দেশের বাইরে বেরনোর লক্ষ্যে পোলান্ড সীমান্তে এক শিশু। ছবি: রয়টার্স
দেশ ছাড়তে চায় না কেউই। তবু যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি মানুষকে ভিটেমাটি, দেশ, স্বজনদের ছেড়ে যেতে বাধ্য করে। ইউক্রেনের ছবিটা আজ তেমনই। কাতারে কাতারে ঘরহারা মানুষ পায়ে হেঁটে, গাড়িতে চেপে এগিয়ে চলেছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তের দিকে। রোমানিয়া, হাঙ্গেরি, মলডোভা, পোলান্ড, স্লোভাকিয়ার মতো দেশগুলি তাঁদের গন্তব্য। আশ্রয়ের খোঁজে।
নিরাপত্তার খোঁজে।
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণার আজ তৃতীয় দিন। সংঘর্ষের প্রথম ৪৮ ঘণ্টাতেই অন্তত ৫০ হাজার মানুষ দেশ ছেড়েছেন বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে ৫০ লক্ষ মানুষ ইউক্রেন ছাড়তে পারেন বলে অনুমান রাষ্ট্রপুঞ্জের শরণার্থী সংক্রান্ত শাখার। ফলে ইউরোপে নতুন করে শরণার্থী সঙ্কট তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের পূর্ব, উত্তর আর দক্ষিণ দিক দিয়ে ত্রিফলা আক্রমণ শানিয়েছে রাশিয়া। মাত্র এক দিনের মধ্যে রাজধানী কিভ, গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হসতোমেল দখল করেছে রুশ সেনা। ১ লক্ষ মানুষ ভিটে হারা হয়েছেন। আতঙ্কিত ইউক্রেনবাসী নিরাপত্তার খোঁজে পাড়ি দিচ্ছেন দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত ঘেঁষা দেশগুলির দিকে। উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে সেই ছবি। রোমানিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় দেখা গিয়েছে সার সার গাড়ি আর ট্রাকের লম্বা লাইন। পায়ে হেঁটেও এগিয়ে চলেছেন অনেকে। পশ্চিমের প্রতিবেশী দেশগুলি জানাচ্ছে, শরণার্থীদের
অধিকাংশই শিশু এবং মহিলা। ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সি পুরুষদের দেশ ছাড়তে নিষেধ করেছে ইউক্রেন সরকার। সেনার পাশে দাঁড়িয়ে দেশ রক্ষায় সাহায্য করতে পারবেন তাঁরা। ফলে শিশুদের বাঁচাতে পরিবারের পুরুষদের ছেড়ে আসতে বাধ্য হচ্ছেন মহিলারা। চোখের জলে স্বামী, বাবা, প্রেমিককে বিদায়ের সেই সমস্ত ছবি আর ভিডিয়োয়ে উপচে পড়ছে সোশ্যাল মিডিয়া।
পোলান্ডে ইতিমধ্যে ২৯ হাজার শরণার্থী পৌঁছে গিয়েছে। গতকাল ইউক্রেনের ছোট্ট গ্রাম ছেড়ে হাঙ্গেরিতে পৌঁছেছেন ৪৪ বছরের ইভা। সঙ্গে দুই শিশু সন্তান। তিনি বলছিলেন, ‘‘ভয় হচ্ছে, রাশিয়া আমাদের পুরো দেশটা না দখল করে বসে।’’