ছবি: রয়টার্স।
সবার চোখ এখন একটাই দিকে।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের পার্লামেন্ট সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে দু’টি আর্জি জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে। বিচারপতিরা সব শুনে কী সিদ্ধান্ত নেন, তা জানতেই আগ্রহী দেশবাসী।
বরিস আইনি পথে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি না, মূলত সেটাই বিবেচ্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে। দু’টি আর্জি শুনতে বিচারপতিরা সময় নেবেন অন্তত তিন দিন। বলা হচ্ছে, রায় ঘোষণা হতে হতে আগামী সপ্তাহ হয়ে যাবে। গত সপ্তাহে এডিনবরার সেশন কোর্ট বলেছিল, পার্লামেন্ট সাসপেন্ড বেআইনি। কিন্তু লন্ডন হাইকোর্ট বলেছিল, এই বিষয়টি রাজনৈতিক। আদালত কিছু নির্ধারণ করবে না।
সুপ্রিম কোর্টে প্রথম আবেদনটি এসেছে লন্ডনের হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে। ভারতীয় বংশোদ্ভূত জিনা মিলার আছেন এর পিছনে। আর অন্য আর্জি এসেছে স্কটিশ কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে, যেখানে বলা হয়েছিল, পার্লামেন্ট সাসপেন্ডের সিদ্ধান্ত বেআইনি। সুপ্রিম কোর্টের ১১ জন বিচারপতি এ বিষয়ে আলোচনা করবেন। এমনটা দ্বিতীয় বার ঘটছে ব্রিটেনে। এর আগে যখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে বেরোনোর প্রক্রিয়া শুরু করতে প্রধানমন্ত্রী বা পার্লামেন্টের মাধ্যমে আর্টিকল ৫০ কার্যকর করার কথা উঠেছিল, তখন জিনা মিলার সে সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন। সে বারও ছিলেন ১১ জন বিচারপতি। জিনা মামলা জিতে যান। যার জোরে আর্টিকল ৫০ কার্যকর করার ক্ষেত্রে ভোট দেওয়ার সুযোগ পান এমপি-রা।
ব্রিটেনে লিখিত সংবিধান নেই। পার্লামেন্টে তৈরি আইন এবং নজিরের উপরে নির্ভর করেই দেশ চলে। পার্লামেন্টের কার্যপ্রণালীতে বিচার বিভাগ খুব কমই হস্তক্ষেপ করে। পার্লামেন্ট সাসপেন্ডের মতো রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আদালত কথা বলতে পারে কি না, সুপ্রিম কোর্ট রায় ঘোষণা করলে সে নজিরও তৈরি হবে।
রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথকে পার্লামেন্ট সাসপেন্ডের পরামর্শ দিয়ে বরিস এমপি-দের রুখতে চেয়েছিলেন কি না, বিচারপতিরা তা-ও দেখবেন। যদি প্রমাণিত হয়, তিনি ইচ্ছে করে রানিকে ‘বিভ্রান্ত’ করেছেন, তা হলে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনভঙ্গের অভিযোগ আনা হবে। সে ক্ষেত্রে ফের পার্লামেন্ট ডাকতে হবে তাঁকে।