ব্রিটেনের জনসন মন্ত্রিসভায় তিন ভারতীয় বংশোদ্ভূত। অলক শর্মা (বাঁ দিকে), প্রীতি পটেল ও ঋষি সুনক (ডান দিকে)।
ভারতের সঙ্গে যে সম্পর্ক আরও গভীরতর করতে চান, ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে তাঁর কার্যালয়ে ঢোকার আগেই তা জানিয়েছিলেন ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই ঘোষিত জনসনের মন্ত্রিসভায় নাম থাকল তিন জন ভারতীয় বংশোদ্ভূতের। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে। যাঁদের অন্যতম এক জন মহিলা।
ব্রিটেনের নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হলেন প্রীতি পটেল। যাঁর পরিবার আদতে গুজরাতের বাসিন্দা। ব্রিটেনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমর্থক হিসাবে অত্যন্ত পরিচিত প্রীতি এ বার পেয়েছেন জনসন মন্ত্রিসভার তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ পদটি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দায়িত্ব।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ‘ইনফোসিস’-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তির জামাই ঋষি সুনক হয়েছেন রাজস্ব মন্ত্রকের চিফ সেক্রেটারি।
আর টেরেসা মন্ত্রিসভার সদস্য আবাসনমন্ত্রী অলক শর্মাকে এ বার দেওয়া হয়েছে অধিকতর গুরুত্বের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন মন্ত্রকের দায়িত্ব।
ভারতীয় উপমহাদেশের আরও এক জনকে দেওয়া হয়েছে জনসন মন্ত্রিসভার কার্যত দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকটি। লন্ডনের মেয়র পাক বংশোদ্ভূত সাজিদ জাভিদকে করা হয়েছে অর্থমন্ত্রী। চ্যান্সেলর অফ এক্সচেকার।
পূর্বতন প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-র ‘ব্রেক্সিট’ নীতির কট্টর সমালোচক প্রীতি কনজারভেটিভ পার্টির (টোরি) নেতৃত্বে বরিস জনসনকে নিয়ে আসার প্রচারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। টোরিদের দলে সেই গোষ্ঠীর নাম ছিল ‘ব্যাক বরিস গ্রুপ’। ২০১৬-য় ‘ব্রেক্সিট’ ভোটেও প্রীতির ভূমিকা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন- জয় বরিসেরই, সামনে এখন ব্রেক্সিট চ্যালেঞ্জ
আরও পড়ুন- আপনার সময়ও শেষ, বিরোধী নেতাকে টেরেসা
জনসন সরকার কারা চালাবেন, তা ঘোষণার আগেই প্রীতি বলেছিলেন, ‘‘আধুনিক ব্রিটেন ও আধুনিক কনজারভেটিভ পার্টির ছাপ থাকা উচিত নতুন মন্ত্রিসভায়।’’
৪৭ বছর বয়সী প্রীতি ব্রিটেনের পার্লামেন্টে প্রথম বার কনজারভেটিভ পার্টির এমপি হন ২০১০ সালে। সে বার তিনি এসেক্সের উইথ্যাম থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। জুনিয়র মন্ত্রী হিসাবে ঠাঁই পেয়েছিলেন তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের মন্ত্রিসভায়। ২০১৪-য় তিনি হন রাজস্ব মন্ত্রী। ২০১৫-র পার্লামেন্ট নির্বাচনের পর প্রীতি পান কর্মসংস্থান মন্ত্রকের দায়িত্ব। ২০১৬-য় প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-র সরকারে প্রীতিকে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে অবশ্য একটি বিতর্কের জেরে তাঁকে বাধ্য করা হয় ইস্তফা দিতে। প্রধানমন্ত্রী জনসনও গত কাল ‘ভাল বন্ধু’ বলে প্রশংসা করেছেন প্রীতির।
৪৭ বছর বয়সী ঋষিও ব্রেক্সিট-পন্থী বলেই পরিচিত ব্রিটেনের রাজনৈতিক মহলে।
গ্রাফিক: তিয়াসা দাস