(বাঁ দিক থেকে) নরেন্দ্র মোদী, ভ্লাদিমির পুতিন এবং ভলোদিমির জেলেনস্কি। —ফাইল ছবি
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাশিয়া সফরে ‘অত্যন্ত হতাশ’ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার এই প্রথম রাশিয়া সফরে গিয়েছেন মোদী। তাঁর এই দু’দিনের সফর নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে আন্তর্জাতিক বিশ্বে।
গত মাসেই ইটালিতে জি৭ গোষ্ঠীর বৈঠকে মোদী-জেলেনস্কি মুখোমুখি হয়েছিলেন। সেখানে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে কথাও হয়। প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে মোদী সেই বিরল ব্যক্তি, যাঁর সঙ্গে পুতিন এবং জেলেনস্কি দু’জনেরই ফোনে এবং মুখোমুখি কথা হয়েছে। এই আবহে মোদীর রাশিয়া সফর নিয়ে জেলেনস্কি বলেন, “এটা একটা অত্যন্ত হতাশার বিষয়। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের নেতা বিশ্বের এক জন খুনি এবং অপরাধী নেতার সঙ্গে আলিঙ্গন করছেন। শান্তিপ্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে এটা একটা বড় ধাক্কা।”
সোমবারই দু’দিনের সফরে রাশিয়া পৌঁছন মোদী। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে দেখেই আলিঙ্গন করতে দেখা যায় তাঁকে। এমনকি মোদীকে পাশে বসিয়ে গল্ফ কার্ট চালান রুশ রাষ্ট্রপ্রধান। অন্য দিকে, সোমবারই ইউক্রেনের রাজধানী কিভে একটি শিশু হাসপাতালে ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালায় রুশ সেনা। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
গত দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ চলছে রাশিয়ার। সেই যুদ্ধে আমেরিকা-সহ প্রথম বিশ্বের বহু দেশই দাঁড়িয়েছে ইউক্রেনের পাশে। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরেই আমেরিকা-সহ নেটো গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি রাশিয়াকে কূটনৈতিক দুনিয়ায় একঘরে করার চেষ্টা করেছে। মস্কোর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলে তাদের উপর একাধিক অর্থনৈতিক অবরোধও জারি করেছে আমেরিকা। যদিও আমেরিকার বারণ সত্ত্বেও রাশিয়া থেকে অশোধিত তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে নয়াদিল্লি। একই সঙ্গে, গত কয়েক মাসে একাধিক বার পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে মোদী যুদ্ধ বন্ধ করে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন। আমেরিকার সঙ্গে নিবিড় কৌশলগত সম্পর্ক রাখলেও পুরনো মিত্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে যায়, সরাসরি এমন কোনও সিদ্ধান্তে সায় দেয়নি ভারত।
এর আগে মোদী উজবেকিস্তানের এসসিও গোষ্ঠীর বৈঠকে পুতিনকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন যে, এটা যুদ্ধের সময় নয়। পরে জেলেনস্কির সঙ্গেও ফোন কথোপকথনে যুদ্ধ থামিয়ে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেন তিনি। সূত্রের খবর, রাশিয়া সফরে গিয়েও মোদী নৈশাহারের টেবিলে পুতিনকে বুঝিয়েছেন, যুদ্ধক্ষেত্রে কোনও সমস্যার সমাধান হয় না।