ইউক্রেন সীমান্তে শুরু হয়ে গিয়েথে রুশ সেনার আক্রমণ। ছবি: রয়টার্স।
বিরূপ প্রতিক্রিয়ার আঁচ মিলেছিল আগেই। বৃহস্পতিবার ভোরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ইউক্রেনে সেনা অভিযানের ঘোষণার পরে তা আরও তীব্র হয়েছে। রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধের পরিস্থিতির জেরে ধস নেমেছে বিশ্ব জুড়ে শেয়ার বাজারে। ভারতেও সেনসেক্স এবং নিফটি সূচকের পতন ঘটেছে।
আমেরিকা এবং পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলি রাশিয়ার উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারির ঘোষণা করায় পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা। পূর্ব এবং পশ্চিম ইউরোপের অনেক দেশেরই রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাস এবং তেলের উপর নির্ভরতা রয়েছে। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে তা বন্ধ হয়ে গেলে কোভিড-ধ্বস্ত বিশ্ব অর্থনীতিতে ফের বড় আঘাত আসতে পারে।
ইউরোপীয় মাপকাঠি অনুযায়ী অর্থনীতিতে পিছিয়ে থাকলেও আয়তনের দিক থেকে ইউক্রেন সেই মহাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্র। জনসংখ্যায় অষ্টম। ফলে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ওই প্রজাতন্ত্র ঘিরে তৈরি হওয়া অস্থিরতার প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বিশ্বজুড়ে। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধের আবহ দীর্ঘস্থায়ী হলে অনিবার্য ভাবে তার নেতিবাচরক প্রভাব পড়বে ভারতীয় অর্থনীতিতে। জ্বালানির সরবরাহে আঘাত হলে হবে মূল্যবৃদ্ধি।
শুধু অর্থনীতি নয়, ভারতের নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও ইউক্রেন সঙ্কট বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। ন্যাটো জোট ইউক্রেনের সহায়তার এগিয়ে না এলে বিশ্বজুড়ে আমেরিকার প্রভাব শিথিল হয়ে পড়তে পারে বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা এবং কূটনীতির বিশেষজ্ঞদের অনেকে। সে ক্ষেত্রে চিন আগামী দিনে তাইওয়ান দখলেও একই ভাবে সামরিক অভিযান চালাতে পারে। সে ক্ষেত্রে নয়াদিল্লির কাছে চিনের প্রভাববৃদ্ধি নিঃসন্দেহে অস্বস্তির কারণ হবে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় বাড়বে লাল ফৌজের আগ্রাসনের আশঙ্কা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ইতিমধ্যেই ইউক্রেন সঙ্কট নিয়ে প্রকাশ্যে মস্কোর পাশে দাঁড়িয়েছে বেজিং।
ক্রাইমিয়া যুদ্ধের ইতি টেনে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও সুস্থিতির লক্ষ্যে ২০১৪-১৫ সালে দু’দফায় বেলারুশের রাজধানী মিনস্কে শান্তিচুক্তি করেছিল রাশিয়া এবং ইউক্রেন। ভারত-সহ বিভিন্ন দেশ ইতিমধ্যেই সেই চুক্তির প্রতি দায়বদ্ধতা দেখানোর আবেদন জানিয়েছে মস্কোর কাছে। কিন্তু পুতিন সরকারের তরফে কোনও ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। ফলে আপাপত দুশ্চিন্তামুক্ত হওয়ার অবকাশ নেই নয়াদিল্লির।