বিমানবন্দরের বাইরে কাতারে কাতারে মানুষ ভিড় জমিয়েছেন। ছবি: রয়টার্স।
তালিবান আতঙ্কের মধ্যে আরও একটা নতুন আতঙ্ক মাথাচারা দিতে শুরু করেছে কাবুলে। আমেরিকার প্রতিরক্ষার মন্ত্রকের এক আধিকারিকের দাবি, কাবুল বিমানবন্দরে বড়সড় হামলা চালাতে পারে ইসলামিক স্টেট-খোরাসান (আইসিস-কে) জঙ্গিগোষ্ঠী।
তালিবান কাবুল দখল করার পর বাগরাম এবং পুল-এ-চাখরি জেল থেকে বন্দিদের ছেড়ে দেয়। সন্ত্রাসদমন শাখার এক আফগান আধিকারিকের দাবি, ওই দুই জেলে তালিবান, আল-কায়দা, আইএস এবং সাধারণ অপরাধী-সহ প্রায় ৫ হাজার কয়েদি ছিল। আমেরিকার গোয়েন্দারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, যে হেতু আইএস-এর সঙ্গে তালিবানের মতবিরোধ রয়েছে, তাই এই সুযোগে আইএস-এর সদস্যরা হামলা চালাতে পারে। তা ছাড়া আফগানিস্তানে আইএস-এর প্রচুর স্লিপার সেল রয়েছে। হামলার আশঙ্কাকে যা এক ধাক্কায় বাড়িয়েছে।
কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে এবং বিমানবন্দরের গেটের সামনে কয়েক হাজার মানুষ জমায়েত হয়েছেন। আমেরিকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দাবি, এই ভিড়েই হামলা চালাতে পারে আইএস। একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে তালিবানের এক মুখপাত্রও। তাঁর কথায়, “সাধারণ মানুষ, সাংবাদমাধ্যমের উপর হামলা চালিয়ে নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার চেষ্টা চলছে বলে বেশ কয়েকটি রিপোর্ট হাতে পেয়েছি আমরা।” বিমানবন্দর এবং তার কাছাকাছি এলাকায় তাই ভিড় না জমানোর আহ্বান জানিয়েছেন ওই তালিব মুখপাত্র।
এই পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করেই আমেরিকানদের বিমানবন্দরের বাইরে অপেক্ষা না করার পরামর্শ দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। এক বিবৃতি জারি করে কাবুলে আমেরিকার দূতাবাসের তরফে বলা হয়েছে, “নাগরিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে বিমানবন্দরের বাইরে থেকে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। যত ক্ষণ না সরকার থেকে কোনও নির্দেশ আসে, তত ক্ষণ ওই এলাকা এড়িয়ে যাওয়াই ভাল।”
আইসিস-কে সিরিয়া এবং ইরাকের ইসলামিক স্টেট-এর শাখা। আমেরিকার গোয়েন্দাদের দাবি, এই জঙ্গিগোষ্ঠীর বেশ কয়েক জন শীর্ষ নেতা আফগানিস্তানে যথেষ্ট সক্রিয় ছিল। তালিবান কাবুল দখল করার আগে গত এপ্রিলেও সংখ্যালঘু এলাকায় হামলা চালায় এই জঙ্গিগোষ্ঠী। ২০১৬-তেও কাবুলে আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছিল আইসিস-কে। এই জঙ্গিগোষ্ঠী তালিবানকে তাদের শত্রু বলে মনে করে। তালিবানও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, তাদের উপর দায় চাপাতে অন্য কোনও গোষ্ঠী এই পরিস্থিতির সুযোগে হামলা চালাতে পারে।