প্রীতি পটেল
প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন তাঁর তদন্ত রিপোর্ট মেনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি পটেলকে বরখাস্ত করতে রাজি নন। এ কথা জানার পরই আজ ইস্তফা দিলেন প্রধানমন্ত্রীর শীর্ষ উপদেষ্টা অ্যালেক্স অ্যালেন।
অভিযোগ উঠেছিল, প্রীতি তাঁর মন্ত্রকের আমলাদের হেনস্থা ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছেন। এ নিয়ে তদন্তের ভার পড়ে অ্যালেনের উপরে। তাঁর সেই তদন্তের রিপোর্টের কিছু অংশ সম্প্রতি ফাঁস হয়েছে। তাতে দাবি করা হয়েছে, তদন্তে দেখা গিয়েছে, প্রীতির আচরণ ছিল প্রায় ‘উৎপীড়নের’ সমান। এ যদি অনিচ্ছাকৃতও হয়, তবু সেটা মন্ত্রীর আচরণবিধি ভঙ্গ। এই পরিস্থিতিতে মন্ত্রিপদ থেকে প্রীতিকে বরখাস্ত করার সুপারিশ করেন তাঁর শীর্ষ উপদেষ্টা। কিন্তু বরিস তা মানেননি। বরং পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রীতির। তাঁর মতে, প্রীতির আচরণ ‘অনিচ্ছাকৃত’। বর্তমানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে কাজের পরিবেশ অনেক ভাল হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন বরিস।
প্রীতি নিজেও এক বিবৃতিতে বলেছেন, “অতীতে আমার আচরণে লোকে বিচলিত হয়েছেন। এর জন্য আমি দুঃখিত।” পাশাপাশি সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপরে ‘পূর্ণ আস্থা’ রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।
আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীকে বরখাস্ত করে থাকেন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরেও মন্ত্রী থেকে যাওয়ার কোনও নজির ব্রিটেনে নেই। সে দিক দিয়ে প্রীতিই প্রথম ব্যতিক্রম বা নজির। বরিস ও তাঁর সরকার এ বিষয়ে অবস্থান জানিয়ে দেওয়ার পরই অ্যালেন তাঁর প্রতিক্রিয়া জানান। বলেন, “আমি মনে করি, আচরণবিধি বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর স্বাধীন উপদেষ্টার পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার এটাই উপযুক্ত সময়।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতির বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ এনে গত ফেব্রুয়ারিতে ইস্তফা দিয়েছিলেন মন্ত্রকের শীর্ষ আমলা ফিলিপ রাটনাম। তাঁর বক্তব্য ছিল, প্রীতি অযৌক্তিক বিভিন্ন দাবি করতেন। দফতরে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছেন তিনি। বন্দি প্রত্যর্পণের একটি উড়ানের বিলম্ব এড়াতে রাতভর কাজ করা এক আমলা প্রীতির সঙ্গে বৈঠক করে বেরিয়েই জ্ঞান হারিয়েছিলেন।
লেবার পার্টি আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল, বরিস হয়তো বিষয়টি ‘ধামাচাপা’ দেওয়ার চেষ্টা করবেন। প্রীতির বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরেও প্রধানমন্ত্রী তাঁকে বহাল রাখায় বরিসের নিন্দায় মুখ খুলেছেন লেবার পার্টির নেতা কেয়ার স্টার্মার। তাঁর কথায়, “আমি যদি প্রধানমন্ত্রী হতাম, তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বরখাস্ত হতে হত।”