আফগানিস্তান থেকে সেনা সরেছে গোয়েন্দা ব্যর্থতায়, দাবি করা হল আমেরিকার একটি রিপোর্টে। ফাইল চিত্র।
আফগানিস্তান থেকে সেনা অপসারণের সম্ভাব্য কারণ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই পর্যালোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল আমেরিকা। অবশেষে রিপোর্ট আকারে প্রকাশিত হল সেই গোপন রিপোর্ট। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে গোয়েন্দা ব্যর্থতার কারণেই আফগান মুলুক থেকে পিছু হটতে হয়েছে আমেরিকাকে। জো বাইডেন প্রশাসনের তরফে প্রকাশিত রিপোর্টে এই পশ্চাদপসারণের জন্য পরোক্ষে দায়ী করা হয়েছে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও।
শুক্রবার হোয়াইট হাউসে আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান, বেশ কিছু ক্ষেত্রে ভুল পদক্ষেপ করার কারণেই আফগানিস্তান থেকে পিছু হটতে হয়েছে আমেরিকার সেনাকে। ভুল পদক্ষেপের মধ্যে ট্রাম্প আমলের ভ্রান্ত নীতির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ওই ভুল নীতির কারণেই আফগানিস্তানে আমেরিকার শক্তি এবং নিয়ন্ত্রণ খর্ব হয়েছিল। এর পাশাপাশি গোয়েন্দারা যে তালিবদের ক্ষমতা বুঝে উঠতে পারেননি, তা-ও স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, আমেরিকা ভেবেছিল গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত আফগান সরকারের পিছনে যথেষ্ট জনসমর্থন আছে। তাই পরিকাঠামো নির্মাণে যথেষ্ট বিনিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু পরে আমেরিকা বুঝতে পারে, তারা পশ্চিমি বিশ্ব নিয়ন্ত্রিত সরকার সম্পর্কে ভুল ধারণা পোষণ করে। কারও নাম না করলেও এই বক্তব্যের মাধ্যমে আফগানিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আশরফ গনি এবং তাঁর সরকারেরই সমালোচনা করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
কিরবি এই প্রসঙ্গে বলেন, “২০ বছর ধরে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পর যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে দেওয়া সহজ কাজ নয়। কিন্তু আমাদের সেই কাজটাই করতে হয়েছে।” এই রিপোর্টটি প্রকাশিত হবে আমেরিকার সংসদের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজ়েন্টেটিভসে, এখন যেখানে বিরোধী রিপাবলিকানরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাই এই রিপোর্ট নিয়ে আমেরিকার সংসদে এক বার ঝড় উঠতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। কারণ আফগানিস্তান থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেনকেই দায়ী করেন রিপাবলিকানরা। ২০ বছর পরে ২০২১ সালের ১৫ অগস্ট আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখল করে তালিবান। আফগান মুলুক ছাড়ে আমেরিকার সেনা।