যদি ফাঁসি হয় কূলভূষণের, কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক পরিণতিটার সঙ্গে যুঝতে পারবে তো ইসলামাবাদ? প্রশ্ন পাকিস্তানের অন্দরেই। —ফাইল চিত্র।
চমকে গিয়েছে পাক সংবাদমাধ্যমও। গতকাল পাকিস্তানের সেনা আদালত ভারতীয় নৌসেনার প্রাক্তন কর্মী কুলভূষণ যাদবকে প্রাণদণ্ড দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এই নির্দেশকে ‘বিরল’ এবং ‘বেনজির’ আখ্যা দিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমই। ভারত স্বাভাবিক ভাবেই তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে পাক আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে। কুলভূষণকে ফাঁসি দেওয়া হলে ফল ভাল হবে না, ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এমন হুঁশিয়ারিও রয়েছে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমের আশঙ্কাও কিন্তু ঠিক তেমনই। কুলভূষণ যাদবকে ‘গুপ্তচর’ আখ্যা দিয়েও পাক সংবাদমাধ্যম বলছে, শেষ পর্যন্ত যদি তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয়, তা হলে পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্যও প্রস্তুত থাকতে হবে ইসলামাবাদকে।
পাকিস্তানের ইংরেজি সংবাদপত্র ‘দ্য নেশন’-এর হেডলাইনে কুলভূষণ যাদবকে ‘গুপ্তচর’ই বলা হয়েছে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ হাসান আসকারির মতামত তুলে ধরা হয়েছে সেই প্রতিবেদনে। আসকারি সেখানে সতর্কবার্তা দিয়েছেন, যাদবকে ফাঁসি দেওয়ার সিদ্ধান্ত দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দেবে। হাসান আসকারির মত, এই ফাঁসি কার্যকর করার ফল যা হবে, তা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি দরকার। তাঁর কথায়, ‘‘এর রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক পরিণতির সঙ্গে পাকিস্তান যুঝতে পারবে কি না, সেটাই আমাদের দেখতে হবে।’’
পরস্পরের দিকে ‘মিত্রতা’র যে হাত বাড়িয়েছিলেন দুই প্রধানমন্ত্রী, সে হাত আদৌ মিলবে তো? কুলভূষণ যাদবের ফাঁসির রায় হওয়ার পর এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে উপমহাদেশে। —ফাইল চিত্র।
আর এক পাক সংবাদপত্র ‘এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’ এই প্রাণদণ্ডের নির্দেশকে ‘বেনজির’ আখ্যা দিয়েছে। অর্থাৎ এমন নির্দেশ পাকিস্তানের সেনা আদালত আগে কখনও দেয়নি। দুই ‘বিবদমান’ প্রতিবেশীর মধ্যে তিক্ততা এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে গেল বলে এক্সপ্রেস ট্রিবিউনে লেখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফাঁসি দেওয়ার ফল কী হবে, ভেবে নিক পাকিস্তান: চরম হুঁশিয়ারি সুষমা স্বরাজের
পাকিস্তানের প্রভাবশালী মিডিয়া গোষ্ঠী ‘ডন’-ও মনে করছে, কুলভূষণ যাদবের ফাঁসির রায় বিস্ময়কর। ওই সংবাদপত্রেও এই রায়কে, ‘বিরল পদক্ষেপ’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা যখন এমনিতেই তুঙ্গে, তেমনই একটা সময়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল— ডন-এর প্রতিবেদনে এমনই লেখা হয়েছে।
খ্যাতনামা পাক সাংবাদিক তথা বিশ্লেষক হামিদ মিরও তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘ওই গুপ্তচরের বিরুদ্ধে কী প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে, পাকিস্তানের সর্বাগ্রে তা প্রকাশ্যে আনা উচিত, দেশের মানুষকে এবং আন্তর্জাতিক মহলকে তা জানানো উচিত।’’