উদ্ধারকাজ নিয়ে বড় প্রশ্নের মুখে আমেরিকা। ফাইল চিত্র।
১৫ অগস্ট কাবুলের পতনের পর থেকে অগস্টের শেষ দিন। প্রায় এক লক্ষ ২৪ হাজার মানুষকে কাবুল বিমানবন্দর থেকে উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছে আমেরিকা। উদ্ধার কাজ শেষ হওয়ার পর প্রকাশ্যে এসেছে আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য। তা হল, যত মানুষকে আমেরিকার উদ্ধারকারী বিমান সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে, তাদের বেশির ভাগেরই নাম-ধাম জানা নেই বাইডেন প্রশাসনের!
উদ্ধারকাজ চলাকালীন আমেরিকা বারবার জানিয়েছিল, বিগত দু’দশকে তাঁদের সঙ্গে কাজ করেছেন এমন আফগানদের নিরাপদে সরানোই তাঁদের মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু উদ্ধারকাজ শেষ হওয়ার পর জানা যাচ্ছে, বেশির ভাগ আফগান নাগরিক সম্বন্ধে পর্যাপ্ত তথ্য নেই ওয়াশিংটনের হাতে।
এমনটা হল কেন? কাবুলে সেই সময় উদ্ধারকাজ দেখভাল করা আমেরিকার আধিকারিকদের একটি অংশ জানাচ্ছেন, উদ্ধার করা মানুষের মধ্যে আমেরিকার সঙ্গে কাজ করা আফগানিস্তানবাসী আছেন ঠিকই কিন্তু তাঁরা সংখ্যায় কম। বেশির ভাগই কাবুল বিমানবন্দরের হু়ড়োহুড়ির মধ্যে বিমানে উঠতে মরিয়া মানুষজন। তাঁদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে কি না, সেই প্রশ্নও মাথাচাড়া দিচ্ছে।
সূত্রের খবর, বিমানবন্দরে হামলা হতে পারে এমন ধারণা আমেরিকার ছিল। সে জন্যই আমেরিকার দীর্ঘতম যুদ্ধে যে সব স্থানীয় মানুষের সহায়তা নেওয়া হয়েছিল, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী এবং সাংবাদিকদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দেশ থেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়। এমনকি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পর্যন্ত উদ্ধারকাজে এই অগ্রাধিকারের কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, কাবুল বিমানবন্দরের হুড়োহুড়ির মধ্যে যাঁরা আমেরিকার উদ্ধারকারী বিমানে উঠে পড়লেন, তাঁরা আমেরিকার অগ্রাধিকারের তালিকায় আদৌ ছিলেন কি না তা নিয়ে সংশয় আছে।
যে সমস্ত আফগান নাগরিক ২০ বছরের যুদ্ধে আমেরিকার সঙ্গে কাজ করেছেন, তাঁদের জন্য স্পেশাল ইমিগ্র্যান্ট ভিসা-র (এসআইভি) ব্যবস্থা করেছিল ওয়াশিংটন। কিন্তু বিমানবন্দরে হামলার আশঙ্কার প্রেক্ষিতে তাঁদের সবাইকে বাড়িতেই অপেক্ষা করতে বলা হয়েছিল। বলা হয়, পরিস্থিতি বুঝে তাঁদের বিমানবন্দরে আনা হবে। কিন্তু ৩১ অগস্ট পেরিয়ে গেলেও তাঁদের কেউই আমেরিকার ফোন পাননি।
দোহার বৈঠকে তালিবানের দেওয়া প্রতিশ্রুতির উপর নির্ভর করছে আমেরিকা। কিন্তু উত্তর নেই তালিবান প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করলে কী হবে। আমেরিকার বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলছেন, ‘‘তালিবান প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করলে আর্থিক বিধিনিষেধ আরও প্রবল হবে।’’ কিন্তু তাতে আফগানিস্তানে আটকে পড়া ‘বন্ধু’দের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা যাবে কি? এটাই এখন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।