প্রতীকী ছবি।
মুখে তারা বলে যাচ্ছে, ভয়ের কিছু নেই, সব কিছু আগের মতোই থাকবে। যদিও আফগানিস্তানে নারী-শিক্ষা যে অন্ধকারের পথে, সে কথা বলাই বাহুল্য। ১২ বছরের ঊর্ধ্বে মেয়েদের শিক্ষা নিষিদ্ধ করে দিয়েছে তালিবান। তার আগেও শুধুমাত্র ধর্মীয় শিক্ষায় অনুমতি রয়েছে। এ অবস্থায় গত বিশ বছরে আফগান শিক্ষা ব্যবস্থার যে আধুনিকীকরণ হয়েছিল, তার ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে প্রবল আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ভয় দানা বাধছে, তালিবানের হাতে নষ্ট হতে পারে বিভিন্ন গবেষণাপত্র, নথি, পুঁথি, এমনকি পড়ুয়াদের স্নাতকের শংসাপত্রও। এমন যাবতীয় তথ্য-সম্পদ সংরক্ষণে এগিয়ে এল ‘ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফর্নিয়া, ডেভিস’ (ইউসিডেভিস)।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যে হেতু আফগানিস্তান এখন তালিবানের দখলে, শিক্ষাক্ষেত্রে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা প্রবল। সে ক্ষেত্রে গবেষণাপত্র, পুরনো নথিপত্র নষ্ট করে দিতে পারে তারা। পড়ুয়াদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট ও এই সংক্রান্ত অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসও নষ্ট হতে পারে হামলায়। সিরিয়া, আফগানিস্তানে এ জিনিস পূর্বে ঘটেছে।
সেই অভিজ্ঞতা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, আফগান স্কুল-কলেজ পড়ুয়ারা যদি চান, তা হলে তাঁরা ‘ইউসিডেভিস ব্যাকপ্যাক’ পোর্টালে তাঁদের যাবতীয় তথ্য জমা রাখতে পারেন। শুধু পড়ুয়ারাই নয়, শিক্ষাবিদ, মানবাধিকার কর্মী ও অন্য পেশায় যুক্ত থাকা আফগানদেরও এটি ব্যবহারের জন্য স্বাগত জানিয়েছে ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়।
এ বিষয়ে ‘ইউসিডেভিস’-এর ওয়েবসাইটে কিছু তথ্য জানানো হয়েছে: ১) সব তথ্য ইন্টারনেটে সুরক্ষিত থাকবে। ‘ব্যাকপ্যাক’ ব্যবহারকারীরা যে কোনও সময় তাঁদের নিজস্ব নথি ব্যবহার করতে পারবেন। ২) পৃথিবীর যে কোনও প্রান্ত থেকে ব্যবহার করা যাবে। ৩) যিনি ব্যবহারকারী, তিনিই শুধু নিজের নথি দেখতে পাবেন, অন্য কেউ নয়। কোনও সরকারি, বেসরকারি সংস্থাও নয়। ৪) ব্যাকপ্যাক ব্যবহারকারী চাইলে যে কোনও সময় তাঁর নিজস্ব নথি পোর্টাল থেকে মুছে ফেলতে পারেন। ৫) এই পোর্টাল থেকে কোনও তথ্য বিক্রি করা হয় না। ৬) ব্যাকপ্যাক স্কলারশিপ প্রোগ্রাম নয়, কিন্তু স্কলারশিপ পেতে সাহায্য করে। ৭) গোপনীয়তা আইন মেনে চলে পোর্টাল।
এই পোর্টাল ব্যবহারের জন্য ইংরেজি ও দারি (আফগান ভাষা), দুই ভাষাই রয়েছে বলে জানিয়েছে ইউসিডেভিস। এবং সম্পূর্ণ ব্যবস্থাটি আফগানদের জন্য বিনামূল্যে।