ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিিমর পুতিন ফাইল ছবি।
ফের সেনার এক শীর্ষ অফিসারকে পদ থেকে সরালেন যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। তবে ঠিক কী কারণে ডনবাস অঞ্চলে ইউক্রেনের যৌথ বাহিনীর নেতৃত্বের দায়িত্বে থাকা ওই কমান্ডারকে রবিবার বরখাস্ত করা হল, তা নিয়ে অবশ্য একটি শব্দও ব্যয় করেননি তিনি। অন্য দিকে, সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া এক ইউক্রেনীয় তথ্যচিত্রে জ়েলেনস্কিকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘তাঁর ঘনিষ্ঠ বৃত্তের মানুষজনের হাতেই এক দিন মৃত্যু হবে রুশ প্রেসিডেন্টের।’’ ভ্লাদিমির পুতিনকে ঘিরে তাঁর এই সাহসী মন্তব্যের সূত্রে ফের আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে জ়েলেনস্কি।
এ মাসের গোড়াতেই কোনও আগাম সূচনা ছাড়া হঠাৎ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল তৎকালীন মন্ত্রী ওলেকসি রেজ়নিকভকে। কালপ্রায় একই ধাঁচে বরখাস্ত করা হল প্রবীণ সেনা কমান্ডার এডুয়ার্ড মসকালইয়োভকেও। পূর্ব ইউক্রেনের দু’টি বৃহৎ এলাকা মিলিয়ে তৈরি ডনবাস অঞ্চল। যেটি হস্তগত করতে নিরন্তর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। এমন একটি সংবেদনশীল অঞ্চলের দায়িত্বে থাকা এই কমান্ডারকে এ ভাবে হঠাৎ বরখাস্ত করার পিছনে কোন রহস্য লুকিয়ে, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে।
শুক্রবার রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রথম বর্ষপূর্তির দিন মুক্তি পেয়েছে ‘দ্য ইয়ার’ নামে একটি ইউক্রেনীয় তথ্যচিত্র। যেখানে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের মৃত্যু ঘিরে বিস্ফোরক দাবি করতে শোনা গিয়েছে জ়েলেনস্কিকে। তাঁর মন্তব্য, ‘‘পুতিনের রাজত্বকালে এমন এক সময় ঠিক আসবে যখন তাঁর শাসনের দুর্বলতাগুলি সকলের কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠবে। গোটা রাশিয়া তা অনুভব করতে পারবে। সে সময়ে বাকি শিকারিরা (সহযোগীরা) এই শিকারিকে (পুতিন) গ্রাস করবে। এক খুনিকে খুন করার কারণ খুঁজে বার করবে তাঁরাই। তাতে কি কাজ হবে? হ্যাঁ। কবে? আমি তা এখনই বলতে পারব না।’’
খবর ছড়িয়েছে, অসন্তোষে ফুঁসছে রুশ প্রশাসনের অন্দরমহল। যুদ্ধক্ষেত্রে রুশ বাহিনীর সদস্যদের অভিযোগ এবং কান্না জড়ানো একাধিক ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়া সেই জল্পনায় ইন্ধন জুগিয়েছে। যে সূত্র ধরে এক প্রথম সারির আমেরিকান দৈনিকের রিপোর্টে বলা হয়, রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ সহযোগীরাও এখন পুতিনের উপর বিরক্ত। তবে এর জেরে পুতিনের বিরুদ্ধে ঘাতক কোনও পদক্ষেপ করা হতে পারে বলে যে আশঙ্কা করা হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন বলেই দাবি অন্য এক আমেরিকান দৈনিকের। জ়েলেনস্কির এই মন্তব্যের পিছনে যে এই রিপোর্টগুলির অবদান রয়েছে তা এক প্রকার মেনে নিচ্ছেন যুদ্ধবিশেষজ্ঞেরা। তবে জ়েলেনস্কির এই বিস্ফোরক দাবি নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি মস্কো।