স্বাধীনতা দিবসের পদযাত্রায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে ব্রিটেনের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। বুধবার কিভে। ছবি রয়টার্স।
সেই চেনা জলপাইরঙা টি শার্ট, ট্রাউজ়ার আর মুখ ভর্তি কাঁচা-পাকা দাড়ি। দেশের ৩১তম স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে পরিচিত পোশাকে আর আত্মবিশ্বাসী মেজাজেই ধরা দিলেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি।
২৪ অগস্ট, দেশের ৩১তম স্বাধীনতা দিবসে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘর্ষের ছ’মাস পূর্ণ হল। তবে ইউক্রেনের মাটিতে আগামী দিনে রুশ হামলার তীব্রতা আরও বাড়তে পারে বলে অশনিসঙ্কেত মিলেছিল আগেই। সেই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে আজ দেশ জুড়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। কোথাও জনসমাগমের অনুমতি দেওয়া হয়নি। শুধু সরকারি ও সামরিক অনুষ্ঠান হয়েছে। যদিও আজও মধ্য ইউক্রেনের একটি রেলস্টেশনকে নিশানা করে রাশিয়ার ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রে কয়েক জন হতাহত হয়েছেন বলে জ়েলেনস্কি জানিয়েছেন।
এ দিন কিভের স্বাধীনতা স্কোয়ার থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন জ়েলেনস্কি। প্রেক্ষাপটে জ্বলজ্বল করছিল ভেঙেচুরে যাওয়া রুশ ট্যাঙ্ক ও সমরাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ। সংবাদ মাধ্যমে সম্প্রচারিত সেই ভাষণে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘২৪ ফেব্রুয়ারি (যুদ্ধ শুরুর দিন) আমাদের বলা হয়েছিল, কোনও সুযোগ বাকি নেই। আর আজ, ২৪ অগস্ট আমরা স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। এই ছ’মাসে আমরা ইতিহাস বদলে দিয়েছি। বিশ্বকে বদলে দিয়েছি। সর্বোপরি, নিজেরাও বদলে গিয়েছি। এই যুদ্ধ শেষের অর্থ কী? আগে বলতাম শান্তি। এখন বলব, জয়লাভ।’’ এ দিনের ভাষণে রাশিয়া অধিকৃত ডনবাস অঞ্চল এবং ক্রাইমিয়া পুনরুদ্ধারের শপথ নেন জ়েলেনস্কি। বলেন, ‘‘একমাত্র যুদ্ধে জয়লাভের পরেই আমরা হাত তুলব। মুঠি শিথিল করব। কারণ আমরা দেশবাসী আর মাতৃভূমিকে ভালবাসি। তাদের নিয়ে ব্যবসা করি না।’’
ইউক্রেনবাসীকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছে আমেরিকা, জার্মানি, ফ্রান্স, ফিনল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া, ব্রিটেন-সহ বহু দেশ। পাশে থাকার বার্তা দিয়ে এ দিন কিভে জ়েলেনস্কির অনুষ্ঠানে যোগ দেন বিদায়ী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। জ়েলেনস্কির সঙ্গে নিজের ছবি টুইট করে বরিস লিখেছেন, ‘ইউক্রেনে যা ঘটছে তা আমাদের সকলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সেই জন্যই আজ কিভে এসেছি। আমার বিশ্বাস, ইউক্রেন এই যুদ্ধে জিতবেই।’
সাহায্য অটুট রাখার বার্তা দিয়েছেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি টুইট করে বলেছেন, ‘স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষার জন্য ইউক্রেনের মানুষের সাহস ও উদ্যমী লড়াই পৃথিবীকে অনুপ্রাণিত করেছে। আমরা তাঁদের পাশে আছি।’ পাশাপাশি, ইউক্রেনকে আরও তিনশো কোটি ডলার সামরিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছে আমেরিকা।