ফাইল চিত্র।
বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে যথেষ্ট পরিমাণে বল প্রয়োগ করছে মায়ানমারের পুলিশ, এবং তাঁদের কাছে সেই প্রমাণ রয়েছে বলে জানালের রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিনিধি। মায়ানমারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার সুপারিশও জানিয়েছেন তিনি।
মায়ানমারে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংক্রান্ত তদন্তকারী অফিসার অ্যানড্রু টমাস আজ জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের উচিত অবিলম্বে মায়ানমারের উপরে আর্থিক, সামরিক এবং সফর সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করা। তাঁর কথায়, ‘‘বিভিন্ন রিপোর্ট ও ছবি থেকে আমরা এই প্রমাণ পেয়েছি যে গত কয়েক দিনে বিক্ষোভ ঠেকাতে সেনার নির্দেশে আগ্নেয়াস্ত্রের প্রয়োগ করেছে পুলিশ। যা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। এই পরিস্থিতিতে আমার প্রস্তাব, অবিলম্বে মায়ানমারের সেনা কর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হোক।’’
প্রায় একই বার্তা দিয়েছেন ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রী ডমিনিক রাব। তিনিও জানিয়েছেন, সেনা অভ্যুত্থানের খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই তাঁদের সরকার মায়ানমারে সুষ্ঠু গণতন্ত্র ফেরানোর দাবি জানিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে অবশ্য এক ধাপ এগিয়ে আমেরিকার জো বাইডেন প্রশাসন। ইতিমধ্যেই ১০০ কোটি ডলারের সামরিক অনুদানে
কাটছাঁট করেছে আমেরিকা। দ্রুত মায়ানমারে গণতান্ত্রিক সরকার
না ফিরলে সেনা কর্তাদের বিরুদ্ধে আরও বড় নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।
রাষ্ট্রপুঞ্জে মায়ানমারের দূত মিন্ট হু জানিয়েছেন, আসিয়ানে অন্তর্ভুক্ত দেশগুলি এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের সঙ্গে তিনি সমন্বয় বজায় রেখে চলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘দেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরে আমরা কেউই বাধা হতে চাই না।’’
তবে সেনার বলপ্রয়োগ সত্ত্বেও গণতন্ত্রকামীদের বিক্ষোভ ও অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত দেশে। চিকিৎসক, শিক্ষক-সহ সরকারি কর্মীদের অবিলম্বে কাজে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে সেনা। কিন্তু তাঁরা নিজেদের কর্মক্ষেত্রে না ফিরে এনএলডি-নেত্রী আউং সাং সু চি-সহ বাকি বন্দি নেতাদের মুক্তির দাবিতে পথে নামছেন প্রতিদিন। ইয়াঙ্গন, ম্যান্ডালে-তে রোজই বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘাত বাধছে পুলিশের। ইউনেস্কো ঘোষিত হেরিটেজ শহর বাগান-এ আজ হাজার মানুষ প্রতিবাদে পথে নেমেছেন। বিক্ষোভের ছবি আর ভিডিয়োতেই এখন ভরে সোশ্যাল মিডিয়া।
সেনা অবশ্য আজই ২৩ হাজার বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। কিন্তু তাতে মানুষের ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি। সেনাশাসনের বিরুদ্ধে দেশের সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশই আন্দোলন জারি রাখতে চান।