়েছে, ‘‘ক্ষমতাগ্রহণের পরেই ভাবী প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রাথমিক ভাবে এগবেন এইচওয়ান-বি এবং অন্যান্য কাজের ভিসাগুলির স্থায়িত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করতে। তার জন্য কংগ্রেসের সঙ্গে তিনি আলোচনা করবেন। তার পর তিনি ধাপে ধাপে এগবেন বিভিন্ন দেশের উচ্চশিক্ষিত দক্ষ কর্মী ও পেশাদারদের দেওয়া কাজের ভিসাগুলির সংখ্যা বাড়াতে, এ ব্যাপারে ফিবছর দেশ-পিছু যে উর্ধ্বসীমা রাখা হয়েছে তা তুলে দেওয়ারও।’’