আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ফাইল ছবি।
উত্তরপূর্ব সিরিয়ার হাসাকের ঘড়িতে তখন বেলা ১টা বেজে ৩৮ মিনিট। আচমকা ড্রোন হামলায় কেঁপে উঠল আমেরিকান বাহিনীর এক সেনাঘাঁটি। প্রাণ হারালেন এক আমেরিকান কনট্র্যাক্টর। বৃহস্পতিবার দুপুরের ওই ঘটনায় গুরুতর জখম হন সে দেশের আরও এক কনট্র্যাক্টর। আহত হয়েছেন পাঁচ আমেরিকান সেনাও। চুপ করে থাকেনি আমেরিকাও। রাতের মধ্যেই এল ‘জবাব’। সিরিয়ায় ব্রিটেনের এক পর্যবেক্ষক দল সূত্রে খবর, আমেরিকান যুদ্ধবিমানের হামলায় নিহত হয়েছেন হামলাকারী গোষ্ঠী, ইরান মদতপুষ্ট আইআরজিসি-র মোট ১১ জন যোদ্ধা।
জো বাইডেন প্রশাসন সূত্রের খবর, আমেরিকার সেনাঘাঁটিতে হামলার সঙ্গে সঙ্গে তৎপরতা বাড়ায় তারা। ড্রোনটির পরীক্ষা চালিয়ে আমেরিকান গোয়েন্দারা বুঝতে পারেন, এই হামলার পিছনে রয়েছে ‘ইরানস ইসলামিক রেভোলিউশন গার্ড কোর’ বা আইআরজিসি। এর পর আর সময় নষ্ট করেনি আমেরিকান প্রতিরক্ষা দফতর। এ দিন রাতেই আইআরজিসি-র ঘাঁটি লক্ষ্য করে আকাশপথে একাধিক হামলা চালায় তাদের বিমান বাহিনী। যার পর পরই পেন্টাগনের তরফে এক বিবৃতি দিয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশেই এই ‘জবাব’ দেওয়া হল।
সিরিয়ায় আমেরিকান বাহিনীর উপর ড্রোন হামলার ঘটনা নতুন নয়। তবে তাতে প্রাণহানির ঘটনা বেশ বিরল বলেই জানাচ্ছেন যুদ্ধ বিশেষজ্ঞেরা। সেই দিক থেকে এই আঘাত আমেরিকার কাছে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। যে কারণে তড়িঘড়ি পাল্টা হামলা চালানোর পরিকল্পনা নেয় তারা।
এই পাল্টা হামলা প্রসঙ্গে আমেরিকান প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন বলেন, ‘‘আজ এবং অতীতে সিরিয়ায় আমেরিকান যৌথ বাহিনীকে লক্ষ্য করে আইআরজিসি যে হামলা চালিয়েছে, আজকের এই বিমান হানা ছিল সে সবগুলির সরাসরি জবাব।’’ প্রেসিডেন্ট বাইডেনের নির্দেশেই তিনি বাহিনীকে এই হামলা চালানোর অনুমতি দিয়েছেন জানিয়ে অস্টিন আরও বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে আমাদের নাগরিকদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমরা যে কোনও পর্যায় পৌঁছে যেতে পারি...। এই হামলার ক্ষেত্রে আমাদের মূল নিশানা ছিল আইআরজিসি স্বীকৃত গোষ্ঠীগুলির ঘাঁটি।’’
ইরান প্রশাসনের তরফে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনার কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে ব্রিটিশ পর্যবেক্ষক সংস্থা ‘সিরিয়ান অবজ়ার্ভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’ জানায়, মূলত পূর্ব সিরিয়ার দেইর আল-জ়র প্রদেশের আল-বুকামাল এবং আল-মায়াদিনে আইআরজিসি ঘাঁটি লক্ষ্য করেই এই বিমান হানা চালিয়েছে আমেরিকা।