Laxmi Bhander Scheme

৩৫০ লক্ষ্মীর ভাঁড়ার শূন্য!

মে মাসের পর থেকে তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়েনি। ওই উপভোক্তাদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় নথিপত্র নিয়ে ফের নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে জমা দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

তমলুক শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ০৬:০৮
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

ছ’মাস ধরে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা পাচ্ছেন না তমলুক শহরের অন্তত ৩৫০ মহিলা।

Advertisement

তমলুক শহরের প্রায় ১৬ হাজার মহিলা রাজ্য সরকারের ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে নথিভুক্ত। কিন্তু গত প্রায় ছয় মাস ধরে তাঁদের মধ্যে ৩৫০ বেশি মহিলা সেই ভাতার টাকা না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। তাঁরা তমলুক পুরসভা ও সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশ জানান। অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে পুরসভা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে।

তমলুক পুরসভায় লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক আধিকারিক জানান, ওই মহিলাদের ভাতার টাকার ব্যাপারে খোঁজ নিতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, উপভোক্তা তালিকা থেকে তাঁদের নাম বাতিল করা হয়েছে। তাই মে মাসের পর থেকে তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়েনি। ওই উপভোক্তাদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় নথিপত্র নিয়ে ফের নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে জমা দেওয়া হয়েছে।তাঁদের আবেদন গৃহীত হয়েছে বলে ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর মাস থেকে ফের তাঁরা ভাতার টাকা পাবেন।

Advertisement

কেন ওই মহিলাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল, সে ব্যাপারে কেন তাঁদের জানানো হয়নি, তার কোনও জবাব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দিতে পারেননি। তাঁরা যে ছ’ মাসের টাকা পাননি সেটা তাঁদের একত্রে ডিসেম্বর মাসে দেওয়া হবে কিনা, তারও কোনও উত্তর দিতে পারেননি আধিকারিকেরা। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি এর মধ্যে ‘অন্য দুর্নীতি’ বলে অভিযোগ তুলেছে।

মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে মহিলাদের ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। গত এপ্রিল মাস থেকে ওই প্রকল্পে ভাতার টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছিল। তফসিলি জাতি ও উপজাতি মহিলাদের মাসিক ১২০০ টাকা, বাকিদের ১০০০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয় তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে। তমলুক পুরসভা এলাকায় প্রায় ১৬ হাজার মহিলা লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে নথিভুক্ত রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৩৫০ জন মহিলা গত জুন মাস থেকে ওই প্রকল্পের টাকা পাননি বলে অভিযোগ। টাকা না পাওয়া ওই মহিলাদের অধিকাংশেরই অ্যাকাউন্ট রয়েছে ‘তমলুক-ঘাটাল সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে’।

দীর্ঘদিন লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা না পেয়ে ওই উপভোক্তা মহিলারা প্রথমে পুরসভা অফিস ও ব্যাঙ্কে গিয়ে খোঁজ খবর নেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তাঁরা কোনও সদুত্তর পাননি। ভাতা না পাওয়া মহিলাদের অভিযোগ, ‘‘গত এপ্রিল মাস থেকে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে মাসিক ভাতার টাকা বৃদ্ধি করার কথা জানানো হয়েছিল। সেই অনুযায়ী এপ্রিল মাসের টাকা মে মাসের প্রথম দিনেই ‘ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে’ জমা হয়েছিল। কিন্তু তার পর আর ভাতার টাকা পাওয়া যায়নি। ভাতার টাকা না পেয়ে কাউন্সিলর, পুরপ্রধান ও ব্যাঙ্কে জানিয়েছিলাম। তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন বলেছিলেন। কিন্তু টাকা পাওয়া যায়নি। কী কারণে আমরা টাকা পাচ্ছি না, কেউ বলছেন না।’’

লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে শহরের প্রায় সাড়ে তিনশো মহিলার গত ছয় মাস ধরে ভাতার টাকা না পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন পুরসভা কর্তৃপক্ষ। তমলুকের পুরপ্রধান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায় বলেন, ‘‘প্রকল্পে শহরের ৩৫০ জন মহিলা কয়েক মাস ধরে টাকা পাচ্ছে না বলে জানতে পেরেছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ তমলুক-ঘাটাল সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের ভাইস-চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন তমলুক পুরসভার কাউন্সিলর তথা শহর তৃণমূলের সভাপতি চঞ্চল খাঁড়া। চঞ্চল বলেন, ‘‘লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের বেশ কিছু উপভোক্তা গত কয়েক মাস ভাতার টাকা পাচ্ছেন না বলে জানতে পেরেছি। খোঁজ নিয়ে দেখেছি, ব্যাঙ্কের তরফে কোনও ত্রুটি নেই। ওই মহিলারা যাতে দ্রুত ভাতার টাকা পান, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement